তাহাজ্জুদের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলাত ২য় পর্ব

লিখেছেন লিখেছেন ব১কলম ১৯ জুলাই, ২০১৪, ১১:৪৭:৩০ সকাল



6. তাহাজ্জুদের ফযিলত ও মর্যাদা -

কোরআন ও হাদিসে তাহাজ্জুদের অনেক ফযিলত বর্ণনা করা হয়েছে । নিম্নে কিছু উদ্বৃত করা হলো-

সুরা যারিয়াতে- (১৫-১৮)আল্লাহ বলেন-

إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي جَنَّاتٍ وَعُيُونٍ- آخِذِينَ مَا آتَاهُمْ رَبُّهُمْ إِنَّهُمْ كَانُوا قَبْلَ ذَلِكَ مُحْسِنِينَ -كَانُوا قَلِيلًا مِّنَ اللَّيْلِ مَا يَهْجَعُونَ -وَبِالْأَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُونَ

অর্থাৎ - মুত্তাকী লোকেরা জান্নাতে ও প্রস্রবনে থাকবে ।এমতাবস্থায় যে,তারা গ্রহণ করবে যা তাদের পালণকর্তা তাদের দিবেন । নিশ্চয়ই তারা ছিল সৎকর্মপরায়ন । তারা রাত্রির সামান্য অংশেই নিদ্রা যেত । এবং রাত্রির শেষ প্রহরে ক্ষমা প্রার্থনা করত ।

সুরা ফুরকানে আল্লাহ বলেন-

وَعِبَادُ الرَّحْمَنِ الَّذِينَ يَمْشُونَ عَلَى الْأَرْضِ هَوْنًا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ الْجَاهِلُونَ قَالُوا سَلَامًا - وَالَّذِينَ يَبِيتُونَ لِرَبِّهِمْ سُجَّدًا وَقِيَامًا وَالَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا اصْرِفْ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَ إِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَامًا

অর্থাৎ -রহমানের বান্দা তারাই যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন মূর্খরা কথা বলে তখন তারা বলে সালাম । এবং তারা রাত্রি যাপন করে পালণকর্তার উদ্দেশ্য সেজদাবনত ও দন্ডায়মান হয়ে । এবং যারা বলে, হে আমার পালণকর্তা আমাদের কাছ থেকে জাহান্নামের শাস্তি হটিয়ে দাও । নিশ্চয়ই এর শাস্তি নিশ্চত বিনাশ । (৬৩-৬৫)

সুরা আলে ইমরানে আল্লাহ বলেন--

-الصَّابِرِينَ وَالصَّادِقِينَ وَالْقَانِتِينَ وَالْمُنفِقِينَ وَالْمُسْتَغْفِرِينَ بِالأَسْحَارِ

অর্থাৎ -তারা ধৈর্য্যধারণকারী, সত্যবাদী, নির্দেশস ম্পদনকারী, সৎ পথে ব্যয়কারী, এবং শেষ রাত্রে ক্ষমা প্রার্থনাকারী । (১৭)

সুরা আস সাজদায় (16) আল্লাহ বলেন-

تَتَجَافَى جُنُوبُهُمْ عَنِ الْمَضَاجِعِ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ خَوْفًا وَطَمَعًا وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ

অর্থাৎ -তাদের পার্শ্ব শয্যা থেকে আলাদা থাকে । তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে ।

হাদিছে রসুল ( সঃ) বলেন-

عن عَبْدِ الله بِنْ سَلاَمٍ اَنَّ رَسوُلُ اللهِ صَلىَّ اللهُ علَيهِ وَ سَلَّمَ قَالَ ايُّها الناَسُ افْشُوا السلاَمَ وَ اطْعِمُوْا الطعاَمَ وَ صَلّوا بالليْلِ وَ الناَّسُ نِعاَمٌُ تدْخُلًوْا الجَنَّةَ بِسَلاَمٍ – رواه الترمذى.

আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম(রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (সঃ) বলেন, হে লোকেরা ! সালামের ব্যাপক প্রচলন করো । অভাবীদের আহার করাও এবং লোকেরা যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ো তাহলে শান্তিতে জান্নাতে প্রবেশ করবে ।

عن اَببي هُرَيْرَةَ قاَلَ رَسوُلُ اللهِ صَلىَّ اللهُ علَيهِ وَ سَلَّمَ افْضَلُ الصِّياَمِ بعْضَ رَمَضَان شهرُ اللهِ المُحَرَّمُ افْضَلُ الصِّلاِة بعْضَ الْفَريْضَةِ صَلاةُ اللَّيلِ . رواه مسلم

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত- তিনি বলেন- রসুল (সঃ) বলেছেনঃ রমযানের পর সর্বোত্তম রোজা হচ্ছে মুহাররমের রোজা আর ফরজ নামাজের পর সর্বোত্তম নামাজ হচ্ছে রাতের (তাহাজ্জুদ) নামাজ ।

7. রাসুল(সঃ) এর তাহাজ্জুদ-

বুখারী ও মুসলিমে একাধিক সূত্রে ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত-

রাসুল(সঃ) রাতে উঠে অজু করার আগেই আকাশের দিকে তাকিয়ে সুরা আল ইমরানের (১৯০-২০০) শেষ রুকুর নিম্ন আয়াতগুলো পাঠ করতেন- তার পর অজু করে নামাজ পড়তেন-

إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ وَاخْتِلاَفِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لآيَاتٍ لِّأُوْلِي الألْبَابِ-الَّذِينَ يَذْكُرُونَ اللّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَىَ جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُونَ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَذا بَاطِلاً سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ رَبَّنَا إِنَّكَ مَن تُدْخِلِ النَّارَ فَقَدْ أَخْزَيْتَهُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنصَارٍ- رَّبَّنَا إِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِيًا يُنَادِي لِلإِيمَانِ أَنْ آمِنُواْ بِرَبِّكُمْ فَآمَنَّا رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الأبْرَارِ-رَبَّنَا وَآتِنَا مَا وَعَدتَّنَا عَلَى رُسُلِكَ وَلاَ تُخْزِنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّكَ لاَ تُخْلِفُ الْمِيعَادَ - فَاسْتَجَابَ لَهُمْ رَبُّهُمْ أَنِّي لاَ أُضِيعُ عَمَلَ عَامِلٍ مِّنكُم مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَى بَعْضُكُم مِّن بَعْضٍ فَالَّذِينَ هَاجَرُواْ وَأُخْرِجُواْ مِن دِيَارِهِمْ وَأُوذُواْ فِي سَبِيلِي وَقَاتَلُواْ وَقُتِلُواْ لأُكَفِّرَنَّ عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ وَلأُدْخِلَنَّهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ ثَوَابًا مِّن عِندِ اللّهِ وَاللّهُ عِندَهُ حُسْنُ الثَّوَابِ - لاَ يَغُرَّنَّكَ تَقَلُّبُ الَّذِينَ كَفَرُواْ فِي الْبِلاَدِ - مَتَاعٌ قَلِيلٌ ثُمَّ مَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ الْمِهَادُ - لَكِنِ الَّذِينَ اتَّقَوْاْ رَبَّهُمْ لَهُمْ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا نُزُلاً مِّنْ عِندِ اللّهِ وَمَا عِندَ اللّهِ خَيْرٌ لِّلأَبْرَار- رَبِّهِمْ إِنَّ اللّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ -يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اصْبِرُواْ وَصَابِرُواْ وَرَابِطُواْ وَاتَّقُواْ اللّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

অর্থ- নিশ্চয় আসমান ও যমীন সৃষ্টিতে এবং রাত্রি ও দিনের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে বোধ সম্পন্ন লোকদের জন্যে। যাঁরা দাঁড়িয়ে, বসে, ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টির বিষযে, (তারা বলে) পরওয়ারদেগার! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি। সকল পবিত্রতা তোমারই, আমাদিগকে তুমি দোযখের শাস্তি থেকে বাঁচাও। হে আমাদের পালনকর্তা! নিশ্চয় তুমি যাকে দোযখে নিক্ষেপ করলে তাকে সবসময়ে অপমানিত করলে; আর জালেমদের জন্যে তো সাহায্যকারী নেই। হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা নিশ্চিতরূপে শুনেছি একজন আহবানকারীকে ঈমানের প্রতি আহবান করতে যে, তোমাদের পালনকর্তার প্রতি ঈমান আন; তাই আমরা ঈমান এনেছি। হে আমাদের পালনকর্তা! অতঃপর আমাদের সকল গোনাহ মাফ কর এবং আমাদের সকল দোষত্রুটি দুর করে দাও, আর আমাদের মৃত্যু দাও নেক লোকদের সাথে। হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদেরকে দাও, যা তুমি ওয়াদা করেছ তোমার রসূলগণের মাধ্যমে এবং কিয়ামতের দিন আমাদিগকে তুমি অপমানিত করো না। নিশ্চয় তুমি ওয়াদা খেলাফ করো না। অতঃপর তাদের পালনকর্তা তাদের দোয়া (এই বলে) কবুল করে নিলেন যে, আমি তোমাদের কোন পরিশ্রমকারীর পরিশ্রমই বিনষ্ট করি না, তা সে পুরুষ হোক কিংবা স্ত্রীলোক। তোমরা পরস্পর এক। তারপর সে সমস্ত লোক যারা হিজরত করেছে, তাদেরকে নিজেদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের প্রতি উৎপীড়ন করা হয়েছে আমার পথে এবং যারা লড়াই করেছে ও মৃত্যুবরণ করেছে, অবশ্যই আমি তাদের উপর থেকে অকল্যাণকে অপসারিত করব। এবং তাদেরকে প্রবিষ্ট করব জান্নাতে যার তলদেশে নহর সমূহ প্রবাহিত। এই হলো বিনিময় আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর আল্লাহর নিকট রয়েছে উত্তম বিনিময়। নগরীতে কাফেরদের চালচলন যেন তোমাদিগকে ধোঁকা না দেয়। এটা হলো সামান্য ফায়দাএরপর তাদের ঠিকানা হবে দোযখ। আর সেটি হলো অতি নিকৃষ্ট অবস্থান। কিন্তু যারা ভয় করে নিজেদের পালনকর্তাকে তাদের জন্যে রয়েছে জান্নাত যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে প্রস্রবণ। তাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে সদা আপ্যায়ন চলতে থাকবে। আর যা আল্লাহর নিকট রয়েছে, তা সৎকর্মশীলদের জন্যে একান্তই উত্তম। আর আহলে কিতাবদের মধ্যে কেউ কেউ এমনও রয়েছে, যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনে এবং যা কিছু তোমার উপর অবতীর্ণ হয় আর যা কিছু তাদের উপর অবতীর্ণ হয়েছে সেগুলোর উপর, আল্লাহর সামনে বিনয়াবনত থাকে এবং আল্লার আয়াতসমুহকে স্বল্পমুল্যের বিনিময়ে সওদা করে না, তারাই হলো সে লোক যাদের জন্য পারিশ্রমিক রয়েছে তাদের পালনকর্তার নিকট। নিশ্চয়ই আল্লাহ যথাশীঘ্র হিসাব চুকিয়ে দেন। হে ঈমানদানগণ! ধৈর্য্য ধারণ কর এবং মোকাবেলায় দৃঢ়তা অবলম্বন কর। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক যাতে তোমরা তোমাদের উদ্দেশ্য লাভে সমর্থ হতে পার।

عن عائشة رضي الله عنها أن النبي صلى الله عليه وسلم كان يقوم من الليل حتى تتفطر قدماه ، فقلت له : لم تصنع هذا يا رسول الله ، وقد غفر الله لك ما تقدم من ذنبك وما تأخر ؟ قال : أفلا أحب أن أكون عبداً شكوراً ؟ متفق عليه . هذا لفظ البخاري ، ونحوه في الصحيحين من رواية المغيرة بن شعبة

বুখারী ও মুসলিমে হযরত আইশা (রাঃ) থেকে বর্নিত-

আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম রাতের নামাজে এতদীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতেন, যার ফলে তাঁর পা দুটো ফেটে গিয়েছিল । আমি তাঁকে বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কেন এত কষ্ট করেন? আপনার আগের পিছের সমস্ত গুণাহ ক্ষমা করা হয়েছে ।’ তিনি বললেন আমি কি আল্রাহর শোকরগোজার বান্দা হবনা ?

عن ابن مسعود رضي الله عنه قال: "صليت مع النبي صلى الله عليه وسلم ليلة، فلم يزل قائمًا حتى هممت بأمر سوء. قلنا: وما هممت؟ قال: هممت أن أقعد وأذر النبي صلى الله عليه وسلم

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, এক রাতে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের সাথে নামাজ পড়ছিলাম । তিনি এত দীর্ঘ কিয়াম করলেন যে, আমি খারাপ সংকল্প করলাম । তাকে জিজ্ঞাস করা হল কি খারাপ সংকল্প করছিলেন? তিনি জবাব দিলেন আমি সংকল্প করছিলাম যে, তাঁকে একা রেখে বসে পড়ব । (সহীহাইন)

عن حذيفة قال : صليت مع النبي صلى الله عليه وسلم ذات ليلة فافتتح البقرة فقلت يركع عند المائة ثم مضى فقلت يصلي بها في ركعة فمضى فقلت يركع بها ثم افتتح النساء فقرأها ثم افتتح آل عمران فقرأها يقرأ مترسلا إذا مر بآية فيها تسبيح سبح وإذا مر بسؤال سأل وإذا مر بتعوذ تعوذ ثم ركع فجعل يقول سبحان ربي العظيم فكان ركوعه نحوا من قيامه ثم قال سمع الله لمن حمده ثم قام طويلا قريبا مما ركع ثم سجد فقال سبحان ربي الأعلى فكان سجوده قريبا من قيامه . رواه مسلم

