লুঙ্গির রচনা ( একটি গবেষণাধর্মী ও ব্যতিক্রমধর্মী পোস্ট
লিখেছেন লিখেছেন ইনোসেন্ট সবুজ ০১ এপ্রিল, ২০১৩, ০২:২৭:১৮ দুপুর
লুঙ্গি
ভূমিকাঃ মানুষ একটি সভ্য জাতি , প্রাচীন কাল থেকে তারা নিজেদের লজ্জা নিবারনের জন্য ও নিজেদের সোন্দরজ প্রকাশের জন্য বিভিন্ন কাপড় পরিধান করে আসছে , তেমনি একটি কাপড় হচ্ছে লুঙ্গি । পড়তে সহজ ও শরিরের নিচের অংশ ঠান্ডা রাখতে ইহা খুব ভাল কাজ করে । গরমের দিনে , শোবার বিছানায় ও বাথরুমে যে কোন জায়গায় ইহা আমাদের অনেক কাজ সহজ করে দেয় ।
লুঙ্গি কিঃ লুঙ্গি একটি পরিধেয় বস্তু যা মানুষের গায়ের নিচের অংশ ঢাকতে সাহায্য করে থাকে । এর মাধ্যমে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে যেমন ঘুরে বেড়ানো জায় , তেমনি লজ্জাও নিবারন করা যায় । এটি প্রধানত ছেলে ও পুরুষের পোশাক হলেও বর্তমানে মেয়েরা যে হারে ছেলেদের কাপড়ের উপর আক্রমন চালাচ্ছে তা অদুর ভবিষ্যতে সর্বজন পরিহিত পোশাকে পরিনত হতে পারে ।
গঠনঃ লুঙ্গি দেখতে অনেকটা বেলুনের মত , যা গোলাকার এবং এর মাঝে পুরা ফাঁকা যেখানে মানুষের শরীর অবস্থান করে । ধুতি চাদরের মত হলেও ইহা স্কার্টের মতন করে গোল করে সেলানো থাকে। এর দু পাশে চোঙের মত খোলা , ইহা ইচ্ছামত উপরে – নিচে পরিধান করা যায় ।
উৎসঃ গবেষণায় দেখা গেছে, এর সূচনা হয়েছে দক্ষিণ ভারতে বর্তমানে তামিলনাডুয়। ভেস্তি নামক এক ধরনের পোষাককে লুঙ্গির পূর্বসূরী বলে মনে করা হয়। ইতিহাসে উল্লেখিত আছে মসলিন কাপড়ের ভেস্তি পোষাক তামিল থেকে ব্যবিলনেরপ্তানী হত। ব্যবিলনের প্রত্নতাত্বিক নিবন্ধে 'সিন্ধু' শব্দ খুঁজে পাওয়া যায়। তামিল ভাষায় সিন্ধু অর্থ কাপড় বা পোষাক। 'বারাদাভারগাল' নামের তামিলনাডুর জেলে সম্প্রদায় পশ্চিম আফ্রিকা, ইজিপ্ট বা মিশর এবং মেসোপটেমিয়া অঞ্চলে লুঙ্গি রপ্তানীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সময়ের সাথে, সাদা কাপড়ে ফুল এবং অন্যান্য নকশা চিত্রিত হয়ে পরবর্তীতে লুঙ্গিতে পরিণত হয়েছে।
প্রচলনঃ বাংলাদেশ, ভারত , শ্রীলংকা এবং মায়ানমারে এর প্রচলন দেখা যায়। যদিও এটির সূচনা দক্ষিণ ভারতে কিন্তু এটি দক্ষিণ এশিয়ার অনেক সম্প্রদায়ই ব্যবহার করে থাকে। বর্তমানে লুঙ্গি বার্মা, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া এবং পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোয় এটি বেশি জনপ্রিয় যে সকল অঞ্চল গরম এবং আর্দ্রতার কারণে আবহাওয়া অসহনীয় হয়ে উঠে সে সব অঞ্চলে এটি বেশি পরা হয়।
আবিস্কারঃ ধারণা করা হয় প্রাচীন যুগ থেকেই লুঙ্গির প্রচলন চলে আসছে , এর আবিষ্কারের কারন হিসেবে অনেক গল্প প্রচলিত আছে । তার মদ্য সবচেয়ে মজার ঘটনা হল “ একবার রাজা মেয়ের বিয়েতে পায়জামা পরে ছিলেন, খাওয়ার পর হটাত পেট মোচড়ালে তিনি বাথরুমে গিয়ে পায়জামার দড়ি খুলতে পারলেন না , অনেক্ষন ব্যর্থ চেস্টার পর ........... ( বাকিটা বুঝে নেন । এরপর রাজা দর্জিকে বলেন এমন কাপড় তৈরি করতে যা এই বিড়ম্বনা থেকে রেহাই দিবে “
প্রকারভেদঃ সাধারনত এক রঙের লুঙ্গি পরিধান করা হলেও বর্তমানে বিভিন্ন রঙের ও কাপড়ের লুঙ্গি বাজারে পাওয়া জায় । কাপড় ভেদেও লুঙ্গি বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে ।
পরার নিয়মঃ একটি শুকানো লুঙ্গিটি নিয়ে তাতে প্রথমে এক পা, পরে আরেক পা ঢোকাতে হবে। দুই পা ঢোকানো হয়ে গেলে লুঙ্গি টেনে কোমর বরাবর আনতে হবে। তবে অনেকে লুঙ্গিকে মাথার ওপর দিয়ে গলিয়েও পরেন।এবার লুঙ্গির কোমরের কাছের ঘের ধরে গুটিয়ে একটা গিঁট মারুন। গিঁটটি মজবুত ও টেকসই হওয়া চাই। তবে এমন গিঁট মারবেন না যা আপনি পরবর্তীতে নিজে বা স্ত্রী/শালী/বান্ধবী/পাশেরবাড়িরভাবি প্রভৃতির সহায়তায় খুলতে অপারগ হবেন। অনেক মফিজ বেলট দিয়ে লুঙ্গি পরে, আপনিও চাইলে পরতে পারেন।
ব্যবহারঃ দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড থেকে শুরু করে বিয়ের অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে পরা হয়। লুঙ্গি পরে কৃষি কাজ সহ সকল কাজ করতে সুবিধা হয় , ইহা ইচ্ছা মত ছোট – বড় ও উপর-নিচ করে পরিধান করে যায়
সুবিধাঃ লুঙ্গির বহুবিধ সুবিধার কারনে তা দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে পরেছে , নিচে লুঙ্গির সুবিধা বর্ণনা করা হল
. ইহা পরতে খুব সহজ , কোন ঝামেলায় পরতে হয়না
. বিছানায় এর ব্যাপক সুযোগ – সুবিধা পরিলক্ষিত হয় ( বিস্তারিত বুঝে নিয়েন )
. ইহা হাওয়া চলাচলে সহায়তা করে , গরমের দিনে ভাল কাজ দেয়
. বাথরুমে ইহা অনেক ঝামেলা থেকে আমাদেরকে মুক্তি দান করে
. কাপড় পালটাতে ইহার ভাল বিকল্প কিছু নেই
. যে কোন সময় , যে কোন পরিস্থিতিতে ইহা ছোট – বড় ও উপর-নিচ করে সুবিধামত পরিধান করে যায় ( উল্টা-পাল্টা চিন্তা কইরেন না )
অসুবিধাঃ সকল ক্রিয়ার যেমন সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া থাকে , তেমনি প্রায় প্রত্যক জিনিসের সুবিধা ও অসুবিধা উভয়ই আছে , নিচে লুঙ্গির অসুবিধাগোলো দেওয়া হল
. রাস্তার মাঝখানে অথবা যে কোন জায়গায় ইহা বাতাসে উপরে উঠে জেতে পারে
. যে কোন পার্টি বা অনুষ্ঠানে সবার সামনে ইহা খুলে জেতে পারে
. রাতে গড়াগড়ির সময় লুঙ্গি হারিয়ে জেতে পারে :;p
. ছোট ভাইয়ের ( !! ) উপস্থিতি সহজেই বুঝা যায়
উপসংহারঃ লুঙ্গি একটি খুব উপকারি বস্তু । ইহার সঠিক ব্যবহার করলে ইহা আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান করে এবং অনেক কাজ সহজ করে দেয়
বিষয়: বিবিধ
১৬৩২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন