আমরা পবিত্র মুক্তিযুদ্ধকে কখনোই ধান্দাবাজীর পূঁজি মনে করি না

লিখেছেন লিখেছেন মানিক ২১ এপ্রিল, ২০১৩, ০২:৫৪:৫২ দুপুর

বিভিন্ন ভাবে সাহরিয়ার কবীর-মুনতাসির মামুন-জাফর ইকবাল গংদের শেখানো মুক্তিযুদ্ধ আর জামাত শিবির বিতাড়নের নসিহত শুনতে আমরা ক্লান্ত। আওয়ামী লীগ আর তার সমর্থকদেরকে কথা বলে লাভ নেই। তারা কখনোই যুক্তি মানেন না। বিষয় দুইটা ১৯৭১ আর ২৯১৩। আমিও এই মাটির সন্তান। আমাদের পরিবারের প্রায় সকল সদস্যের মহান মুক্তি যুদ্ধে কম বেশী অবদান আছে আমাদের পরিবারে সম্মুখ সমরে প্রাণ দেওয়া মুক্তি যোদ্ধাও আছেন। আমাদের নাই মুক্তিযোদ্ধা সনদ। কারণ আমরা পবিত্র মুক্তিযুদ্ধকে কখনোই ধান্দাবাজীর পূঁজি মনে করি নাই। আমার বাবা মা এখনো বেঁচে আছেন। আমি সময় পেলেই ওনাদের পাশে বসে মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব গল্প শুনি আর বর্তমানের ধান্দাবাজদের ইতিহাস বিকৃতি আর মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ধান্দাবাজী দেখে চোখের জলে ভাসি। মুক্তিযুদ্ধের পরে এলাকার কমান্ডার, MP চাচা বহুবার আব্বার কাছে এসে অনুরোধ করেছেন, “ভাই একটা সার্টিফিকেট নিয়ে রাখেন, আপনার না লাগলেও বাচ্চা-কাচ্চার কাজে লাগবে।“ আব্বা চাচাকে বিনয়ের সাথে ফিরিয়ে দিয়েছেন, “ আমিতো সার্টিফিকেটের জন্য কিছু করিনি, ভাই। করেছি দেশের জন্য। আমাকে মাফ করবেন।“ আমি গর্বিত আমার পিতাকে নিয়ে। এমন লক্ষ কোটি বাংলাদেশী আছে আমাদের দেশে। কথায় আসিঃ

১৯৭১

►এক বাক্যে আওয়ামী সমর্থকদের কথা মেনে নিলাম, জামাত দলগত ভাবে ১৯৭১ সালে অখন্ড পাকিস্তানের পক্ষ্যে রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েছিল। এটাকী কোন ফৌজদারী বা মানবতা বিরোধী অপরাধ? নিশ্চই নয়।

১৯৭১ সালের পর জামাতে ইসলামী পাকিস্তানের আর তৎকালীন ইসলামী ছাত্র সংঘের বিলুপ্তি ঘটেছে। স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্ব মেনে নিয়ে বাংলাদেশের প্রচলিত সকল বিধি বিধান পরিপালন করে বৈধ গণতান্ত্রীক রাজনৈতিক দল হিসাবে ‘বাংলাদেশ জামাতে ইসলামী’, ‘ইসলামী ছাত্র শিবির’ এবং তাদের নানান অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।

►এখন আসুন ১৯৭১ এর গণহত্যা আর যুধাপরাধের বিষয়ে। যুক্তি আর কল্পনায় ভার করে ১৯৭১ থেকে একটু ঘুরে আসা যাকঃ ১৯৭১ এর ২৫শে মার্চ, সেনানিবাস থেকে জালপাই রঙের ট্যাংক আর সাজোয়া যান নেমে আসলো ঢাকার রাজপথে। হায়নার মতো তারা ঝাপিয়ে পড়ল নিরস্ত্র বাঙালীর উপর। গুলি ছুড়তে যাবার আগমুহুর্তে তারা সবাই থেমে গেল। আইএসআই এর চৌকশ গোয়েন্দারা ছুটল মগবাজারের চিপায় গোলাম আজম সাহেবের বাসায়ঃ ‘বস আপনার দল বল লইয়া আসেন, আমাদের সেনা বাহিনী আপনার অপেক্ষায় প্রস্তুত হয়ে আছে। গোলাম আজম সাহেব আসলেন, কাদের মোল্লা নিল ম্যাশিনগান, নিজামী সাহেব ট্যাংক, মুজাহিদ এসএমজি, ইত্যাদি ইত্যাদি তার পর দর্শক হয়ে তাকিয়ে রইল পাকিস্তানি জেনারেল আর প্রশিক্ষিত সেনারা। হুকুম দিলেন গোলাম আজম সাহেব, ফুটতে থাকল গুলি, রক্তের সাগরে ভাসতে থাকল বাংলাদেশ। সহজ ভাবে এটা হচ্ছে আওয়ামী উস্তাদ সাহরিয়ার কবীর-মুনতাসির মামুন-জাফর ইকবাল গংদের শেখানো মুক্তি যুদ্ধ। আমরা এটা বিশ্বাস করি না। আমরা দৃড়ভাবে বিশ্বাস করি ১৯৭১ সালের গণ হত্যা আর অপরাধের ১০০% দায়ভার পাকিস্তান সরকার আর তার সেনা বাহিনীর। বাকী সবই অপ রাজনীতির নোংরা খেলা।

২০১৩

►ইসলামের নীতি আদর্শের ভিত্তিতে রাজনীতি করবার অধিকার যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত সহ তাবত দুনিয়ায় আছে। বাংলাদেশে থাকবে না কেন?

►ভারতে বিজেপির মতো উগ্র সাম্প্রদায়ীক সন্ত্রাসী দলও দাপটের সাথে রাজনীতি করে।

বাংলাদেশে গণতান্ত্রীক পন্থায় রাজনীতি করার আধিকার থেকে জামাত শিবিরকে কেন বঞ্চিত করা হবে?

►জামত শিবিরকে রাজনৈতিক ভাবে, আদর্শিক ভাবে মোকাবেলা করুন। গায়ের জোরে আর অপকৌশলে কেন?

►দেশটা রাম-বাম আর শাহাবাগীদের একার নয়। চুরি-ধারী ধান্দাবাজী করে খাচ্ছেন তাও সহ্য করা হচ্ছে। অতিবাড় বাড়বেন না, ফটিকছড়ি পাঠিয়ে দেয়া হবে। জামত-শিবিরকে নিশ্চহ্ন করা অতো সহজ নয়। জামাত-শিবিরের অবস্থান বাংলার লক্ষ কোটি জনতার মগজে, কলিজায় মানুষের অস্তিত্বে। এটা ১৯৭১ নয়, ২০১৩।

বিষয়: বিবিধ

১৫২৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File