গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ও শেয়ার বাজার – সরকারের দুই মরণ ফাঁদ

লিখেছেন লিখেছেন নির্বোধ১২৩ ০৪ জুলাই, ২০১৩, ১০:১৫:২৭ রাত



বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্ব অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নোবেল বিজয়ী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংক আজ হীন রাজনীতির কূট-চক্রান্তের শিকার। ব্যক্তি ড. মুহাম্মদ ইউনূস শুধু একজন ব্যক্তিই নন, তিনি একটি প্রতিষ্ঠানও বটে। বিশ্বের বুকে বাংলদেশের গৌরব এই দুই প্রতিষ্ঠানেরই আজ রিতিমত ধ্বংসের ডাক শুনতে পাচ্ছি। ব্যক্তি ড. মুহাম্মদ ইউনূস মরণশীল মানুষ, তিনি অমর নন। তাঁর বয়েস হয়েছে, প্রকৃতির নিয়মেই এক সময় তাঁকেও ধরাধাম ছেড়ে চলে যেতে হবে, এটাই প্রকৃতির শাশ্বত নিয়ম। মৃত্যুর সময় তিনি নিশ্চয়ই তাঁর কোন উত্তরসূরীকে ওই ব্যাঙ্কটি দান করে যাবেন না বা তাঁর কোন বংশধর ব্যাঙ্কটির মালিকানা দাবী করতে আসবেন না, তেমন কিছুর কারণ তো নেইই বিধানও নেই। অন্যান্য সব বানিজ্যিক ব্যাঙ্কেরই যেমন কতিপয় ‘বেনিফিশিয়ারী’ মালিক উদ্যোক্তা আছেন; ব্যক্তির মৃত্যুর পরে উত্তরাধিকারগণ তার মালিকানা পান, গ্রামীণ ব্যাংক কিন্তু তেমনটি নয়। গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক এর ৮৫ লাখ গ্রামীণ সদস্য – বিশেষতঃ সমাজের ভাগ্য বঞ্চিত গ্রামের মহিলাগণ। সরকার যখন মহিলাদের ক্ষমতায়নের নামে গাল ভরা বুলি আওড়িয়ে কেবল জাতীয় সংসদে কিছু সংরক্ষিত আসনে মহিলাদের বসিয়ে চুলোচুলি আর মুখ খিস্তির আয়জেন করেছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তখন বিশ্ব স্বীকৃত সামাজিক ব্যবসার পূঁজি সংগঠনের মাধ্যমে সামাজিক বিপ্লব ঘটিয়ে মহিলাদের সত্যিকারের ক্ষমতায়নের ব্যবস্থা করেছেন।

গ্রামীণ ব্যাঙ্ক একটা প্রতিষ্ঠান – কেউ ইচ্ছা করে এর মৃত্যু না ঘটালে তা অমর হয়েই থাকবে যুগের পর যুগ, অনন্ত কাল। অর্থনীতির এই যুগে ব্যপক কোন আর্থিক বিপর্যয় না ঘটলে গ্রামীণ ব্যাংকের মত কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হবার কোন কারণ নেই। কালের পরিক্রমায় অদূর ভবিষ্যতে বড় জোর জাতির বা প্রতিষ্ঠানের কোন বৃহত্তর কল্যাণে বা পরিচালনার সুবিধার্থে এর আকার আকৃতির পরিবর্তন হলে হতেও পারে, তাই বলে যতদিন অর্থনীতি টিকে থাকবে ততদিন আর্থিক প্রতিষ্ঠান – বিশেষতঃ গ্রামীণ ব্যাংকের মত প্রতিষ্ঠানের মরণ নেই। ব্যক্তি মালিকানাধীন অন্যান্য ব্যাঙ্ক চাইলে যে কোন সময় ব্যবসা বন্ধ করে দিতে পারে বা মালিকানা স্বত্ব বিক্রি করে দেতে পারে কিন্তু গ্রামীণ ব্যাঙ্কের তেমন কোন বিধান নেই। এর মালিক সরকার নয় জনগন। আর জনগনের সম্পদ চাইলেই কোন ব্যক্তি কিংবা রাষ্ট্র যা খুশী তা করতে পারে না। তা যেমন পারেন না ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজে তেমনি পারে না সরকারও। সরকার চাইলে সরকারের সম্পত্তি বিক্রিও করে দিতে পারে যেমন স্বাধীনতার পর এমন হাজারো সম্পদ বিক্রিও করা হয়েছে। চাইলে সরকার তার মালিকানাধীন একটা ব্যাঙ্কের বিলুপ্তিও ঘটাতে পারে। যেহেতু গ্রামীণ ব্যাঙ্কের উদ্যাক্তা ও মালিক সরকার নয় তাই জনগনের সম্পদ - এই গ্রামীণ ব্যাঙ্ক সরকার কিছু করতে চাইলে তার ফলাফল কখনো শুভ হবে না। দেশের জনগন তা কোনদিনই মেনে নিবে না। সরকারের এ জাতীয় কাজ হবে চরম আত্নঘাতি।

আজ গ্রামীণ ব্যাংকের ভবিষ্যৎ ও অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সর্ব মহলে – সরকার থেকে উদ্যোক্তা মায় আমজনাতার মধ্যে এ নিয়ে পাল্টা পাল্টি বহু কথা হচ্ছে, পক্ষে বিপক্ষে নানান আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। ব্যক্তি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কথা না হয় বাদই দিলাম কিন্তু এরকম একটা নাজুক ইস্যূ জাতি তথা সরকার বা গ্রামীণ ব্যাংক কারো জন্যই সুখকর তো নয়ই, শুভ কিছুর ইঙ্গতও বহন করে না। আমার বিশ্বাস; সরকার নেহায়ত পরশ্রীকাতরতার পরিচয় না দিয়ে যদি বিষয়টি যথার্থ প্রজ্ঞার সাথে বিবেচনা করে তা গ্রামীণ ব্যাঙ্ক দেশ জনগণ ও সরকার - সবার জন্যই কল্যাণকর হবে।

গ্রামীণ ব্যাঙ্ক নিয়ে সরকার কি করতে চাচ্ছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। ধারণা করা যায় যে; কেবল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি ব্যক্তিগত আক্রোশেই সরকার এমনটি করছে তা মোটেও নয়। সরকারী ব্যঙ্কগুলো লুটপাট হতে হতে আজ প্রায় পথে বসতে চলেছে। যখন প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ঋণ না পেয়ে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে তখন সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ব্যাঙ্কগুলোর অবস্থা আরো নাজুক করে দিচ্ছে। সরকার নিজেই চলছে ধার দেনা করে তাই আজ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মাত্র ৮৫৬ টাকার জোবড়া গ্রামের এই ব্যাংকটির উপর সরকারের এত লোভ? তার কারণ কি? সরকার হয়তো তার দেউলিয়াত্ব ঠেকাতেই এখন গ্রামীণ ব্যাংকটির বড় প্রয়োজন। ৮৫৬ টাকা এখন কত হাজার কোটি টাকা তা তো সকলেরই জানা। স্বাধীনতার পর সরকারগুলির যথেচ্ছ লুটপাট আর বিলাসী খরচ মিটাতে জাতীয়করণকৃত কত হাজার লাখো কোটি টাকার সরকারী সম্পদ সম্পত্তি বেচে দেয়া হয়েছে।

সরকার যা বুঝে যত যা ই করতে যাক না কেন সাধারণ মানুষ এত রাজনীতি বুঝে না, সাধারণ মানুষ শুধু এটুকু বুঝে - যত ঢাক ঢোলই পিটাক না কেন, কোন কালেই কোন সরকার ইচ্ছা থাকলেও গনমানুষের সত্যিকারের উপকার করতে পারেনা। কারণ রাজনৈতিক সরকারের অনেক দায় থাকে, অনেক সীমাবদ্ধতাও থাকে। সর্বত্রই সরকার বড়জোর আইন বানিয়ে উন্নয়নের নামে উন্নয়নের পথে বাঁধার সৃষ্টি করতে পারে। সত্যিকারের উন্নয়ন হয় ব্যক্তি বা গোষ্ঠির উদ্যোগেই। তারপর সরকার একসময় তা ছিনতাই করে বাহাদুরী ফলায়। আজ গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রেও সরকার তা ই করতে চাচ্ছে। এই যে জাতীয় উৎপাদনই বলুন আর প্রবৃদ্ধিই বলুন; এখানে সরাসরি সরকারের কতটুকু কুশেষ আছে? সবই তো ব্যক্তি গোষ্ঠি বা এন্টারপ্রাইজের? সরকার বড়জোর সহায়ক পলিসিটা নির্ধারণ করতে পারে। তা ও বেশীর ভাগই নানান আইনের ফ্যাকড়ায় সেগুলো সহায়ক না হয়ে বরং বাঁধা হয়েই দাঁড়ায় বেশী। সবাই জানি; সরকার যে কাজেই হাত দেয় সেটাই বিষাক্ত হয়ে যায়।? সেখানেই লুটপাট দূর্নীতি স্বজনপ্রীতি শুরু হয়ে যায়? সরকারের কাজ ব্যবসা করা নয়; রাষ্ট্র পরিচালনা করা। জনগণের উন্নতির পথের কাঁটাগুলো সরিয়ে দেওয়া।

বলা হয়ে থাকে আমরা গরীব – আমাদের মোটা সম্পদ না থাকতে পারে কিন্তু যে ‘রিসোর্স’ আছে তা ও কি সরকার ঠিক মত কাজে লাগাতে পারছে? আয়ই বলুন আর ব্যায়ই বলুন - সর্বত্রই ‘সিস্টেম লস’ ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ? তাই আজ পূঁজিবাদী সমাজের এত প্রসার, বিশ্বব্যপী জয় জয়কার। সমাজতন্ত্রের পীর খোদ রাশিয়া ও চীন আজ আগাগোড়া পূঁজিবাদের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছে। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই সরকার বড়জোর জনগন থেকে জোঁকের মতই রক্ত চুষে নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার বাহাদুরী নেয়, কেউ কেউ উন্নয়ন বা সংস্কারের নামে চরম লুটপাটেও মেতে উঠে। যখনই সরকার ব্যবসায় হাত দিচ্ছে অমনি সেটা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ৪২ বছর ধরে তার হাজারো নজির তো জনগন দেখেছে? আজ বাংলাদেশের জাতীয়করণকৃত প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পদ কি হল? কোথায় গেল? সে সব ধ্বংস কে করেছে? সেই টাকা আজ কোথায় গেছে? কাদের পেটে ঢুকেছে? কোন সরকারই কি এর জবাব দিবে?

তর্কের খাতিরে ধরেই নিলাম ডঃ ইউনূস ৫৪টি গ্রামীন প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক টাকা লুটপাট করছেন। আমি বলি; তিনি একপেটে একা খাচ্ছেন (তাও আবার ভরা পেটে) সরকার এখানে ঢুকলেই গ্রামীন প্রতিষ্ঠান সোনালী জনতা অগ্রণী বেসিক ব্যঙ্কের মত ঝাঁজড়া হয়ে যাবে। হাজার ভোখা-নাঙ্গা চেটে-পুটে খেতে হামলে পড়বে। তখন গ্রামীণের অবস্থা কী হবে ভেবে দেখুন তো? এছাড়া যে ভাবেই হোক না কেন ডঃ ইউনূস এই কনসার্ণগুলোতে যে পূঁজির সন্নিবেশ ঘটিয়েছেন তা কি সরকারের একার পক্ষে কখনোই সম্ভব ছিল? মানছি - নৈতিকতার দৃষ্টিতে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক রক্ত শোষক; তাহলে সরকার কী? সরকারের কৃষি ব্যাঙ্ক ৪২ বছরে কৃষকের ভাগ্য কতটা বদলাতে পেরেছে? অথচ আজ কৃষিব্যাঙ্ককে খুঁড়িয়ে চলতে হচ্ছে; স্টাফ কর্মচারীদের সুযোগ সুবিধাটা পর্যন্ত ঠিকমত দিতে পারছে না তো কৃষকের উপকার করবে কি ভাবে?

গ্রামীণের উপর কতটা ক্ষোভ থাকলে দেশে এতবড় পূঁজি নিয়ে বাজারে আসা একমাত্র টেলিকম খাতের গ্রামীণ ফোনের জন্য আলাদা বাড়তি করের ব্যবস্থা? কই, বাকী ৫টি কোম্পানীর জন্য তো সে ব্যবস্থা নেই? আবার তারা পূঁজি বাজারেও নেই? গ্রামীণ ফোনের উপর আরোপিত ৫% বাড়তি করের লোকসান তো পূঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদেরই লোকসান? একদিকে সরকার বিনিয়োগকারীদের কিছু মিথ্যা শান্তনা দিচ্ছে অন্যদিকে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের ডেভিডেন্ড ছিনতাই করছে? যেসব টেলিকম কোম্পানী পূঁজিবাজারের বাইরে আছে তাদের উপর সেই কর নেই কেন? এক গ্রামীণ ফোন থেকেই সরকার নানান ভাবে বছরে যে টাকা রাজস্ব আদায় করে দুই যুগ আগের জাতীয় বাজেটের প্রায় সম পরিমান। অথচ সেই গ্রামীণ কনসার্ণগুলো আজ সরকারের চক্ষুশূল? তার কারণ কি?

কৃষিপ্রধান দেশে বিএডিসি’র মত এমন একটা ‘জায়ান্ট’ প্র্রতিষ্ঠানের আজ কোন অস্তিত্ব নেই? কোথায় গেল এর হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ? বাংলাদেশ থেকে ৮০ ভাগ জাতীয় উৎপাদনের কৃষি কি বিলীন হয়ে গেছে? আদমজীর মত প্রতিষ্ঠান আমরা বিনি পয়সায় পেয়েছিলাম; সরকারের হাতের ছোঁয়ায় তার কী হয়ে গেল? স্বাধীনতার পর থেকে টিসিবি’র তুঘলকি কাজ কারবারের কথা আর না ই বললাম। এর কর্মকান্ড আলেোচনা মানে জাতির কলঙ্ক নিয়েই নাড়াচাড়া করা। বাংলাদেশ বিমানের কাহিনী তো সবারই জানা? পৃথিবীর সব দেশেই ‘হেরিটেজের’ অংশ হিসাবে রেল ও ডাক বিভাগকে শুধু টিকিয়েই রখেনি চরম যুগোপযোগী করে তা থেকে ব্যবসা বের করছে – তাকিয়ে দেখুন সরকারের হাতের ছোঁয়ায় আমাদের সেসব মৃতপ্রায় প্রতিষ্ঠানগুলোর পান্ডুর চেহারা?

গ্রামীণ ব্যাঙ্ক দরিদ্র মানুষকে শোষন করছে; শতভাগ সত্য কথা (!) কিন্তু মাসিক ১০-১৫% সুদের মহাজনী ব্যবসাটা চালু থাকলে কি ভাল হতো? স্যার ফজলে হাসান আবেদ ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসরা আসলেই রক্ত শোষন করছেন; আমি বলি তারা পয়সা বিনিয়োগ করে টাকা বানাচ্ছেন। কিন্তু গরীব মানুষের মধ্যে এই পয়সার সংস্থানটুকুই কী কোন কালের কোন সরকার করতে পেরেছিল? যেটুকু আর্থিক কর্মকান্ডের জোয়ার তাঁরা বইয়েছেন; তর্কের খাতিরে ধরেই নিলাম তারা পয়সা খরচ করে টাকা তুলে নিচ্ছেন কিন্তু ব্যক্তি এবং জাতীয় অর্থনীতিতে এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবটাও একটু ভেবে দেখবেন।

ব্যক্তি সলমান এফ. রহমানকে যতই লুটেরা বা শোষক বলি না কেন; লুটপাটই করুক তাঁর শিল্প বানিজ্যের প্রসারে সৃষ্ট জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, প্রদয়ে শুল্ক, কর, বৈদেশিক বানিজ্য তথা উন্নত স্তরের কর্ম সংস্থানে তাঁর অবদানকে ছোট করেও দেখতে পারি না। একটা গরীব দেশের সরকার আজ লাখ কোটি টাকার বাজেট কাদের কল্যাণে তৈরী করতে সক্ষম হয়? হা গ্রামীণ প্রশাসন চাইলে ‘ডিসেন্ট্রালাইজেশনে’র সুবিধার্থে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক প্রয়োজন মনে করলে রিজিয়ন ভাগ করতেও পারে কিন্তু এখানে সরকার হাত দেয়া মানেই ‘ডালমে কুছ কালা হ্যয়’। এতবড় একটা প্রতিষ্ঠানে ডঃ ইউনূস উড়ে এসে জুড়ে বসেন নি, আপন হাতে তিলে তিলে তিনি প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তুলেছেন। কাজেই তিনি এমন অযোগ্য অপটু নন যে তাঁর ব্যবস্থাপনা নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ আছে? এতবছর পরে এসে এখানে সরকারকে মাতব্বরী করতে হবে? খোদ বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের গভর্ণর স্বীকার করেছেন তাঁদের পরীক্ষা পর্যালোচনায় গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ব্যবস্থাপনায় বা নিয়মের কোথায় কোন ত্রুটি খুঁজে পাননি।

আর একটা কথা; গ্রামীণ ব্যাঙ্ক বা এর সম্পদ ডঃ ইউনূসের অর্জন এখানে সরকারের বিন্দু মাত্র কৃতিত্ব নেই, এখন সরকার এটা ছিনতাই করতে গেলে প্রশ্ন আসবেই। গ্রামীণ ব্যাঙ্ক বা এর সম্পদ ডঃ ইউনূসের অর্জন হলেও তা ব্যক্তি ইউনূসের নয় শেষ পর্যন্ত তা এর যারা মালিক; তৃণমূল গরীব মানুষ - তাদের। সরকারের তো নয়ই। এটা জনগনের সম্পদ জনগনেরই থাকবে, জনকল্যানেই থাকবে।

আমি রাজনীতি বুঝি না, কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষকও নই তবে এটুকু বুঝি যে; বর্তমান সরকারের আয়ূস্কাল আর মাত্র কয়েক মাস, তারপর যেভাবেই হোক না কেন নির্বাচন অনিবার্য। ভোটের বছর বিবেচনা করে সরকার গন সমর্থনের পক্ষে সব ধরণের পদক্ষেপই নিচ্ছে - জাতীয় বাজেটে সব শ্রেণীর লোককেই সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। আড়াই বছর ধরে আস্তাকুঁড়ে ফেলে রাখা শেয়ার বাজারকেও কিছু ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ উপহার দেয়া হচ্ছে(যদিও ভূক্তভোগীরা এর কোন উপকার পাবে তেমনটা আশা করার কোন কারণ নেই। কারণ, সব কাজির গরুই; ‘গোয়ালে নয়, কিতাবেই থাকবে)। তবে সরকারে সত্যিকারের প্রজ্ঞাবান কেউ থাকলে এই বিষয় দু’টি বিবেচনা করবেনঃ

এই সরকার আবারো ক্ষমতায় আসতে চাইলে দু’টি বড় ভোট ব্যাঙ্কের কথা আমলে আনতেই হবে। তার একটি - ৩০ লক্ষ শেয়ার বাজার বিনিয়োগকারী ও তাদের পরিজন স্বজন বন্ধু মিলিয়ে কমপক্ষে এক কোটি ভোট। অপরটি গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ৮৫ লাখ গ্রামীণ সদস্যের কমপক্ষে দেড় কোটি ভোট। অন্যান্য ইস্যূ বাদ দিলেও এই দু’টিতেই মোট আড়াই কোটি ভোটার আছে যারা কোন দল চেনেনা, তারা শুধু বুঝে কে তাদের অধিকার বঞ্চিত করেছে, কে তাদের পেটে লাত্থি মেরেছে। তারা সোচ্চার হবে কোন প্রতীক বা দলের জন্য নয়; নিজেদের অস্তিত্বের প্রশ্নেই। কাজেই বিষয়টি সরকারের বিজ্ঞ পর্ষদ বিবেচনায় রাখলে ভাল করবেন।

বিষয়: বিবিধ

১৩০৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File