তাগুত'
লিখেছেন লিখেছেন ব১কলম ২৪ মে, ২০১৪, ০৭:৫২:৫০ সকাল
তাগুত' কুরআনের একটি বিশেষ পরিভাষা। এ পরিভাষাটি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকলে দীনের পথে চলতে গিয়ে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
কুরআনের বিভিন্ন স্খানে ‘তাগুত' শব্দটি এসেছে। রাসূল পাঠাবার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে ‘তাগুত' কে বর্জন করার নির্দেশ এসেছে।
যেমন ,
“এবং প্রতিটি জনপদেই আমরা রাসূল পাঠিয়েছি এই আহ্বান করার দায়িত্ব দিয়ে যে তোমরা এক আল্লাহর দাসত্ব কবুল কর এবং ‘তাগুত'কে সর্বতোভাবে বর্জন কর। (ওয়াজতানেবুত তাগুত- সূরা নামাল : ৩৬)
‘তাগুত' শব্দটি ‘তুগইয়ান' থেকে নিসৃত- যার অর্থ অবাধ্য, আভিধানিক অর্থ সীমালঙ্ঘনকারী। এর ব্যবহারিক অর্থ “প্রত্যেক সীমালঙ্ঘনকারী ও প্রত্যেক ঝুটা মাবুদ যার এবাদত এবং যার প্রতি বিশ্বাস করিয়া মানুষ সীমালঙ্ঘন করে ও সত্যকে বর্জন করিয়া বসে- তা সৃষ্টির এমন কিছু হউক, যার বন্দেগী করা হয় অথবা কোন প্রধান ব্যক্তি হউক, যাহার অ অনুসরণ করা হইয়া থাকে, অথবা এমন কোন প্রবৃত্তি হউক, যার তাঁবেদারী করা হয়।” (মাওলানা আকরম খাঁ)
বিভিন্ন আয়াতের বিভিন্ন ব্যাখ্যা সামনে নিয়ে ‘তাগুত' সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে ‘তাগুত' এর মূল ভাবের পরিচয় পাওয়া যাবে।
যেমন , “তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা কিতাবের কিছু অংশ পেয়েছে যারা মেনে চলে জ্বিবত ‘তাগুত'কে। (নিসা : ৫১) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় মা'রিফুল কুরআনে লেখা হয়েছে, “উল্লিখিত একান্নতম আয়াতে জ্বিবত ও তাগুত শীর্ষক দুটি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। শব্দ দু'টির মর্ম সম্পর্কে তাফসীরকারক মনীষীবৃন্দের বিভিন্ন মতামত রয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘জ্বিবত' বলা হয় জাদুকরকে আর ‘তাগুত' বলা হয় গণক বা জ্যোতিষীকে।
হযরত ওমর (রা.) বলেন, ‘জ্বিবত' অর্থ যাদু এবং ‘তাগুত' অর্থ শয়তান। হযরত মালেক ইবনে আনাস (রা.) বলেন যে, আল্লাহ ব্যতীত যে সমস্ত জিনিসের উপাসনা করা হয়, সে সবই তাগুত বলে অভিহিত হয়।
ইমাম কুরতুবী বলেন যে, মালেক ইবনে আনাস (রা.) এর উক্তিটি অধিক পছন্দনীয়। তার কারণ কুরআন থেকেও এর সমর্থন পাওয়া যায়। “আনে বুদুল্লাহা ওয়াজতানিবুত তাগুত- (আল্লাহর এবাদত কর এবং তাগুত থেকে বেঁচে থাক)। কিন্তু উল্লিখিত বিভিন্ন মতের মাঝে কোন বিরোধ নেই। কাজেই এর যে কোনটিই অর্থ করা যায়। প্রকৃতপক্ষে ‘জ্বিবত' প্রতিমাকে বোঝাতো, পরে আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য পূজ বস্তুতে এর প্রয়োগ হতে আরম্ভ করে।” (রুহুল মায়ানী)
প্রখ্যাত মুফাসসেরে কুরআন আল্লামা ইবনে কাসীর (র.) ‘তাগুত' এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে লিখেছেন, “যারা কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহকে ছেড়ে দিয়ে অন্য কোন বাতিলের নিকট বিচারপ্রার্থী হয়, ওই আয়াতটিতে (সূরা নিসা ৬০, কিন্তু তাদের নিজেদের যাবতীয় ব্যাপারে ফয়সালা করার জন্য তাগুতের কাছে পৌঁছতে চায়। অথচ তাগুতকে সম্পূর্ণ অস্বীকার ও অমান্য করতে তাদেরকে আদেশ দেয়া হয়েছে।) তাদের নিন্দা করা হয়েছে। কুরআন ও সুন্নাহ বহির্ভূত বাতিলকেই এখানে ‘তাগুত' বলা হয়েছে।
উক্ত আয়াতটির ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ইমাম খোমেনী যা বলেছেন তা হল, “তাগুত দ্বারা এমন সব সংস্খা বিচার বিভাগীয় ক্ষমতা অথবা সরকারি ব্যবস্খাপনাকে বুঝান হয়েছে যা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধানের পরিপন্থী হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করে অথবা খোদাবিরোধী আইন দ্বারা বিচারালয়ে বিচার করে আর জনগণের মাঝে জুলুমবাজি, পাপাচার ও সীমালঙ্ঘন করে। আল্লাহ আমাদেরকে এরূপ রাষ্ট্রীয় শক্তিকে প্রত্যাখ্যান করতে নির্দেশ দিয়েছেন, যদিও এসব করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয়, নির্যাতন সইতে হয়।”
উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে হযরত মাওলানা সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদূদী (রহ.) লিখেছেন, “এখানে তাগুত বলতে আল্লাহর সেই শাসককে বুঝান হয়েছে, যে আল্লাহর আইন বাদ দিয়ে অন্য কোন আইন অনুযায়ী ফায়সালা করে, যে বিচারালয় আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও প্রভুত্বের অনুগত নয় এবং আল্লাহর কিতাবকে চূড়ান্ত বিধানরূপে স্বীকার করে না, তাও কুরআনের পরিভাষা অনুযায়ী ‘তাগুত' নামে অভিহিত হবে। কাজেই এ আয়াত এ কথা বুঝাবার জন্য অতীব সুস্পষ্ট যে, যে আদালত তাগুতের পর্যায়ে পড়ে, তার কাছে সামগ্রিক ব্যাপারে মীমাংসার জন্য পেশ করা ঈমানের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। কুরআনের দৃষ্টিতে আল্লাহর প্রতি ঈমান ও তাগুতকে অস্বীকার ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পক্ষান্তরে আল্লাহ ও তাগুতের প্রতি একই সংগে নতি স্বীকার করা সুস্পষ্টরূপে মুনাফেকী।”
‘তাগুত' এর সুস্পষ্ট পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে হাকিমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (রহ.) বলেন, ‘ইসলামী হুকুমত এবং ওই হুকুমতের হুকুম আহকামের বিরুদ্ধাচরণ করে যেসব শাসক চলেন তাদেরকে তাগুত বলা হয়েছে।'
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, “এজন্যই আল্লাহর কিতাব ছাড়া অন্য যে কোন শাসক বা বিচারকের কাছে শাসন বা বিচার চাওয়া হবে তাকেই তাগুত বলা হয়েছে।” (মাজমাউল ফাতওয়া) ইবনুল কাইয়েম বলেন, “প্রত্যেক জাতির ‘তাগুত' সে, আল্লাহ ও রাসূলকে বাদ দিয়ে যার কাছে লোকেরা শাসন ও বিচার চায়।'
তাগুতের অস্বীকার ও তার প্রতি বিদ্রোহের ঘোষণা দিয়ে যে আল্লাহর প্রতি ঈমান পোষণ করে তার ঈমানই সঠিক ও পরিপক্ক, আর এমন ঈমানই ঘোষণাকারীর অন্তরে প্রচণ্ড শক্তি জাগিয়ে তোলে।
“এখন যে কেউ তাগুতকে অস্বীকার করে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনল, সে এমন এক শক্ত রজ্জুকে ধারণ করল যা কখনই ছিঁড়ে যাবার নয় এবং আল্লাহ সব কিছু শোনেন ও জানেন। যারা ঈমান আনে তাদের পৃষ্ঠপোষক ও সাহায্যকারী আল্লাহ, তিনি তাদেরকে অকার থেকে আলোতে বের করে নিয়ে আসেন। আর যারা কুফরী অবলম্বন করে তাদের পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে তাগুত” উহা তাদেরকে আলো হতে অকারের দিকে টেনে নিয়ে যায়। (আল বাকারা : ২৫৬-২৫৭)
এই আয়াতদ্বয়ে উল্লিখিত তাগুত এ প্রসেঙ্গ তাফহীমুল কুরআনের সূরা বাকারায় ২৮৬ ও ২৮৮ নং টিকায় যে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে তার সংক্ষিপ্ত সার হল :
অভিধানিক অর্থে ‘তাগুত' প্রত্যেক নির্দিষ্ট সীমালঙ্ঘনকারী ব্যক্তিতেই বুঝায়। কুরআনের পরিভাষায় তাগুত সেই বান্দাহকে বলা হয়, যে বন্দেগী ও দাসত্বের সীমালঙ্ঘন করে নিজেই খোদা ও মনিব হওয়ার ভান করে এবং খোদার বান্দাহদেরকে নিজের বন্দেগী করতে বাধ্য করে- প্রকৃতপক্ষে যে মানুষ প্রকৃত মালিক খোদার বিদ্রোহী হয়ে খোদার রাজ্য ও প্রজাদের উপর নিজের হুকুমত চালাতে শুরু করে। যে লোক এমন চূড়ান্ত পর্যায় পৌঁছে তাকেই বলা হয় তাগুত। হতে পারে সে শয়তান, হতে পারে নিজে নফস অথবা হতে পারে গুণীজন, বু-বাব, সমাজ, জাতি, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা বা রাষ্ট্র সরকার।
কুরআনের বর্ণনা অনুসারে দেখা যায় ঈমানের ব্যাপারে মানুষের মাত্র ২টি অবস্খান থাকতে পারে হয় সে আল্লাহকে ইলাহ বা আইনদাতা হুকুমকর্তা হিসেবে মেনে নেবে, নয়ত তাগুতকে ইলাহ হিসেবে গ্রহণ করবে। একজন মানুষকে আল্লাহর খলিফা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হলে- যে জন্যই প্রকৃতপক্ষে মানুষকে পয়দা করা হয়েছে অবশ্যই তাগুতকে অস্বীকার করতে হবে। যুগে যুগে আল্লাহর প্রতি ঈমানের দাবিদারদের প্রতি অন্তরায় সৃষ্টি করেছে তাদের প্রতি জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে যেসব শক্তি তারাই সবই তাগুতী শক্তি। (যেমন হযরত ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে নমরুদ, হযরত মুসা (আ.) এর বিরুদ্ধে ফিরাউনের এবং রাসূল (সা.) এর যুগে ইহুদী, খ্রিষ্টান ও কাফের মোশরেক ধর্মীয় নেতা ও রাজশক্তি ‘তাগুত' হিসেবে দাঁড়িয়েছিল।) আজকেও যারা আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে সরিয়ে নিতে চায়, আল্লাহর দীন সমাজে প্রতিষ্ঠার পথে বাধা সৃষ্টি করে, দীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকারীদেরকে হত্যা করে, দেশ ত্যাগে বাধ্য করে, তারাই আসলে তাগুত। এদের ব্যাপারে ব্যবহৃত হয়েছে তুগইয়ান তাগুত পরিভাষা। বলা হয়েছে, ওয়া ফিরআওনা জিল আওতাদ, আল্লাজীনা তাগাও ফিল বিলাদ। ফা আকসারু ফি হাল ফাসাদ।' (ফাতের : ১০-১২) সেই সঙ্গে লৌহ শলাকাধারী ফিরআউনের সঙ্গে কি ব্যবহার করা হয়েছিল? এসব লোক বিভিন্ন দেশে সীমালঙ্ঘন করেছিল এবং সেসব স্খানে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিল।
সমুদ্রে দু'কূল প্লাবী তাণ্ডব স্রোত (তুগইয়ান) ধারা যেমন অনন্তকাল টিকে থাকেনা তেমনি তাগুতী শক্তিও মানবসমাজে চিরস্খায়ী আসন গড়তে পারে না। মানবীয় শক্তি অনেক সময় এ শক্তির মোকাবিলায় ব্যর্থ হলে খোদার পক্ষ থেকে তাঁর ব্যবস্খাপনায় তাগুতকে মিটিয়ে দেয়া হয়। এটাই ঐতিহাসিক বাস্তবতা যা পবিত্র কুরআন জানিয়ে দিচ্ছে তার ভাষায়
“ফা ছাব্বা আলাইহিম রব্বুকা সওতা আজাব। ইন্না রাব্বাকা লাবিল মিরছাদ- শেষে তোমার খোদা তাদের উপর আযাবের চাবুক বর্ষণ করলেন। বস্তুত তোমার খোদা ঘাঁটিতে প্রতীক্ষমান আছে।” (ফজর) “আল্লাজীনাজ তানাবুত তাগুতা আইয়াবুদুহা ওয়া আনুব ইলাল্লাহে লাহুমুল বুশরা ফাবাশ শেরু-ইবাদ'- পক্ষান্তরে যারা তাগুতের বন্দেগী হতে পাশ কাটিয়ে থাকল আর আল্লাহর দিকে নিজেদেরকে রুজু করল তাদের জন্য সুসংবাদ। (জুমার : ১৭)
'তাগুত'' শব্দটি এখানে বহুবচন (তাওয়াগীত) অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে৷ অর্থাৎ আল্লাহর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে মানুষ একটি তাগুতের শৃংখলে আবদ্ধ হয় না বরং বহু তাগুত তার ওপর ঝেঁকে বসে৷ শয়তান এটি তাগুত৷ শয়তান তার সামনে প্রতিদিন নতুন নতুন আকাশ কুসুম রচনা করে তাকে মিথ্যা প্রলোভনে প্রলুব্ধ করে রাখে৷ দ্বিতীয় তাগুত হচ্ছে মানুষের নিজের নফস৷ এই নফস তাকে আবেগ ও লালসার দাস বানিয়ে জীবনের আঁকাবাঁকা পথে টেনে নিয়ে যেতে থাকে৷ এ ছাড়া বাইরের জগতে অসংখ্য তাগুত ছড়িয়ে রয়েছে৷ স্ত্রী, সন্তান, আত্মীয়-স্বজীন, পরিবার, বংশ, গোত্র, বন্ধু-বান্ধব, পরিচিতজন, সমাজ,জাতি, নেতা,রাষ্ট্র, দেশ, শাসক ইত্যাকার সবকিছুই মানুষের জন্য মূর্তিমান তাগুত৷ এদের প্রত্যেকেই তাকে নিজের স্বার্থের দাস হিসেবে ব্যবহার করে৷ মানুষের তার এই অসংখ্য প্রভুর দাসত্ব করতে করতে এবং এদের মধ্যে থেকে কাকে সন্তুষ্ট করবে আর কার অসন্তুষ্টি থেকে আত্মরক্ষা করবে এই ফিকিরের চক্করে সারা জীবন কাটিয়ে দেয়৷
-কথা জানা প্রয়োজন যে, আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতির উপর সর্ব প্রথম যা ফরজ করেছেন তা হচ্ছে তাগুতের সাথে কুফরি এবং আল্লাহর উপর ঈমান।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “আর নিশ্চয়ই আমি প্রত্যেক জাতির কাছে রাসূল পাঠিয়েছি এ কথা বলে যে, তোমরা শুধু আল্লাহর উপাসনা কর এবং তাগুতকে পরিত্যাগ কর।” [সূরা আন্-নাহল: ৩৬]
তাগুতের সাথে কুফরির ধরণ হলো : আল্লাহ ছাড়া অন্য সবকিছুর উপাসনা (ইবাদত) বাতিল বলে বিশ্বাস করা, তা ত্যাগ করা, ঘৃণা ও অপছন্দ করা, এবং যারা তা করবে তাদের অস্বীকার করা, তাদের সাথে শত্রুতা পোষণ করা।
আর আল্লাহর উপর ঈমানের অর্থ হলো : আল্লাহ তা‘আলাই কেবলমাত্র হক উপাস্য ইলাহ, অন্য কেউ নয়— এ-কথা বিশ্বাস করা, আর সবরকম ইবাদতকে নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট করা যাতে এর কোন অংশ অন্য কোন উপাস্যের জন্য নির্দিষ্ট না হয়; আর মুখলিস বা নিষ্ঠাবানদের ভালবাসা, তাদের মাঝে আনুগত্যের সম্পর্ক স্থাপন করা, মুশরিকদের ঘৃণা ও অপছন্দ করা, তাদের শত্রুতা করা।
আর এটাই ইবরাহীম আলাইহিস্সালাম এর প্রতিষ্ঠিত দীন বা মিল্লাত, যে ব্যক্তি তার থেকে বিমুখ হবে সে নিজ আত্মাকে বোকা বানাবে, আর এটাই হলো সে আদর্শ (أسوة) বা (Model) যার কথা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বাণীতে বলেছেন : “অবশ্যই তোমাদের জন্য রয়েছে ইবরাহীম ও তার সাথীদের মাঝে সুন্দর আদর্শ, যখন তারা তাদের জাতিকে বলেছিল: আমরা তোমাদের এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের অপরাপর উপাস্য দেবতাদের থেকে সম্পূর্ণ সম্পর্কমুক্ত, আমরা তোমাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলাম, আর আমাদের ও তোমাদের মাঝে চিরদিনের জন্য শত্রুতা ও ঘৃণার সম্পর্ক প্রকাশ হয়ে পড়ল, যে পর্যন্ত তোমরা শুধু এক আল্লাহর উপর ঈমান স্থাপন না করছ।” [সূরা আল-মুমতাহিনাঃ ৪]
মূল কথা-
যারা নিজেরা আল্লাহর আইন মানে না এবং অন্যকেও আল্লাহর আইন না মানতে বাধ্য করে বা পরিল্পনা করে, চেষ্টা করে তারাই তাগুত ।
এ রকম ৫টি বড় তাগুত হল--৫টি কায়েমী স্বার্থবাদী শক্তি
১। সামাজিক রসম রেওয়াজ
২। সমাজের প্রভাবশালী অংশ
৩। ধর্ম ব্যবসায়ী সম্প্রদায়
৪। সমাজের অর্থনৈতিক ধনীক সম্প্রদায়
৫। রাষ্ট্র শক্তি
এরা সব সময় প্রকৃত ইসলামকে ভয় পায় এবং স্বীয় স্বার্থ কায়েম রাখার জন্য প্রকৃত ইসলামকে রুখতে সর্বশক্ত ব্যয় করে ।
বিষয়: বিবিধ
২৩১৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন