প্রথম আলোর জরিপ, যেসব বিষয় প্রমান করে

লিখেছেন লিখেছেন এম আর সুমন ১১ মে, ২০১৩, ০৬:৫২:১৬ সন্ধ্যা



প্রথম আলোর জরিপটি কতটা সত্য বা মিথ্যা এই নিয়ে এখন চলছে বিস্তর জল্পনা কল্পনা। এটা কোনো নতুন বিষয় নয়। দুটি কারনে এই জরিপটিতে কিতর্কিত বলার চেষ্টা করা হবে।

প্রথম কারন হচ্ছে, যে কোনো জরিপই হোক, মানুষের মনে প্রশ্ন থাকেই যে এই জরিপ প্রকৃতপক্ষে জনগণের ভিউ তুলে ধরতে পেরেছে কি না। আর দুই , আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যদি রবীন্দ্রনাথও কোনো কথা বলতেন তবে তাকেও বিতর্কিত ট্যাগ খেতে হতো।

কারন তাদের একটু একটু সমালোচনা করেন বলে, ড ইউনুস , ব্যারিস্টার রফিকুল হক, বিচারপতি হাবিবুর রহমান, কাদের সিদ্দিকি, সুশাসনের জন্য নাগরিক, এমোনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল, অধিকার, এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন, দ্যা ইকোনোমিষ্ট ইত্যাদি সবাই এখন বিতর্কিত। তথ্যগত দিক থেকেও আমার ফাঁসি চাই থেকে শুরু করে বেগম মুশতারী শফির বই , সবই বিতর্কিত।

এ দলিটির হয়তো ধারনা বিতর্কিত অথবা রাজাকার ট্যাগ লাগাতে পারলেই সাত খুন মাফ। তবে সাধারণ জনগন কোনটা বিতর্কিত, আ কোনটা নয়, তা ভালই বোঝে। বোঝে বলেই জরিপের ফলাফলে তার প্রতিফলন হয়েছে।

জরীপের ফলাফলে অনেকেই ধাক্কা খেয়েছেন। এটার কারন হচ্ছে চাপাবাজি। চাপাবাজি করে হাম্বাদের অনেকেই বলে থাকেন, আর আওয়ামী সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানো যাবে না। আজ যেমন শেখ হাসিনা নিজেই বললেন, যেহেতু ৪৮ ঘন্টায় সরকারের পতন হয়নি, সেহেতু খালেদা জিয়া হেরে গেছেন, আর তিনি নিজে জিতে গেছেন। কি খুশির কথা। মজায় অনেকেরই মিষ্টি খাওয়া উচিত। যে দল এভাবে খুশির উপলক্ষ তৈরি করতে পারে, তাদের জন্য প্রথম আলোর জরিপ যে দুঃখজনক হবে , তা বলাই বাহুল্য।

হেফাজতে ইসলাম যে ধাক্কা দেয়ার তা দিয়ে দিয়েছে। এটুকু আওয়ামী মগজে না ঢুকলে আমি বুঝিয়ে দিতে রাজি আছি।

আজ সরকারের মাথায় গনহত্যার খড়গ্। সেটা কতটা সত্য বা মিথ্যা তাই প্রমানে ব্যস্ত সরকার। একবার পুশিশের ডিআইজি, একবার বিজিবি প্রধান, একবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, একবার তথ্যমন্ত্রী বিবৃতি দিয়েও সুবিধা করতে না পেরে, ঘটনার ৭ দিনের মাথায় আসলো প্রেস নোট। \nআর বাংলাদেশের হলুদ মিডিয়া একটি ঘটনার ৭ দিন পরে দেয়া প্রেস নোটও যেভাবে গোগ্রাসে গিললো, তাতে কেন জানি আমাদের ম্যাঙ্গো পিপলের লজ্জা লজ্জা লাগতে শুরু করলো।

যাই হোক, এই প্রসঙ্গে যেতে চাইনি। প্রসঙ্গ হচ্ছে প্রথম আলো ও তার জরিপ। কয়েকটি বিষয় চিন্তা করে দেখুন। প্রথম আলো তো কোনো ভাবেই বিএনপি বান্ধব না। বিএনপির লোকজন তো প্রথম আলোকে আদর করে জনকন্ঠের আলো ডাকা শুরু করেছে।

সেই প্রথম আলো যদি একটি নিউজ দেয়, তা বিএনপির পক্ষে ইনটেনশনাললি দেয়ার কোনো কারনই থাকতে পারে না। যে বিষয়গুলোতে জরিপ করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে তত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে যে দেশের মানুষের অবস্থান তা মনে হয় আওয়ামী লীগের হাতে গোনা কয়েকজন সুবিধাভোগী নেতা ছাড়া আর সবাই জানতো। সুতরাং এটা নতুন কিছু না। নতুন যে কথাটিতে আওয়ামী অনেকের মাথায় বাজ পড়ার কথা, তা হচ্ছে গনজাগরণের সমর্থন নিয়ে। সমর্থন করে ২৫ শতাংশ, যেখানে সমর্থন করে না ৫৮ শতাংশ।

অথচ এই গনজাগরণ নিয়ে অনেক আশা করেছিলো ক্ষমতাসীনরা। তাদের ধারনা ছিলো যেএই গনজাগরণ একদিন তাদের নির্বাচনি বৈতরনী পার করতে সাহায্য করবে। ধরে নিলাম কথা সত্য। তাহলে তাদের ২৫ শতাংশ সাহায্যের জন্য সমর্থন হারাতে হবে ৫৮ শতাংশ মানুষের। আবার প্রতি পাঁচ জনে একজন নাকি গনজাগরণের নামই শোনেনি।

এটা কমন সেন্সেও বলে যে একেবারে প্রত্যন্ত এলাকায় একজন ভোটার শাহবাগের আন্দোলন দেখে ভোট দিবে, এটা অসম্ভব। বিষয়টি ম্যাঙ্গো পিপল বুঝলেও সরকারের ও তার চারপাশের ব্যুহ ভেদ করে বোধহয় সেই মেসেজ ঢুকতে পারেনি। তাই তারা আবারো এই জরিপকে বিতর্কিত বলতে উঠেপড়ে লাগবে এটাই স্বাভাবিক।

বিষয়: বিবিধ

১০০১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File