দুনিয়ার সবকিছুই উল্টো দেখা মানুষ!!

লিখেছেন লিখেছেন নজরুল বিন আমিনুল হক ০১ আগস্ট, ২০১৩, ১১:৫৬:৩৩ সকাল



সবকিছু উল্টো দেখার অভ্যাস সাধারণ কারো থাকে না। কিন্তু এবার এমন একজনকে পাওয়া গছে যিনি সব কিছু উল্টো দেখেন!

আপনি যদি কখনো বাদুড়ের মতো ঝুলে থাকেন তবে কেমন দেখবেন। টেবিলের ওপর গ্লাসটা দেখবেন উল্টো। টিভিটা দেখবেন উল্টো। ঘরের সবকিছুই আপনার কাছে উল্টো লাগবে। আর যখন আপনি সোজা হয়ে যাবেন, মানে পা থাকবে মাটিতে তখন আবার সবকিছু সোজা দেখা শুরু করবেন। কিন্তু আমাদের মতো সোজা হয়েও উল্টো দেখা মানুষও আছে দুনিয়ায়। এখন পর্যন্ত একজনের সন্ধান মিলেছে। এই উল্টো দেখা মানুষটির নাম বোয়ানা দানিলোভিচ। তার বাড়ি সার্বিয়া। বয়স ২৮ বছর। তিনি একেবারেই স্বাভাবিক একজন মানুষ। ঠিক সময়ে অফিসে হাজির হয়ে যান। তবে অফিসে তার কম্পিউটারের মনিটরটি রাখেন উল্টো করে, যাতে তিনি সোজা দেখতে পান। বাড়িতে ফিরে উল্টো করে রাখেন টেলিভিশন। এটাই তো তার কাছে সোজা। খবরের কাগজও পড়েন তার মতো সোজা করে। মানে আপনার বা আমার চোখে উল্টো করে।

এই উল্টো দেখা মানুষ বোয়ানা



জন্ম থেকেই এমন। কৌতূহলী মানুষ যখন তার কাছে জানতে চাইলেন, এভাবে উল্টো দেখার কারণ কী বোয়ানা জানালেন, ‘এভাবেই আমার জন্ম হয়। আর আমি এভাবেই দুনিয়াটা দেখি।’

জানা গেছে, তার এই উল্টো দেখা নিয়ে দুনিয়াজুড়ে তোলপাড়। তার দৃষ্টি সক্ষমতা নিয়ে গবেষণা করছেন ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আর এমআইটির বিশেষজ্ঞরা তো রীতিমত স্তম্ভিত এ ঘটনা শুনে। তাদের মতে, এটি সত্যিই বিষ্ময়কর ঘটনা। তবে এটা এক ধরনের রোগ। চক্ষু বিশেষজ্ঞরা সেটাই জানালেন। তাদের মতে, বোয়ানা এক ধরনের স্নায়ু সমস্যায় ভুগছেন যার নাম ‘স্পারশ্যাল অরিয়েনটেশন ফেনমেনা’।

জানা যায়, বোয়ানা লেখাপড়া করেছেন অর্থনীতি নিয়ে। ভাবছেন এমন উল্টো দেখা মানুষ লেখাপড়া করেছেন কী করে লেখাপড়া করাটা তার জন্য কঠিনই ছিল বটে। ক্লাসে ঢুকে হয়ত সোজা বেঞ্চিকে উল্টো দেখেছেন। উল্টো বেঞ্চিতে বসেই চালিয়ে গেছেন লেখাপড়া। আর বইখাতাগুলো নিশ্চয়ই উল্টো করে ধরেছিলেন। নইলে সোজা দেখবেন কেমন করে যাই হোক। লেখাপড়া শেষে এখন কাজ করছেন সার্বিয়ার উজিক শহরে। এমন উল্টো দেখা নিয়ে নিজেও বেশ বিব্রত। আর উল্টো দেখলেই কী! স্বাভাবিক কাজকর্ম তো করতেই হয়। করেও যাচ্ছেন ঠিকঠাক মতো। বোয়ানা জানান, আমার চোখ ঠিকই দেখতে পায়। কেবল আমার মস্তিষ্ক ছবি বদলে দেয়। আর এ কারণেই আমি উল্টো দেখি। বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিতভাবে জানে না, কেন আমি উল্টো দেখি- জানালেন তিনি।

কথাটা খাঁটিই বলেছেন। বিশেষজ্ঞরা তো বোয়ানার এই উল্টো দেখার একটা রোগের নাম দিয়েই খালাস। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত জানেন না, কেন বোয়ানা উল্টো দেখেন। বোয়ানাকে নিয়ে তাই গবেষণা চলছে এখনও। কতদিন চলে কে জানে উল্টো বোঝার মানুষ দুনিয়ায় কম নেই। আপনি বললেন একটা বুঝল আরেকটা।

কিংবা আপনি বোঝাতে চাইলেন সোজা করে, বলল উল্টো করে। তাই বলে উল্টো দেখার মানুষও থাকবে, এটা অনেকেই বিশ্বাস করতে চাইবেন না। কিন্তু উল্টো বোঝার মতো আর বলার মতো মানুষ থাকলে, উল্টো দেখার মতো মানুষও যে দুনিয়ায় থাকতে পারে, সেটাই আমাদের বুঝিয়ে দিলেন বোয়ানা দানিলোভিচ।

এ এক আজব কারবার। আমাদের কাছে যা সোজা, তার কাছে সেটাই উল্টো। একটা গ্লাস আমরা যেটা সোজা করে রাখি, তিনি যখন সেটা তার মতো সোজা করে রাখতে চান, সেটাই হয়ে যায় আমাদের কাছে উল্টো। তার মানে আমাদের কাছে তিনি উল্টো মানুষ। আবার তার কাছে দুনিয়ার বাকি সব মানুষ উল্টো। বোয়ানার মতো এমন বিপরীত দৃষ্টির মানুষ দুনিয়ায় দ্বিতীয়টি আছে কিনা কিংবা থাকলেও কোথায় আছে, জানা যায়নি এখন পর্যন্ত।

খবরটা এখানে পাবেন।

বিষয়: বিবিধ

১৩৪২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File