দাওয়াতে দ্বীনের গুরুত্ব ও পদ্ধতি
লিখেছেন লিখেছেন ব১কলম ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১০:১২:০৪ রাত
মহান আল্লাহ বলেন-
ادْعُ إِلِى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُم بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ
সুরা নহল-১২৫
1. দাওয়াত দিতে হবে বিরামহীনভাবে, সকল উপায়-উপকরণ (বৈষয়িক), সুযোগ-সুবিধা (ব্যাক্তিগত প্রভাব), মাধ্যম (প্রযুক্তিগত) ব্যবহার করে ।
2. দাওয়াত হবে একমাত্র আল্লাহর দিকে, কোন ব্যাক্তির দিকে নয়। সুরা নহল-১২৫
وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّن دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ
3. দাওয়াত দানের কাজ, সকল কাজের মধ্যেاحسن বা সর্বোত্তম কাজ ।
4. দাওয়াত দানকারীকে দাওয়াতের মূর্ত প্রতীক হতে হবে, নইলে বিপরীত ফল হওয়ার সম্ভাবনা আছে । সুরা হা মীম আস সাজদা-৩৩
وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّن دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ
5. অপরকে দাওয়াত দিয়ে নিজে আমল না করা মুনাফিকের আলামত।সুরা রাকারা-৪৪, সুরা সফ ২,৩
أَتَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنسَوْنَ أَنفُسَكُمْ وَأَنتُمْ تَتْلُونَ الْكِتَابَ أَفَلاَ تَعْقِلُونَ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لِمَ تَقُولُونَ مَا لَا تَفْعَلُونَ - كَبُرَ مَقْتًا عِندَ اللَّهِ أَن تَقُولُوا مَا لَا تَفْعَلُونَ
6. দাওয়াত দানের কাজটাই নবীওয়ালা কাজ, সকল নবীদের মিশনই ছিল দাওয়াতী কাজ করা ।-সুরা মায়েদা- ১৬
أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ وَإِن لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ َا
7. দাওয়াত দিতে হবে বুঝেসুজে, দাওয়াতের পরিণতির দিকে লক্ষ্য রেখে এবং যে কোন পরিণতি/পরিস্থিতি মোকাবেল করার মত মাথা ঠাণ্ডা রেখে । সুরা ইউসুফ-১০৮
قُلْ هَـذِهِ سَبِيلِي أَدْعُو إِلَى اللّهِ عَلَى بَصِيرَةٍ أَنَاْ وَمَنِ اتَّبَعَنِي
I invite unto Allâh with sure knowledge
8. দাওয়াত দেওয়ার সময় চরম ধৈর্য্য অবলম্বন করতে হবে । বিরোধীরা দাওয়াতী কাজকে পণ্ড করে দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত ভাবে দাওয়াত দানকারীর উপর চতুর্মুখী আক্রমণ পরিচালনা করবে। এটা ভুলে গেলে চলবেনা । - সুরা হা মীম আস সাজদাহ-৩৪
وَلَا تَسْتَوِي الْحَسَنَةُ وَلَا السَّيِّئَةُ ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ فَإِذَا الَّذِي بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ عَدَاوَةٌ كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيمٌ
9. দাওয়াত দিতে হবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ও উত্তম ভাষায়, বিতর্ক পরিহার করে। - সুরা নহল-১২৫
ادْعُ إِلِى سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ وَجَادِلْهُم بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ
মনে রাখতে হবে উত্তম marketing policy এর কারণে (তাবলীগ জামায়াত) নিকৃষ্ট ও ভেজাল পণ্য বাজারজাত করছে, আর আমাদের নিম্ন মানের marketing policy কারণে আসল পণ্য বাজারজাত করবে পারছিনা ।
10. দাওয়াত দিতে হবে সমাজ পরিবর্তনের চাবিকাঠি যাদের হাতে, তাদের টার্গেট করে, সে তাওয়াত কবুল করবে কিনা সেটা চিন্তা করা অবান্তর- সুরা আন নাযিয়াত-১৭
اذْهَبْ إِلَى فِرْعَوْنَ إِنَّهُ طَغَى
11. দাওয়াত দিয়ে কোনরকম প্রতিদান কামনা, সেটা যে কোন আকারেই(form) হোক না কেন, পরকালীন প্রাপ্তিকে সন্দেহজনক করে তুলবে । সকল নবীদের কথা ছিল- সুরা শেয়ারা-১০৯,
وَمَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ إِنْ أَجْرِيَ إِلَّا عَلَى رَبِّ الْعَالَمِينَ
সুরা মুদাচ্ছির-৬ وَلَا تَمْنُن تَسْتَكْثِرُ
12. উম্মতে মুহাম্মদী, সর্বোত্তম জাতি, দাওয়াত দানই তাদের বৈশিষ্ট্য- সুরা আলে ইমরান-১০৪
وَلْتَكُن مِّنكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
13. সর্বোত্তম ব্যক্তি সর্বোত্তম কাজে গাফেল থাকলে তার পরিণতিও সর্বনিম্ন- সুরা বনী ইসরাইল(৭৪-৭৫)
وَلَوْلاَ أَن ثَبَّتْنَاكَ لَقَدْ كِدتَّ تَرْكَنُ إِلَيْهِمْ شَيْئًا قَلِيلاً إِذاً لَّأَذَقْنَاكَ ضِعْفَ الْحَيَاةِ وَضِعْفَ الْمَمَاتِ ثُمَّ لاَ تَجِدُ لَكَ عَلَيْنَا نَصِيرً
সুরা আহজাব-৩০-৩১
يَا نِسَاء النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِّنَ النِّسَاء
يَا نِسَاء النَّبِيِّ مَن يَأْتِ مِنكُنَّ بِفَاحِشَةٍ مُّبَيِّنَةٍ يُضَاعَفْ لَهَا الْعَذَابُ ضِعْفَيْنِ وَكَانَ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرًا وَمَن يَقْنُتْ مِنكُنَّ لِلَّهِ وَرَسُولِهِ وَتَعْمَلْ صَالِحًا نُّؤْتِهَا أَجْرَهَا مَرَّتَيْنِ وَأَعْتَدْنَا لَهَا رِزْقًا كَرِيمًا
14. দাওয়াত দানের মাধ্যমে সকল/অধিকাংশ মানবগোষ্ঠিকে ইসলামের পক্ষ বা বিপক্ষ এই দু’ভাগে ভাগ না করা পর্যন্ত আল্লাহর ফয়সালা আসবে না ।
15. ইসলামের পথে আসলে শুধূ পরকালের কল্যাণ হবে এই ভুল ধারণা দূর করতে হবে । ইসলামের পথ দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতের কল্যাণের পথ এ কথা স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে হবে।
আখেরাতের কল্যাণঃ সুরা মায়েদাহ-৬৫
وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْكِتَابِ آمَنُواْ وَاتَّقَوْاْ لَكَفَّرْنَا عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ وَلأدْخَلْنَاهُمْ جَنَّاتِ النَّعِيمِ
আর যদি আহলেকিতাবরা বিশ্বাস স্থাপন করত এবং খোদাভীতি অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের মন্দ বিষয়সমূহ ক্ষমা করে দিতাম এবং তাদেরকে নেয়ামতের উদ্যানসমূহে প্রবিষ্ট করতাম।
দুনিয়ার কল্যাণঃ সুরা মায়েদাহ-৯৬
وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى آمَنُواْ وَاتَّقَواْ لَفَتَحْنَا عَلَيْهِم بَرَكَاتٍ مِّنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ
আর যদি সে জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং পরহেযগারী অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের প্রতি আসমানী ও পার্থিব নেয়ামত সমূহ উম্মুক্ত করে দিতাম।
বিষয়: বিবিধ
২৫০৪ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহবান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে এবং তাদের সাথে বিতর্ক করুন পছন্দ যুক্ত পন্থায়। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তাই ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে বিশেষ ভাবে জ্ঞাত রয়েছেন, যে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে এবং তিনিই ভাল জানেন তাদেরকে, যারা সঠিক পথে আছে।
আসলে যুক্তি তর্কে কেউ কারও মত পাল্টায় না। তাই যেখানে আল্লাহ রাসুলের বিপক্ষে কথাবার্তা বলা হয় সেখানে তর্ক করে কাউকে পরাজিত করার ইচ্ছা ত্যাগ করে সেই স্থান থেকে সরে আসাই উত্তম। এমন স্থানে অবস্থান করতে কোরানে মানা এসেছেন।
ভাল লিখেছেন। চলতে থাকুক।
মন্তব্য করতে লগইন করুন