এ দেশ কি নাস্তিকদের আবাসভূমি নাকি মুসলমানদের অভয়াশ্রম হবে

লিখেছেন লিখেছেন সুহৃদ আকবর ০৭ মে, ২০১৩, ১০:৩৭:২২ রাত

মনটা খুব খারাপ। এমন অবস্থায় কারো মন ভালো থাকে না; থাকতে পারে না। আমারও তাই মন ভালো নেই। অন্তরে রক্তক্ষরণ হচ্ছে অবিরত। চোখে অশ্রু ছলছল করছে। মনটা থেকে থেকে হু হু করে কেঁদে উঠছে। সকালে অমার মোবাইলে প্রায় দশ বারোটা কল আসে। রাত বেশি করে ঘুমানোতেই কারো মোবাইলই আর রিসিভ করতে পারিনি। আজ রাতে ঢাকার শাপলা চত্বরে এমন একটি ঘটনা সংঘটিত হয় যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। যা জালিওয়ানাবাগ হত্যাকান্ড ও স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ওপারেশন সার্চ লাইটকেও হার মানিয়েছে। ওপারেশন সার্চ লাইট ছিল পুরো ঢাকা শহরে আর গতরাতের ঘটনা হয়েছে এক জায়গায়। এ পর্যন্ত তিন হাজার মৃতের খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে প্রায় দশ হাজার। রাত চারটার সময় এই হত্যাকান্ড চালানো হয়। এর আগে মিডিয়ার সকল কর্মীকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এ যেন আরেক বাংলাদেশের রূপ দেখলো বাংলাদেশের মানুষ। এ কি স্বাধীন সার্বভৌম কোনো রাষ্ট্র। ডাকিনী শেখ হাসিনা সরকারের এ হিং¯্র মূর্তি জনগণ আর কত দেখবে কে জানে। আরেকটা মজার ব্যাপার হলো এত মানুষ হত্যা করা হলো কিন্তু কোনো মিডিয়াতেই খবর আসলো না। সব টেলিভিশন এবং সংবাদপত্র নিহতের সংখ্যা আটজন বলে প্রচার করছে। কী নির্লজ্জ মিথ্যাচার। পৃথিবীর কোনো মিডিয়ায় খবর না আসলেও খোদা তাঁয়ালার কুদরতি ক্যামেরায় সব ধারণ করা হয়েছে। আল্লাহ নিশ্চয়ই এর সঠিক বিচার করবেন।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে এ দেশে ইসলাম থাকবে না। দাঁড়ি-টুপি থাকবে না। মুসলমান থাকবে না। কুরআন-হাদীস থাকবে না। এ দেশ হবে নাস্তিকদের অভয়াশ্রম। সারা দেশ অশ্লিলতা-বেহায়াপনায় ডুবে যাবে। কিন্তু আসল কথা, আসল ব্যাপার তার উল্টো। আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থেকে যতটুকু বলতে পারি। এ বয়সে অনেক বই পড়ার, ইতিহাস ঘাটাঘাটি করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। মহান আল্লাহ আমাকে তৌফিক দিয়েছেন। আমার বিশ্লেষন হচ্ছে কিছুটা ব্যতিক্রম তা হলো- যে দেশে বা যে ভূখন্ডে মুসলমানদের রক্ত ঝরেছে যে দেশে ইসলামী বিপ্লব হয়েছে। আরবের জাহিলী সমাজ ব্যবস্থা থেকে আজ পর্যন্ত বদর, ওহুদ, খন্দক, তায়েফ, ফোরাতের তীরের কারবালার ভূখন্ড তার স্বাক্ষী হিসেবে এখনো দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর পৃথিবীর দিকে দিকে বসনিয়া, চেচনিয়া, ইরান, তুরস্ক,মিশর তার জ্বলন্ত উদাহরণ হিসেবে অমােেদর সামনে রয়েছে। আমাদের এই বাংলাদেশেও স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে পরে অনেক আলেম মুমিন মুসলমানের রক্ত ঝরেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার চত্বর। ঢাকার রাজপথের ২৮ অক্টোবর। ২৮ ফেব্রুয়ারী। রক্তাক্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল। এভাবে দেশের প্রতিটি জনপদেই ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের রক্তে সিক্ত হয়ে আছে।

তাই মুমিনদেরকে এসব গুলি-হত্যা-গুমের ভয় দেখিয়ে কোনোই লাভ হবে না। তারা হাসি মুখে মরতে জানে। তাদের কোনো পিছুটান নেই। তারা তাদের জীবনের চাইতে-স্ত্রী-সন্তানদের চাইতেও মহান আল্লাহপাককে বেশি ভালোবাসেন। পরকালের প্রতি যাদের দৃঢ় ঈমান রয়েছে। মৃত্যুর পরে যাদের জন্য বেহেস্তের ওয়াদা রয়েছে।

এমতাবস্থায় আমাদের উচিত। বাতিলের সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবিলায় ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়া। শুধুমাত্র মারামারি করাই যুদ্ধ নয়। তার জন্য মজবুত ঈমান, ধৈর্য, সাহসিকতা, কাজ চালিয়ে যেতে হবে। কোনো অবস্থায়ই হতাশ হওয়া যাবে না। আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। যদি আমলা সত্যিকার মুমিন হতে পারি। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামী রাষ্ট্রের বাংলাদেশ। এ দেশ হবে মুসলমানদের অভয়াশ্রম। আল্লাহ অমাদের অভিভাবক। মহান আল্লাহ যাদের অভিভাবক তাদের কোনো ভয় থাকতে পারে না। পৃথিবীর কোনো শক্তিই তাদেরকে তাদের পথ থেকে টলাতে পারে না। তাদের লক্ষ্য থেকে বিচ্যূত করতে পারে না। মহান আল্লাহ অমাদেরকে তার দ্বীনের জন্য কবুল করুন।

বিষয়: বিবিধ

১৭৯৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File