কোরআন পড়ি জীবন গড়ি

লিখেছেন লিখেছেন সুহৃদ আকবর ১১ নভেম্বর, ২০১৫, ০১:২২:৩৫ দুপুর



আজকাল আমরা মুসলমান ঘরের সন্তানরা কত কিছু পড়ি, বিশ্বের সেরা চলচ্চিত্রগুলো দেখি, কত কি নিয়ে যে গবেষণা করছি তার হিসাব নেই কিন্তু মাত্র একটিবারের জন্য কোরআনের পৃষ্ঠা উল্টিয়ে দেখি না। বন্ধুকে বুকে জড়িয়ে ধরি অথচ কোরআনের গন্ধ শুঁকে বুকে জড়িয়ে ধরি না। আপসোস আমাদের জন্য। একমাত্র পবিত্র কুরআনের আলোকেই (আমাদের) মানুষের জীবন আলোকময় হতে পারে। কোরআনের ছোঁয়ায় গোলাপের মতো প্রস্ফূটিত হতে পারে আমাদের জীবন। পরশ পাথরের স্পর্শে যেমন সবকিছু সোনা হয়ে যায়। তেমনি কোরআনের ছোঁয়ায় আমাদের জীবন সফল হতে পারে। যেমন তৎকালীন আরবের বর্বর লোকেরা কোরআনের ছোঁয়াতেই সোনার মানুষে পরিণত হয়েছিলেন। সাহাবায়ে কেরাম জীবনের সকল েেত্র কোরআনের অনুশীলন করেছেন।

তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে গুগলের কল্যাণে গোটা পৃথিবীটাই এখন আমাদের হাতের মুঠোয় এসে গেছে। যেকোনো বিষয়ের নাম লিখে গুগলে চার্জ দিলেই তার আদ্যাপান্ত বেরিয়ে আসে। গুগল এক আশ্চর্য রকম চার্জ ইঞ্জিন। শক্তিশালী তার নেটওয়ার্ক। যার ফলে গোটা পৃথিবীটাই এখন একটা গ্রামে পরিণত হয়েছে। যাকে ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ নামে অভিহিত করা হয়। গ্রামে কোনো ঘটনা ঘটলে যে রকম সহজেই সবাই জানতে পারে তেমনি পৃথিবীর সব খবর আমরা জানতে পারি। পৃথিবীর কোন দেশে ভূমিকম্প হলো অথবা হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে লোক মারা গেল মুহূর্তেই আমরা সেসব জানতে পারি। তথ্যপ্রযুক্তিতে যে যত বেশি দ বর্তমান পৃথিবীতে তার গ্রহণযোগ্যতা গুরুত্ব তত বেশি। ঘরে বসে আমরা পৃথিবীর খবর জানতে পারছি। পৃথিবীটাকে পরিচালিত করছি।

জ্ঞান বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা যেমন, পাটি গণিত, বীজ গণিত, হিসাব বিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান, জীব বিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, ধ্বনি বিজ্ঞান বিষয়ে জ্ঞান লাভের জন্য আমরা প্রতিদিন নিরন্তর সাধনা করে যাচ্ছি। এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি দিচ্ছি শুধুমাত্র বিষয়ভিত্তিক ডিগ্রি লাভের জন্য। ল্য একটাই পৃথিবীতে যাতে সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে বেঁচে থাকতে পারি। কিন্তু আমাদের সে ল্য কি বাস্তবায়ন হয়। কারণ, আমরা মূল ল্য থেকে বিমূখ হয়ে ভুল ল্য নিয়ে কাজ করছি। অথচ জ্ঞান-বিজ্ঞানের সকল বিষয় পবিত্র কোরআনের মধ্যে লিপিবদ্ধ আছে। যদি কোনো ব্যক্তি পবিত্র কোরআনকে মনোযোগ সহকারে অধ্যয়ন করে তাহলে সে দুনিয়ার সকল বিষয়ে জানতে পারবে সাথে পরকালের অনন্ত জীবন সম্পর্কে সে জানতে পারবে। তাহলেই কেবল সে তার আসল ল্য ঠিক করতে পারবে। কেউ যদি তার মূল ল্য নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয় তাহলে সে পদে পদে হোঁচড় খাবে। ইহকালের জীবন তার কাছে সংকটময় হয়ে যাবে। আর পরকালের জীবনে অবর্নণীয় দুঃখকষ্ট ভোগ করবে। যে জীবন থেকে সে কিছুতেই মুক্ত হতে পারবে না।

আমরা বর্তমানে চাকরি, ব্যবসা, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, স্ত্রী, সন্তান নিয়ে এত বেশি ব্যস্ত হয়ে গেছি যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঠিকমত আদায় করতে পারি না। চব্বিশ ঘন্টার দিনের মাঝে সবার জন্য সময় আছে সময় নেই শুধু আল্লাহর ইবাদতের জন্য। স্ত্রী, সন্তান, বন্ধুর মন ঠিকই রা করে চলছি কিন্তু আল্লাহর হক আদায় করছি না। বন্ধুকে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ঘুরতে পারছি ঠিকই কিন্তু পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার জন্য মাত্র চল্লিশ মিনিট সময় বের বের করতে পারি না। দুনিয়ার পড়ালেখার জন্য প্রতিদিন সাত আট ঘন্টা সময় ব্যয় করলেও পবিত্র কোরআন অধ্যয়ন করার জন্য মাত্র ত্রিশ মিনিট সময় বের করতে আমাদের কষ্ট হয়। দুনিয়ার মোহে আমরা এতটাই আবিষ্ট হয়ে পড়েছি যে আখিরাত নিয়ে ভাবার কোনো সময়ই আমাদের নেই। এ সকল গাফেল লোকদেরকে আল্লাহ তাঁয়ালা হাশরের দিনে অন্ধ করে উঠাবেন। মৃত্যু থেকে পালানোর কোনো পথ খোলা নেই জেনেও পৃথিবীতে চিরস্থায়ী হওয়ার চেষ্টায় বৃথা সময় ব্যয় করছি। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের মধ্য দিয়ে জান্নাত লাভ সম্ভব এ কথা বুঝেও শয়তানকে খুশি করে জাহান্নামের আগুনে পতঙ্গের ন্যায় ঝাপিয়ে পড়ছি।

বর্তমান পৃথিবী চরম এক কান্তিকাল অতিক্রম করছে। চারিদিকে হত্যা, রাহাজানি, লুন্ঠন, ধর্ষণ, লুটপাট আর বোমা মেরে মানুষ হত্যা। পাপে পাপে জর্জরিত পৃথিবীর শরীর। মানবতা আজ ভূলুন্ঠিত। এখানে গুটিকয়েক মতা শালী ব্যক্তির ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার। নির্যাতিতের আহাজারিতে আকাশ প্রকম্পিত হচ্ছে। পানিতে ভাসছে মানুষের পঁচা লাশ। বাতাসের সাথে মৃত মানুষের লাশের গন্ধ নাকে আসে। এমতাবস্থায় পৃথিবীর বুকে শান্তি আনয়ন করতে হলে একমাত্র কোরআনের কাছেই আমাদের ফিরে যেতে হবে। একমাত্র কোরআনই পারে এ সকল সমস্যার সামাধান দিতে। সমগ্র মানবজাতির সকল সমস্যার বিষয়ে পৃথক পৃথক আলোচনা করে সমাধান বাতলে দেওয়া আছে। কারণ, কোরআন আল্লাহর প্রেরিত বাণী। যা আল্লাহ তাঁয়ালা সমগ্র মানবজাতির সংবিধান রূপে রসূল মুহাম্মাদ (সা.) এর উপর অবতীর্ণ করেছেন। যাতে মানুষ দুনিয়ার বুকে ভালোভাবে জীবন পরিচালনা করতে পারে পরকালের অনন্ত জীবনে মুক্তি পেতে পারে। পরকালীন জীবনের সফলতাই হলো আসল সফলতা। যা কোরআন অধ্যয়ন করার মধ্য দিয়েই কেবল অর্জিত হতে পারে। আসুন, কোরআন পড়ি জীবন গড়ি।

01820147654



বিষয়: বিবিধ

১২৬৯ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

349378
১১ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:৫৮
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামুআ'লাইকুম ।

সুন্দর শ্বাশত আহবান! আল্লাহ আমাদের কোরআনের পথে রাখুন! আমীন।
লিখাটি দুবার এসেছে!
শুকরিয়া।
349383
১১ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:১৩
সুহৃদ আকবর লিখেছেন : ওআলাইকুম সালাম। ধন্যবাদ আপনাকে। আপনি যে কষ্ট করে আমার লেখা পডেছেন তার জন্য। ভালো থাকবেন ।আমার জন্য দোয়া করবেন।
349484
১২ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:২১
মোবারক লিখেছেন : থেমে থেমে লেখাটা পড়েছি, আমি যে কত বড় গুনাগার এই লেখা পড়ে আরেক বার স্বরণে এলো।
কবে যে আমি হেদায়েত হবো।
১৫ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:৪০
290296
সুহৃদ আকবর লিখেছেন : গুনাহগার যখন অপরাধের কথা স্বীকার করে আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করে তখন গুনাহ আর গুনাহ থাকে না। গুনাহগুলো তখন নেকিতে পরিণত হয়। তবে শর্ত হলো গুনাহর পথ থেকে ফিরে আসা। আপনার অনুভূতির জন্য ধন্যবাদ মোবারক ভাই।আমার জন্য দোয়া করবেন।
349506
১২ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৪৩
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : মাশাআল্লাহ! ভাল লেগেছে পোস্টটি..ধন্যবাদ..
১৫ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:৪০
290297
সুহৃদ আকবর লিখেছেন : ধন্যবাদ মাছুম ভাইয়া

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File