হুজাইফা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এক রাতে নবী সাল্লালাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের সাথে নামাজ আদায় করছিলাম । তিনি সুরা আল বাক্বারা পড়তে শুরু করলেন । আমি মনে মনে বললাম, তিনি হয়ত ১০০ আয়াতে পৌঁছে রুকু করবেন । কিন্তু তিনি এগিয়ে গেলেন । আমি মনে মনে বললাম, তিনি হয়ত এক রাকআতে তা পড়বেন । কিন্তু তিনি পড়তে থাকলেন । আমি মনে মনে বললাম, তিনি হয়ত এ সুরাটি শেষ করে রুকু করবেন । কিন্তু তিনি এরপর সুরা আন নিসা পড়তে শুরু করলেন এবং তা শেষ করলেন । এরপর সুরা আল ইমরান পড়তে শুরু করলেন এবং তা শেষ করলেন । তিনি তারতীল সহকারে কিরআত পড়ছিলেন । যখন তিনি কোন তাসবীহর আয়াতে পৌঁছতেন তখন তাসবীহ করতেন । কোন প্রার্থনার আয়াতে পৌঁছলে প্রার্থনা করতেন । কোন আশ্রয় প্রার্থনার আয়াতে পৌঁছলে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন । তারপর তিনি রুকু করলেন, তিনি বলতে থাকলেন- সুবহানা রাব্বিয়াল আযীম । তাঁর রুকুও ছিল কিয়ামের সমান দীর্ঘ । তারপর তিনি রুকু থেকে মাথা উঠাতে উঠাতে উঠাতে বললেন- সামিয়াল্লআহু লিমান হামিদাহ, রাব্বানা লাকাল হামদ । রুকু থেকে উঠে তিনি দীর্ঘ কিয়াম করলেন প্রায় তত সময় পর্যন্ত, যত সময় রুকু করেছিলেন । তারপর তিনি সিজদাহ করলেন এবং তাতে বললেন- সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা । তাঁর সিজদাও ছিল প্রায় কিয়ামের সমান দীর্ঘ । (মুসলীম)

وعن عائشة رضي الله عنها أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يصلي إحدى عشرة ركعة تعني في الليل يسجد السجدة من ذلك قدر ما يقرأ أحدكم خمسين آية قبل أن يرفع رأسه ويركع ركعتين قبل صلاة الفجر ثم يضطجع على شقه الأيمن حتى يأتيه المنادي للصلاة رواه البخاري

আয়েশা(রা) থেকে বর্ণিত । রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম (রাতে) এগারো রাকায়াত নামাজ আদায় করতেন । এ নামাজে তিনি এত দীর্ঘ সিজদা করতেন যাতে তাঁর মাথা তোলার আগে যে কেউ পঞ্চাশ আয়াত পড়তে পারত । তিনি ফজরের আগে দুই রাকায়াত পড়তেন । তারপর নিজের ডান কাঁধে শুয়ে থাকতেন, যাবত না মুয়াজ্জিন তাঁকে নামাজের জন্য ডাকতে আসত ।

وعن عبد الله بن عمرو بن العاص رضي الله عنهما أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال أحب الصلاة إلى الله صلاة داود وأحب الصيام إلى الله صيام داود كان ينام نصف الليل ويقوم ثلثه وينام سدسه ويصوم يوما ويفطر يوما متفق عليه

আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস থেকে বর্ণিত । রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম তাকে বলেন - আল্লাহর কাছে (নফল ) নামাজের মধ্যে প্রিয়তম হচ্ছে দাউদ (আ) এর (মতো) নামাজ । আর কাছে (নফল ) রোজার মধ্যে প্রিয়তম হচ্ছে দাউদ (আ) এর (মতো) রোজা । তিনি রাতের প্রথমার্ধে ঘুমাতেন, তৃতীয় অংশে উঠে তাহাজ্জুদ পড়তেন, তারপর শেষের ষষ্ঠ অংশে শুয়ে পড়তেন । আর তিনি একদিন রোজা রাখতেন এবং এতিন রোজাহীন অবস্থায় কাটাতেন ।( সহীহাইন )

وعن جابر رضي الله عنه قال سئل رسول الله صلى الله عليه وسلم أي الصلاة أفضل قال طول القنوت رواه مسلم المراد بالقنوت القيام

জাবির (রা) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হল, কোন নামাজ উত্তম? তিনি জবাব দিলেন - যে নামাজে কিয়াম দীর্ঘায়িত হয় ।

চলবে...।

বিষয়: বিবিধ

৯০৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

246026
১৯ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৯
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক অনেক ধন্যবাদ ভালো লাগলো
246056
১৯ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৬
ব১কলম লিখেছেন : আপনাকে ও অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File