( জিজ্ঞাসাবাদে দুই গার্মেন্টস মালিক ) শ্রমিকের টিফিনের টাকাও মেরে খেত সোহেল রানা!!!
লিখেছেন লিখেছেন ইনোসেন্ট সবুজ ২৮ এপ্রিল, ২০১৩, ১০:৪৭:৪৩ সকাল
শ্রমিকদের টিফিনের জন্য বরাদ্দ ছিল ১০ টাকা। গার্মেন্টস মালিকরা ইচ্ছে করলেই নিজেরা এই টিফিন কিনে দিতে পারতেন। কিন্তু রানা প্লাজায় গার্মেন্টস চালাতে হলে টিফিন কেনার ঠিকাদারি সোহেল রানাকেই দিতে হবে। নইলে ব্যবসা হবে না। এই ১০ টাকায় সোহেল রানার কাছ থেকে শ্রমিকরা পেতেন দু' টুকরো বিস্কুট। যা দিয়ে শ্রমিকদের কিছুই হত না। বাধ্য হয়ে গার্মেন্টস মালিকরা আরো ৫ টাকা বাড়ান। ১৫ টাকায়ও টিফিনে যা দাঁড়াল তা হল একটি কলা আর এক টুকরো বিস্কুট। দিনের পর দিন সোহেল রানা এভাবেই শ্রমিকদের ঠকিয়ে তাদের খাবার থেকে টাকা মেরেছেন।
শুধু শ্রমিকদের খাবারের টাকা মেরেই ক্ষান্ত হননি রানা। ঝুট ব্যবসা, মাসে মাসে থোক বরাদ্দ সবই সোহেল রানাকে দিতে হয়েছে গার্মেন্টস মালিকদের। বাধ্য হয়ে কয়েকবার এখান থেকে গার্মেন্টস গুটিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তারা। রানার সাফ কথা, এখান থেকে গেলে সাভার-আশুলিয়ায় ব্যবসা করা হবে না। তাই অনেকটা নিরবেই রানার সব অন্যায় সহ্য করে ব্যবসা করেছেন তারা। শুক্রবার রাতে গ্রেফতারের পর গতকাল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্যই জানিয়েছেন নিউওয়েব স্টাইল ও নিউ ওয়েব বটমসের মালিক মাহমুদুর রহমান তাপস ও বজলুস সামাদ আদনান।
রাজউক ও পুলিশের দায়ের করা পৃথক ২টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এই দুই গার্মেন্টস মালিক ও সাভার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ইমতেমাম হোসেন ও সহকারী প্রকৌশলী আলম মিয়াকে। গ্রেফতারকৃত এই ৪ জনকে দুই মামলায় আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাপস এবং আদনানকে ৬ দিন করে এবং প্রকৌশলী এমতেমাম ও আলম মিয়াকে ৪ দিন করে রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি দেয়।
গ্রেফতারকৃত সাভার পৌরসভার দুই প্রকৌশলীও নিজেদের দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির কথা স্বীকার করেছেন। পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে দুই গার্মেন্টস মালিক বলেছেন, গার্মেন্ট খোলা রাখতে রানা তাদের অনেকটা বাধ্য করেই বলেছিলেন, কোনভাবেই গার্মেন্টস বন্ধ রাখা যাবে না। হরতালের দিন গার্মেন্টস বন্ধ রাখলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই গার্মেন্টস খোলা রাখতে হবে। হরতালবিরোধী মিছিলে গার্মেন্টস শ্রমিকদের অংশ নিতে হবে। সাভারের থানা নির্বাহী কর্মকর্তার সামনেই রানা এসব হুমকি দেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তাপস ও আদনান জানান, শ্রমিকদের কাজের ওপর আমাদের সমৃদ্ধি নির্ভর করে। আমরা কি জেনে শুনে ডেকে এনে তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারি? কিন্তু সব বুঝেও তারা অসহায় ছিলেন। পুলিশ জানায়, হরতালের দিনে হরতাল বিরোধী মিছিলের জন্যে প্রতিদিন সকালে রানা প্লাজার নিচে অনেক লোক জড়ো হয়। মঙ্গলবারও হয়েছিল। রানা ওই সময় হরতাল বিরোধীদের নিয়ে প্লাজার বেজমেন্টে মিটিং করছিলেন। ওই সময় ভবন ধসের ঘটনা ঘটে।
এর আগে শুক্রবার মধ্যরাত ২টার দিকে মগবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এই দুই গার্মেন্টস মালিককে। গতকাল সকালে মহাখালী থেকে সাভার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এমতেমাম হোসেনকে এবং সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলম মিয়াকে সাভার থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে নিজ বাসা থেকে আলম মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মহাখালীর মেট্রোপলিটন হাসপাতালের পাশ থেকে ভোরে গ্রেফতার করা হয় এমতেমামকে। এমতেমামের স্ত্রী মেট্রোপলিটন হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। এমতেমাম স্ত্রীকে দেখে হাসপাতাল থেকে যাওয়ার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মুল নিউজ
বিষয়: বিবিধ
১৯৯৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন