ভারতের সেনাবাহিনীর বেহাল অবস্থা।
লিখেছেন লিখেছেন ববি_জি ২৩ এপ্রিল, ২০১৫, ০৫:৪১:২১ বিকাল
বিশ্বের শক্তিশালী সামরিক শক্তি হিসাবে ভারত এখন প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। প্রতিদ্বন্দ্বী শুধু পাকিস্তান নয় চীনও। ভারত বিশ্বের ভারত চতুর্থ সামরিক শক্তির অধিকারী দেশ| কিন্তু দেশটির সেনাবাহিনীর ভেতরের চিত্র অত্যন্ত ভয়াবহ। ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোলাবারুদ শেষের দিকে। সিয়াচেন এবং লেহর মত বরফাচ্ছন্ন এলাকায় যেসব ভারতীয় সৈন্য দায়িত্ব পালন করছেন তাদের বুট জুতা নেই, নেই মশারি। এছাড়া এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনী একটি অ্যাসল্ট রাইফেলও তৈরি করতে পারেনি যা কিনা সেনাদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ।
ভারতের টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে শিরোনাম বুটস বুলেটস রাইফেলস:অল ইন শট সাপ্লাই ফর আরমি। ভারতের প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিই মঙ্গলবার ভারতের সেনাবাহিনীর এই তথ্য জানিয়েছে। এমন এক দেশের সেনাবাহিনী অবস্থা, যে দেশটি উদীয়মান পরাশক্তি চীন এবং পরমাণু অস্ত্রধর পাকিস্তান দ্বারা বেষ্টিত। ভারতের প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিই মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে।
কমিটির প্রধান হচ্ছেন বিজেপির সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) বিসি খান্দুরি। কমিটিতে সংসদের উভয় কক্ষের ৩৩ জন সদস্য রয়েছেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যের ভিত্তিতে কমিটি এ মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সংসদের কাছে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে কমিটি বলেছে, হিমবাহের উচু মত এলাকায় যেসব সৈন্য দায়িত্ব পালন করছেন তাদের ২ লাখ লেদার বুটের ঘাটতি রয়েছে, ক্যানভাস বুটের প্রয়োজন ১৩ লাখ, মশারি দরকার ১ লাখ এবং মুখমণ্ডল গরম জন্য দরকার ৬৫ হাজার বলাক্লাভাস বা মুখোশ। এছাড়া বহু সৈন্য বুলেট প্রুফ জ্যাকেট নেই। এরফলে তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, সেনাবাহিনীর নাইট ভিশন গোগলসের সরবরাহ সন্তোষজনক কিন্তু সেনাবাহিনী বলছে বিপরীত কথা। এ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংসদের স্থায়ী কমিটি। কমিটি বলছে, মনে হচ্ছে যে প্রতিরক্ষা পরিকল্পনায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সেনাবাহিনীকে আমলে নিচ্ছে না।
গোলাবারুদের স্বল্পতার কথা উল্লেখ করে কমিটি বলেছে, ‘দীর্ঘমেয়াদে যুদ্ধে টিকে থাকা সম্ভব হবে না।’ কমিটি হতাশা প্রকাশ করে বলেছে যে সামরিক প্রযুক্তি উন্নয়নের দায়িত্ব প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থাকে (ডিআরডিও) দেয়া হলেও ১৯৮২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তারা মানসম্মত একটি রাইফেল তৈরি করতে পারেনি।
ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান এবং বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেনারেল ভিকে সিং ২০১২ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর দুরাবস্থার কথা উল্লেখ করে দেশব্যাপী হইচই ফেলে দিয়েছিলেন।
বিষয়: আন্তর্জাতিক
১৪৭২ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভিতরে স দ র ঘা ট!!
গত ২০-২৫ বছর ধরে ভারতিয় সশস্ত্রবাহিনি আনবিক বোমা ও সাবমেরিন,অর্জুন ট্যাংক,নিজস্ব যুদ্ধ বিমান এর মত বড়বড় প্রকল্প নিয়েই বেশি অর্থ খরচ করেছে। কিন্তু প্রয়োজনিয় হালকা জিনিস উৎপাদন করতে পারে নাই!!!
এর পিছনে অবশ্য আছে অর্থনৈতিক স্বার্থ। বেসরকারি খাতের কোম্পানিগুলি বড় প্রজেক্ট নিয়ে যতটা উৎসাহি ছোট প্রজেক্ট এর বিষয়ে নয়।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতে প্রতি বছর দূষিত পানি এবং বাতাসের কারণে মারা যায় প্রায় ৯ লাখ মানুষ। ১৯৯৯ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ঋণের টাকা শোধসহ এ জাতীয় কারণে ভারতে দুই লাখের বেশি কৃষক আত্মহত্যা করেছে। ২৪ লাখ মানুষ এইডসে আক্রান্ত। বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী তিন বছরের কম বয়সী ৪৬ শতাংশ শিশু পুষ্টিহীনতায় ভোগে। ভারতের প্রায় ৩৪ শতাংশ মানুষ নিরক্ষর। এর বিপরীতে ভারতের সমরপ্রস্তুতির দিকটি দেখা যাক। ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি ২৬ ফেব্রুয়ারি সে দেশের ২০১০-১১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছেন। বাজেটে গত অর্থবছরের চেয়ে সামরিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে প্রায় ৪ শতাংশ। বাজেটে সামরিক খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৪৭ হাজার ৩৪৪ কোটি রুপি। আগামী বছরে সরকারের মোট ব্যয়ের ১৩ শতাংশ ব্যয় হবে সামরিক খাতে। গত অর্থবছরে এ ব্যয়ের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৪১ হাজার ৭০৩ কোটি রুপি। এর আগের অর্থবছরে সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি করেছিল ৩৪ শতাংশ। যা ছিল ভারতের ৬৪ বছরের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। গত এক দশকে ভারতে সামরিক ব্যয় ছিল ৪৫ হাজার ৬৯৪ কোটি রুপি। এক দশক পরে অর্থাৎ ২০০৯-১০ সালে এসে সেই ব্যয়ের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪১ হাজার ৭০৩ কোটি রুপি। ভারত সামরিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধির যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তাতে ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ হারে সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। আর এতে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সামরিক খাতে বরাদ্দ গিয়ে দাঁড়াবে এক লাখ ৯২ হাজার ৩৯ কোটি রুপি। অথচ ভারতে হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা বিশ্বে সর্বাধিক।
মন্তব্য করতে লগইন করুন