ধন্যবাদ ছাত্রশিবির!
লিখেছেন লিখেছেন নজরুল বিন আমিনুল হক ০৮ জুলাই, ২০১৩, ০৫:১৬:৫৬ বিকাল
ছাত্রশিবিরের সংস্পর্শে এসে কত অবাধ্য ছেলে বাধ্য হয়েছে, কত দুষ্ট ছেলে যে, ভদ্র হয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। শিবিরের ছোয়ায় কিছু কিছু ছেলের পরিবর্তন আর পরিবর্ধন দেখে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায়ের সাথে সাথে ছাত্রশিবিরকেও ধন্যবাদ দিতে হয়।
কিন্ডার গার্টেনে শিক্ষকতার সময়কার এক স্টুডেন্ট হাইস্কুল জীবনে শিবিরের সাথী হয়েছিল। তার এইচএসসি পাশ করা পর্যন্ত শুধুমাত্র ফেসবুক আর ইমেইলে যোগাযোগ হত। কারণ সে যখন ৯ম শ্রেণীতে তখন আমি দেশ ছেড়ে প্রবাসে পাড়ি জমাই। বেশ কিছু দিন যোগাযোগ নাই। হঠাত গতকাল তার দেয়ালে একটা ফটো দেখে মন্তব্য করলাম। বদলে আমাকে ম্যাসেজ করল "স্যার আমাকে ভুলে গেলেন নাকি?" আমি এখন দেশের বাহিরে!!
দেশের বাহিরে কথাটা শুনেই মনের মধ্যে একটা মোচড় দিয়ে উঠল। হয়তো বর্তমান সরকারের নিপীড়নে পিতা-মাতার একমাত্র ছেলেকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। কিন্তু পরক্ষনেই নিশ্চিত হলাম এমবিবিএস করার জন্য বর্তমানে চায়নাতে আছে।
আমি তার খোজ নেয়ার আগেই সে কয়েকটা প্রশ্ন করতে চাইল। অভয় দিয়ে বললাম প্রশ্ন কর চেষ্টা করব উত্তর দিতে। তার প্রশ্নগুলো ছিল-
১। আমাদের রুম থেকে প্রায় ২০ কি: দূরে মসজিদ। আমরা রুমে জামায়াতে নামাজ পড়ি- আমরা কি মসজিদের স্ওয়াব থেকে বঞ্চিত হব??
২। যেখানে জুমা পড়ি ইমাম সাহেব খুতবা দেয় বলতে শুধু সূরা ফাতিহা পড়ে, তাও মদ্ গুন্নাহ কিছুই ঠিক নাই, এভাবেই নামাজ পড়ায় (আমাকে একটা অডিও পাঠিয়েছে যাতে ইমামের তেলাওয়াত রেকর্ড করেছে) আর ইমামের পরণের জামা মাটি পর্যন্ত লম্বা-এ অবস্থায় আমাদের নামাজের কি হবে??
জবাবগুলো আমার যতটুকু জানা আছে তাও বললাম না। কারণ আমার একটু ভুলের কারণে আমিসহ ছাত্রটা গুণাহগার হতে পারে তাই দারস্ত হলাম দাম্মাম ইসলামীক সেন্টারের সম্মানিত শায়খ আহমদ উল্যাহ সাহেবের। উনার উত্তরগুলো ছাত্রকে জানালাম।
উত্তরগুলো ছিল এরকম (শায়খ মোবাইলেই আমাকে হাদিস তথা দলিল বলেছেন, আমারতো হাদিস মুখস্ত নাই তাই মূল কথাই বলছি)-
১) মসজিদের প্রতিবেশীদের জন্য মসজিদে যাওয়া বাধ্যতামূলক আর প্রতিবেশি হচ্ছে তারা যারা নিজ ঘরে থেকে আজান শুনতে পায়। মূল গুরুত্ব জামায়াতের সহিত নামাজ আদায়ের। তাই জামায়াতে নামাজ পড়তে হবে।
২) ইমামের ভুলের জন্য ইমাম দায়ী। যথাসম্ভব ইমামকে সংশোধন বা পরিবর্তন করতে করতে হবে যেহেতু ওটা সম্ভব না; আবার জামায়াতও ত্যাগ করা যাবেনা তাই তার পিছনেই নামাজ পড়তে হবে। (ধন্যবাদ শায়খ আহমদ উল্যাহ ভাইকে)
তারুন্যে টগবগ ছেলেটা একটা নন-মুসলিম দেশে গিয়ে কিভাবে লেখাপড়ার পাশা-পাশি টাকা পয়সা আয় করবে তা জানতে চায়নি; কিংবা জানতে চায়নি দুনিয়াবী অন্যকোন সুবিধার কথা। দুনিয়াবী প্রয়োজনে চিকিসক হতে গিয়েও খেয়াল রেখেছে কিভাবে আখিরাতের পাথেয় সঞ্চয় করতে হবে। নি:সন্দেহে এটা ছাত্রশিবিরের অবদান।
তাই আবারও ছাত্রশিবিরকে ধন্যবাদ।
আর অবশেষে সেই ছাত্রটার জন্য দোয়া চাই যেভাবে সে আমার কাছে চেয়েছে, স্যার দোয়া করবেন যেন একজন ভাল ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে পারি। আপনারা তার জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন তার নেক নিয়ত পূরণ করে।
বিষয়: বিবিধ
১৬০২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন