কৃষকের ট্যাক্সের টাকায় যে পুলিশের বেতন দেওয়া হয় তাদের এ কেমন নৃশংসতা?

লিখেছেন লিখেছেন অজানা পথিক ২০ এপ্রিল, ২০১৩, ০৪:৪৪:৪৫ বিকাল

পুলিশ আসামিকে না পেয়ে তার আত্মীয়কে বেধড়ক পিটিয়ে চারতলা ভবনের ছাদ থেকে লাথি দিয়ে নিচে ফেলে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ দেশের নাগরিকদের বেঁচে থাকার কি কোনো মৌলিক অধিকার নেই? সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় যে পুলিশ বাহিনীর বেতন দেয়া হয়, যাদের কাজ সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করা, সে পুলিশ বাহিনী কিভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে একজন মানুষকে এভাবে হত্যা করতে পারে। পুলিশের এ আচরণ সব বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। কেউ অপরাধ করলে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নেয়া যায়। অপরাধীর শাস্তি আদালতে নির্ধারিত হবে। পুলিশ আমার ছেলেকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিলো না কেন? কেন আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। কী অপরাধ ছিল তার? এ রকম অনেক প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন চট্টগ্রামে পুলিশের চরম নির্মমতায় আহত হয়ে এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া সাতকানিয়ায় নিহত মাঈনুদ্দীন হাসান মুন্নার বাবা আবদুর রহমান।

মাঈনুদ্দীন হাসান মুন্না (২৬) গত ১৭ মার্চ চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার রাহাত্তারপুল সৌরভী আবাসিক এলাকায় আমেরিকাপ্রবাসী মামা শাহ আলমের বাসায় রাতে ঘুমিয়ে ছিল। হঠাৎ সাতকানিয়া ও চট্টগ্রাম পুলিশের একটি বিশেষ টিম সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহাজাহান চৌধুরীকে গ্রেফতার করতে ওই বাড়িতে অভিযান চালায়। কিন্তু তাকে না পেয়ে তার ভাগিনা মুন্নাকে বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে ধরে চারতলা ভবনের ছাদে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে তাকে বেধড়ক পেটানো হয়। পরে তার মামার অবস্থান জানতে চাইলে সে কিছু জানে না বলে জানান। এতে পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে চারতলা ভবনের ছাদ থেকে মুন্নাকে ফেলে দেয়। এতে তার মেরুদণ্ড ও হাত-পা ভেঙে যায়। পরে পুলিশ নিচে নেমে গুরুতর আহত মুন্নাকে গ্রেফতার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২২ মার্চ রাত ১২টায় মুন্না মারা যান।

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ছমদরপাড়া এলাকার আবদুর রহমানের ছোট ছেলে মাঈনুদ্দীন হাসান মুন্না। তিন ভাই তিন বোনের মধ্যে এক ভাই ও দুই বোন বিবাহিতা। মুন্নার মা হোসনে আরা বেগম আদরের ছেলে হারানোর শোকে পাগলপ্রায়। ছেলের জন্য কাঁদতে কাঁদতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। আর শুধু বলছেন, কিসের অপরাধে আমার ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। যারা এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের কি কোনো সন্তান নেই। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, কী অপরাধে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড। যারা আমার ছেলেকে নির্দয়ভাবে হত্যা করে আমার বুক খালি করেছে আল্লাহ যেন একইভাবে তাদের বুক খালি করে দেন। তখন তারা বুঝবেন আপনজন হারানোর বেদনা কত কষ্টদায়ক। তবে তিনি ছেলে হারানোর বেদনায় ব্যথিত হলেও এ বিচার দুনিয়ার কারো কাছে চান না। তিনি তার ছেলে হত্যার বিচার মহান আল্লাহর কাছে চান বলে জানান।

এলাকাবাসী জানান, খুব শান্ত স্বভাব, সদা হাস্যোজ্জ্বল ও কর্মচঞ্চল ছিল মুন্না। কখনো কারো সাথে ঝগড়া বিবাদে জড়াননি। সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে চলতেন তিনি। এ রকম একজন উদীয়মান যুবককে হারিয়ে এলাকাবাসী শোকের সাগরে ভাসছে।

পুলিশের অবিশ্বাস্য বর্বরতা কোন আইন শৃংখলা রক্ষা কারী বাহিনীর কাজ হতে পারেনা। যে দরিদ্র কৃষকের ট্যাক্সের টাকায় পুলিশের বেতন দেওয়া হয় তাদের প্রতি পুলিশের এমন আচরন.......................

বিষয়: রাজনীতি

১১৭৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File