সে অধম বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন?
লিখেছেন লিখেছেন নির্বোধ১২৩ ২৪ মার্চ, ২০১৩, ০৯:৫৫:৪২ সকাল
লেখক পাঠক মন্তব্যকারীদের আন্তরীক শুভেচ্ছা ও ভালবাসা
এই লেখা দেখে কেউ যদি আমাকে কাপুরুষ বলতে চান বলুন, ছাগু বলতে চান তা ও বলুন, দালাল বলুন তাতেও আপত্তি নেই কারণ; আমি দালালী করছি নিজে বাঁচতে, অপর ভাইকে বাঁচানোর আকুতি জানাতে। দোহাই লাগে – লাগামহীণ উত্তেজনায় আর যেন কোন মায়ের বুক খালি না হয়, আর কোন বোন বিধবা না হয়, কোন সন্তান না হারায় তার বাবাকে। দেশ যেন আর কোন সংঘাতের দিকে না আগায়।
আসুন - একবার নিরীহ মানুষের কথা ভাবিঃ
আমার বিশ্বাস; যার যার অবস্থান থেকে সবাই মা মাটি ও পতাকাকে ভালবাসি। সাধারণ মানুষ রাজনীতি বুঝেনা রাজনীতির উচ্ছিষ্টে তাদের পেট চলেনা, পেটের দায়ে তাদেরকে নিরন্তন পরিশ্রম করতে হয়। অথচ রাজনৈতিক হিংসার আগুনে তারাই বেশী দগ্ধ হয়। ইদানিং দেশের চলমান সংঘাতে যে প্রাণগুলো ঝরে যাচ্ছে - তারা কিন্তু আমাদেরই কারো না কারো ভাই বাবা সন্তান। তাই আসুন - নিজের ভাই বাবা সন্তানদের হারাতে আর যেন উন্মাদনার সুযোগ তৈরী না করি। যে পশুশক্তি আজ এমন নারকীয় যজ্ঞ সংঘটিত করছে তারাও আমাদেরই রক্ত - কারো না কারো ভাই বাবা সন্তান। জগতের কোন ধর্মই মানুষ হত্যার মত অধর্মকে সমর্থন করেনা? দয়া করে সবাই একটু বুঝতে চেষ্টা করুন; আপনার আমার মত নিরীহ মানুষের আবেগ ও বিশ্বাসকে পূঁজি করে, আমাদের জিম্মি করে কারা এর ফায়দা লুটছে? একবার ভেবে দেখুন।
আমাদের ঘৃণাকে হিংসায় রূপান্তর না করিঃ
৭১ এ হানাদার বর্বর বহিনী (না'পাক' বাহিনী - যে নামটা ও মুখে আনতে ঘৃণা হয়) আমার প্রিয় মাতৃভুমিতে যে নারকীয় যজ্ঞ চালিয়েছে সেই ক্ষতই আজো প্রশমিত হয়নি। এখন দেশে কোন না'পাক বাহিনী নেই। সবাই তো এই দেশ এই মাটিরই সন্তান! সবাই আমরা ভাই ভাই। ভাই হয়ে কেন আরেক ভাইকে নিহত হওয়ার সুযোগ করে দেই আর কেনই বা নিজেকেও মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেই? না বুঝে কেন আমাদের আবেগ আর মূল্যবোধকে কিছু স্বার্থন্বেষীর কাছে বিনামূল্যে বিকিয়ে দিচ্ছি? যার ফলে ক্রমশঃই দেশ মারাত্নক সংঘাতের দিকে ধাবিত হচ্ছে? কী নির্মম খেলা - সবাই জানি; নাচিয়েদের নর্তন কুর্দনের সুবিধার জন্য কিছু লাশ চাই! বলুন - কী স্বার্থে আপনি আমি তার মাসুল দিতে যাবো?
তাই, আসুন প্রতিজ্ঞা করি - সংঘাত বাড়াতে আর কারো কথায় নাচবো না। আমাদের নাচানাচি বন্ধ হলেই তাদের ভেল্কীবাজিও ফুরিয়ে যাবে, তারা আপনাতেই ঝিমিয়ে পড়বে। কাজেই কোন প্রতিহিংসা বা শক্তি দিয়ে নয়, নিজেরা একটু বুঝতে চেষ্টা করি আর একটু সংযমী হই। তাহলেই এই কুশলী নাচিয়েদের তর্জনী নাচন ও বন্ধ হয়ে যাবে। আশা করি; হানাহানিও থেমে যাবে।
বিচার প্রক্রিয়া চলছে - একজন বিচারক প্রথমতঃ আল্লাহর কাছে দায়বদ্ধ তারপর আছে তাঁর শপথবাক্য পাঠ। প্রহসন না হলে বিচারিক প্রক্রিয়ায় যাদের যা সাজা প্রাপ্য তা তারা পাবেনই। আসুন না; আল্লাহর বিচার নিজ হাতে না করি আর জাগতিক বিচারকর্তার প্রতি আস্থা রাখি! জীবন ও মৃত্যুর মালিক যদি আল্লাহই হন - জীবন দেয়া বা হরণ করার কী সাধ্য আছে আপনার বা আমার? অধিকাংশ মানুষই ধর্মে বিশ্বাসী, স্রষ্টার বিচারের প্রতিও আস্থা রয়েছে। আর ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী; কেউ যদি ইহকালে অন্যায় ভাবে দন্ডিত হয় পরকালে তার জন্য রয়েছে উত্তম পুরস্কার। আবার অন্যায়কারী যদি কৌশলে বা প্রভাব বিস্তারে নিজেকে নির্দোষও প্রমাণ করে তার জন্যও পরকালে রয়েছে জঘন্যতম শাস্তি। সূতরাং সেই শাস্তি ও পুরস্কারদাতা দয়ালু স্রষ্টার প্রতি যেহেতু আমাদের বিশ্বাস আছে; আমরা কি নিজেদেরকে আর একটু সংযমী করতে পারি না ?
গুণীজনরা পরমত-সহিঞ্চুতার কথা বলেনঃ
আমাদের আজ পরমত-সহিঞ্চুতার ভীষন প্রয়োজন। লক্ষ লক্ষ শহীদের রক্ত আর মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে প্রাপ্ত আমাদের স্বাধীনতা এত ঠুকনো নয় বা কারো দয়ার দান নয় যে চাইলে কেউ তা বিকিয়ে দিতে পারে! দেশের এই ক্রান্তিকালে দল মত পথ ভুলে আসুন দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত হই; রক্তে রাঙা পতাকার মর্যাদা অটুট রাখি, মা মাটি ও মানুষকে ভালবাসি। নিজেদেরে মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ির নোংরা রাজনীতি পরিহার করে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটা দূর্নীতি ও শোষনমুক্ত কল্যাণকামী সমাজ উপহার দেই। অধম সবাইকে আবার সেই গুণীবাক্য স্মরণ করার আহবান জানাই।
আমাদের পাঠ নেয়ার জন্য কিছু কোট তুলে ধরছিঃ
সবাইকে আর একটু গভীরভাবে ভাবতে অনুরোধ করবো -
'কোট'গুলো থেকে আমরা কিছু শিখতে পারি কি না?
* "সে অধম বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন?"
* "কুকুরের কাজ কুকুর করেছে কামড় দিয়েছে পা'য় .......
কুকুরের পায়ে কামড় দেয়া কি মানুষের শোভা পায়"?
* নচিকেতা'র বিখ্যাত গান - It's a game থেকে উদ্ধৃত -
"বিজয়ীরা বরাবর ভগবান এখানেতে
পরাজিতরাই পাপী এখানে
রাম যদি হেরে যেতো; রামায়ন লেখা হতো
রাবণ দেবতা হতো সেখানে...."
"আজ আমার; কাল তোমার"
ভাই ও বন্ধুগণ, বিখ্যাত প্রবচনটির কথা স্মরণ করতে চাই - "আজ তোমার কষ্টে হাসলে কাল আমার কষ্টে তুমিও হাসবে" দেখুন তো - কি অকাট্যভাবে মিলে যাচ্ছে? কিছুদিন আগেও যারা ছিলেন; গুনী মানী বরেণ্য - সময়ের ব্যবধানে তারাই হয়ে পড়েছেন অতি জঘন্য। এরপরও কি হিংসা উল্লাস আর জিঘাংসা দিয়ে আমরা নিজেদের পায়ে সজোরে কুড়াল মারবো?
সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিষয়টা ভেবে দেখতে অনুরোধ করছি।
পরম দয়াময় প্রভূ আমার দেশ ও মানুষকে হেফাজত করুন।
বিষয়: রাজনীতি
১২৩১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন