ক্যান্সার নিরাময়ে যুগান্তরী আশাবাদ!
লিখেছেন লিখেছেন নির্বোধ১২৩ ০১ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৫:০৫:২৩ বিকাল
লেখক পাঠক ও শুভানুধ্যায়ী বন্ধুদের নতুন বছরের শুভেচ্ছা ও ভালবাসা জানাই। অনেকদিন পর এলাম। আশা করি সবাই ভাল আছেন। হয়তো লক্ষ্য করে থাকবেন; আমি প্রায়ই নিজের লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন সূত্র থেকে আহরিত বিজ্ঞান ভিত্তিক নিবন্ধ ও চমকপ্রদ সব তথ্য সবার সাথে শেয়ার করার মানসে এই পাতায় নিয়মিত পোস্ট দিয়ে থাকি। দুঃখিত, মাঝে নানান কারণে গত কয়েকমাস সাইটে আসতে পারি নি।
নিজেই আমি কর্কটরোগী – জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কচু পাতার পানির মত আশা-নিরাশার দ্বন্দ্বে দিন গোজরান করছি। স্বভাবতই ক্যান্সার সংক্রান্ত তথ্য ও গবেষণা/নিবন্ধ আমার দৃষ্টি কাড়ে। গণ-সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে এসব আমি পাঠক বন্ধুদের সাথে শেয়ার করি। অধুনা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ব্যাপক উন্নতির ফলে ক্যান্সারের রোগীকে আর একেবারে বিনা চিকিৎসায় মরতে হয় না বটে কিন্তু এখনো তা শতভাগ নিরাময়যোগ্য হয় উঠে নি। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক গবেষণা ও ভাষ্য আমাদের এখন সে আশার বাণী শোনাচ্ছে। তাহলে আসুন পড়ি সে ভাষ্যে কি বলে:
ক্যান্সার কোষ বদলে হয়ে যাবে শরীরের স্বাভাবিক কোষ!
গবেষকরা ক্যান্সার কোষকে স্বাভাবিক কোষে রূপান্তরের পদ্ধতি বের করতে পেরেছেন। এতে, ভবিষ্যতে ক্যান্সার চিকিৎসায় বিপ্লব দেখা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। খবর - রেডিও তেহরান।
ক্যান্সার কোষও শরীরের স্বাভাবিক কোষের মতই একটি কোষ। শরীরের স্বাভাবিক কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণটা হয় স্বাভাবিক উপায়ে কিন্তু ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি বা বিভাজন ঘটে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে। এ কথা আমরা সবাই জানি, অন্যান্য প্রাণীর মতোই মানুষের দেহও অসংখ্য ছোট ছোট কোষ দিয়ে তৈরি। এ সব কোষ নির্দিষ্ট সময় পরপর মারা যায় এবং পুরনো কোষের জায়গায় স্থান করে নেয় নতুন কোষ। কোষগুলো নিয়ন্ত্রিতভাবে এবং নিয়মমতো বিভাজিত হয়ে নতুন কোষের জন্ম দেয়।
ক্যান্সার বা কর্কটরোগের ক্ষেত্রে দেহ কোষের বিভাজন চলে অনিয়ন্ত্রিতভাবে। ফলে ত্বকের নিচে মাংসের দলা অথবা চাকা দেখা যায়। আর একেই টিউমার বলে।
সুখের কথা; মার্কিন খ্যাতনামা মেয়ো ক্লিনিকের গবেষকরা ক্যান্সার কোষকে স্বাভাবিক কোষে রূপান্তর করতে পেরেছেন। গবেষণাগারে এ জন্য স্তন এবং মুত্রথলির ক্যান্সার কোষ ব্যবহার করেছেন মেয়ো ক্লিনিকের গবেষক দলটি। এ রূপান্তর ঘটানোর জন্য কোষকলা পর্যায়ে তুলানামূলক ভাবে সহজ হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে গবেষক দলকে। আর এর মধ্য দিয়ে ক্যান্সার কোষ আবার স্বাভাবিক কোষের মতই আচরণ করতে শুরু করেছে বলে তারা দেখতে পেয়েছেন। অর্থাৎ ক্যান্সার কোষ বদলে হয়ে গেছে শরীরের স্বাভাবিক কোষ!
গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, মাইক্রো আরএনএএস দেহ কোষের বিভাজন বা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে। কোষকে পিএলএকেএইেএ৭ নামের আমিষ উৎপাদনের নির্দেশ দেয় এটি। সঠিক মাত্রায় আমিষটি উৎপাদিত হলেই বন্ধ হয়ে যায় কোষ বিভাজন।
ক্যান্সার কোষে সঠিক মাত্রায় থাকে না এ আমিষ। গবেষকরা ক্যান্সার কোষে মাইক্রো আরএনএএস ঢুকিয়ে দেন। তারপর দেখতে পান সঠিক মাত্রায় এ আমিষ উৎপাদিত হচ্ছে ক্যান্সার কোষে। একই সঙ্গে ক্যান্সার কোষের অস্বাভাবিক বিভাজনও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ন্যাচার সেল বায়োলজি’তে এ গবেষণার বিষয়বস্তু প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণাগারে মানুষের কোষে এ গবেষণা চালানো হয়েছে। ক্যান্সার চিকিৎসায় এ পদ্ধতি প্রয়োগের আগে আরো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। কিন্তু তারপরও গবেষকরা মনে করছেন, এর আগে কখনোই ক্যান্সার সারিয়ে তোলার ক্ষেত্রে এতো ব্যাপক আশাবাদ দেখা দেয়নি। গবেষণাটি সার্থক হলে আশা করা যায় মরণঘাতি ক্যান্সারকেও জয় করা সম্ভব হবে।
তথ্যসূত্র: Click this link
বিষয়: বিবিধ
১২৪৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন