আমি যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাই না
লিখেছেন লিখেছেন হিমেল তানভীর ২৩ মার্চ, ২০১৩, ০৮:২৪:২২ সকাল
যুদ্ধাপরাধী তথা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নামে যা হচ্ছে আমার কাছে তা এক প্রহসন ব্যতীত অন্য কিছু নয়। স্বাধীনতার ৪২ বছর পরে বিচারকে কেন্দ্র করে দেশে যে অবস্থা বিরাজ করছে তা সত্যিই কি কারো কাছে কাম্য? আমার মনে হয়না। আমাদের আশা ছিল বাংলাদেশ এতদিনে মধ্যআয়ের দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা তুলে দারাবে কিন্তু আমরা এখনো উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিত। এবার আসা যাক মানবতা অপরাধী বিচার কারা চায় সে প্রসঙ্গে।
বিচার কে চাই এবং কেনো চাই
প্রথমে আসি শাহবাগ তথা গণজাগরণ মঞ্চ প্রসঙ্গে, একে আমি প্রথমে দু ভাগে ভাগ করি- ১।গনজাগরন ২।মঞ্চ
১।গনজাগরনঃ নিঃসন্দেহে এরা বিচার চায়। এরা যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করে হলেও এর বিচার চায়।
২।মঞ্চঃ এখানেই আমার দুটো কথা আছে। মঞ্চে যারা নেতৃ্ত্ব দিচ্ছেন তারাও বিচার চায় এতে কোন সন্দেহ নাই কিন্তু কথা হচ্ছে কেনো চায়? ডঃ ইমরান এইস সরকার তিনি কে বা কেমন ব্লগার তা আমার জানতে ইচ্ছে করে! যায়হোক এরা প্রথম থেকেই বিচার চেয়ে আসছে। তাদের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে নেটজগতে শিবিরকে আচ্ছা মত ধোলাই দেওয়া। তারপরেও এদের ধন্যবাদ প্রাপ্য।
মহাজোট এবং জোট
প্রথমে বলি মহাজোটের কথা, একেও দু’ভাগে ভাগ করি- ১। বামদল ২।আওয়ামীলীগ
১। বামদলঃ এরা অপরাধীর বিচার চায় কিন্তু সাথে আরো কিছু চায়। এরা জামায়াত ইসলামীরও বিচার চায় সাথে এদের প্রতিষ্ঠানেরও। এদের আসলে যতো চুলকানি সব জামায়াত খেদানোর চুলকানি। বিচার যদি চাও তবে শুধু একদলের আসামীদের কেন?
২।আওয়ামীলীগঃ হাহাহা এরাই একমাত্র দল যাদের রাজনীতির শুরু মুক্তিযুদ্ধ এবং শেষ মুক্তিযুদ্ধ । এরাই একমাত্র দল যারা সবকিছু নিয়ে রাজনীতি করতে ভালবাসে এমনকি মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রাজনীতি করতেও এদের বিবেকে একফোঁটা বাঁধেনি। গত নির্বাচনে জেতার জন্য মুক্তিযুদ্ধকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করলো এবং নির্বাচনে ব্যপকভাবে জয়লাভ করল। মেয়াদের শেষদিকে এসে যখন দেখল সরকারের দুর্নীতি (পদ্মা সেতু,হলমার্ক,ডেস্টিনি), সন্ত্রাসী(সোনার ছেলেদের দ্বারা), দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ জনগণ ত্যক্ত বিরক্ত আওয়ামীলীগ এবারো মুক্তিযুদ্ধ কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। আসল কোথাই আসা যাক, কাঁদের মোল্লার রায় নিয়ে সরকার কেমন আঁতাত করেছে তা আমরা জানি। আওয়ামীলীগ যুদ্ধাপরাধীর বিচার কখনই চাইনি এর বড় প্রমাণ ট্রাইব্যুনাল। শেখ হাসিনা জানতেন এ বিচার শুরু হোলে কেও রেহাই পাবেনা তাই তিনি কৌশলে যুদ্ধাপরাধীর পরিবর্তে মানবতাবিরোধীর বিচার শুরু করলেন। এজন্যই তিনি বলেছিলেন আমার বেয়াই রাজাকার হলেও অপরাধী নয়। কারণ তিনি জানতেন বিএনপি ক্ষমতায় আসলে এদেরও বিচার হবে। এজন্যই তিনি চেয়েছিলেন বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ করতে যাতে আরেকবার একই ইস্যুতে জয়লাভ করা যায়। কিন্তু বিধিবাম তরুণ প্রজন্ম তার এই রাজনীতি ধরে ফেলেছে।
এবার আসি জোট প্রসঙ্গে এবারো দু’ভাগে ভাগ- ১।জামায়াত ইসলামী ২।বিএনপি
১।জামায়াত ইসলামীঃ এক কথায় এরা বিচার চায়না।
২।বিএনপিঃ একমাত্র এরাই প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীর বিচার চেয়ছে। আমাকে একটি কথা বলেনতো বিএনপি কি কখনো বলেছে বিচার কোরনা, আর এদের বিচার হোলে বিএনপির ক্ষতিইবা কি? বিএনপি আসলে চেয়েছিল দেশ যেন বিশৃঙ্খল না হয়। সবাই বলে জামায়াত কে ছেড়ে দাও আমার প্রশ্ন হচ্ছে জাময়াতকে কেন ছাড়বে এরা কি নিষিদ্ধ দল? জোট যদি ভাঙতে চান জামায়াত কে নিষিদ্ধ করুণ লেঠা চূকে যায়। আমার বিশ্বাস এদের নিষিদ্ধ করলে বিএনপি খুশীই হবে। তবে হে গণতান্ত্রিক দেশে এটা কারই কাম্য নয়।
সবশেষে একটা কথাই বলতে চাই, এদের ছাড়াও বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জে লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস করে যাদের এসব বিচার নিয়ে ভাবার সময় নেই, তাঁরা শুধু চাই তিন বেলা ঠিক মত খাবার, চায় মোটা কাপড়, চায় নুণ্যতম চিকিৎসা, ছেলেমেয়েদের শিক্ষা, তাঁরা চায় স্বাভাবিক মৃত্যূর নিশ্চয়তা। আমরা কি কখণো তাদের জন্য একদিন আন্দোলন করেছি!!!!
বিষয়: বিবিধ
১২৫৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন