উদয়ন স্কুলে ড্রেস-কোড নিয়ে শিক্ষিকার স্বেচ্ছাচারীতা
লিখেছেন লিখেছেন নির্বোধ১২৩ ২৭ মে, ২০১৩, ০৭:৪৫:২৫ সকাল
অবশেষে উদয়ন উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভাই প্রিন্সিপাল- শ্রমমন্ত্রী রাজিউদ্দীন রাজুর স্ত্রী মাহবুবা খানম কল্পনাকে অপসারন করা হয়েছে। বিশেষতঃ ক্ষমতাধর একজন মন্ত্রীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে এমন কঠোর ও তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারার জন্য বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে ধন্যবাদ। উল্লেখ্য; গত ২২ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থিত উক্ত বিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষ মাহবুবা খানম কল্পনা ‘ড্রেস-কোড’ না মানার অভিযোগে প্রায় ৫০ ছাত্রীর জামার হাতা কেটে দেন। এ নিয়ে সমাজের বিভিন্ন মহলে ও সংবাদ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে। অভিভাবকদের চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি ২৬ মে রবিবার রাত ৮ টায় এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। অভিভাবক মহল প্রিন্সিপাল উম্মে সালমা বেগমের ও অপসারণ চাচ্ছেন।
সূত্রঃ Click this link
দৈনন্দিন জীবন প্রবাহের প্রাত্যহিক দিবসে এমনিতেই জনমনে শান্তি স্বঃস্থির পরিবেশ নেই। সাভার ট্র্যাজেডির মত নির্মম হত্যাকান্ডের নির্মমতায় মানুষ যখন শোকের চাদরে আবৃত ঠিক তখনই যোগ হলো হেফাজতি আন্দোলন ও তাদের নিধনে বিতর্কীত হত্যাকান্ডের মত বেদনাদায়ক ঘটনা আর তা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা। গত ক’মাস ধরেই তো যুদ্ধাপরাধীর বিচারকে কেন্দ্র করে দেশে এক অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে পরিণতিতে একের পর এক লাশের সংখ্যেই কেবল বেড়ে চলছে। নানান ইস্যূতে অনবরতই মামলা হচ্ছে, বন্দীর সংখ্যা বাড়ছে, বিশেষ বিশেষ জনকে আবার রিমান্ডে নিয়ে শারিরীক ও মানসিক ভাবে পঙু করে দেয়ার অভিযোগও উঠছে।
দেশে হাজারো অন্যায় অনিয়মের ইস্যূ থাকতেও আপাততঃ কেবল ‘নির্বাচনের পদ্ধতি বিষয়ক আলোচনা’ নিয়েই আন্দোলন ঘোরপাক খাচ্ছে। দিন দিন ক্রমেই রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। সেই অশান্তি অস্থিরতা যে সহসাই স্তিমিত হবে তেমন আশা করার কোন কারণ এখনো পর্যন্ত প্রস্ফূটিত হয়নি। রাজনৈতিক আন্দোলন আর হরতালের পাশাপাশি চলছে পোষাক শ্রমিকদের আন্দোলন, উত্তেজনা, অস্থিরতা, ভাংচুর, জ্বালাও-পোড়াও আর সম্পদের ক্ষতি সাধন। মানুষের দৈনন্দিন জীবন, চলাফেরা, রুটি-রোজি, ব্যবসা-বানিজ্য সব কিছুই আজ অনিরাপদ অথচ প্রতিনিয়ত দেশে একটার পর একটা উস্কানীমূলক ঘটনা ঘটেই চলছে। তারই মধ্যে ‘গোদের উপর বিষ ফোঁড়া’ – উদয়ন স্কুলের ঘটনার মত বাড়তি কিছু খুচরা ইস্যূ যোগ হয়ে প্রায়শঃই মানুষের অনুভূতিকে নানান ভাবে উত্তপ্ত করে তুলছে।
কী যে অনাচার শুরু হলো দেশে! অহেতুক ঠুকনো ইস্যূতেই হিংসা বিদ্বেষ, ক্ষমতার দ্বন্দ, রাজনৈতিক সংঘাত ইত্যাদি নিয়ে দল ব্যক্তি নির্বিশেষে নিজ নিজ আদর্শ আর শক্তি প্রদর্শণের প্রতিযোগীতা চলছেই! এমনিতেই বিভেদ বিভাজন আর উস্কানীর অভাব নেই তার উপর আলেম উলামা থেকে শুরু করে শিক্ষক রাজনীতিক ছাত্র জনতা লেখক বুদ্ধিজীবি একের পর এক উস্কানীমূলক কর্মকান্ড করেই যাচ্ছেন।
সচেতন মহলের প্রশ্ন; দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান উদয়ন স্কুলের একজন শিক্ষিকা কি করে এমন গর্হিত কাজ করতে পারেন? শিক্ষকতার মহান পেশা ও মূল্যবোধের সাথে তাঁর ওই আচরণ কতটা সাজুজ্য? শিক্ষকতার মহান পেশায়ও আজ নোংরা রাজনীতির অপছায়া ঢুকে পড়েছে। তাই মাননীয় শিক্ষকদের মধ্যেও চলছে রিতিমত ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগীতা আর রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ির অপ-ক্রিয়া; ক্ষমতার প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে আপন স্বার্থ অর্জন সহ নিজ আসন পোক্ত ও নির্বিঘ্ন করা। এই মাহবুবা খানম শুধুই একজন শিক্ষক নন, আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় তাঁর বড় পরিচয় – তিনি ক্ষমতাশীন মন্ত্রীর স্ত্রী। তাই তাঁর দাপট ছিল এমন আগ্রসী যা; ক্ষমতার প্রতিটি স্তরেই দেখতে পাওয়া যায়। তাঁর চাকরীর মেয়োদ শেষ হলেও ক্ষমতার দাপটেই আবারো তিন বছরের জন্য বাড়িয়েছিলেন। অপসারিত না হলে হয়তো আমৃত্যু তাঁর চাকরী এভাবেই নবায়ন হতে থাকতো!
আজ মিডিয়ার এমন উন্নতি হয়েছে যে, মুহুর্তেই সব খবর অতি দ্রুত বারুদের মত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পরিণতিতে সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে জনমনে অশান্তির ঢেউ উঠে আর নতুন নতুন ইস্যূ জন্ম নেয়। জ্ঞান বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে মানুষের মধ্যে মানবিকতাবোধ জাগ্রত হচ্ছে তাই সারা বিশ্ব আজ শান্তির জন্য নানান রকম তরিকা ও তদবির করছে অথচ আমরা সেই সব জ্ঞান বিজ্ঞানের আলো গায়ে ফেলে নিজেদেরকেও উন্নত বলে দাবী করছি। কিন্তু মানসিকতার দীনতাকে অতিক্রম করতে পারছি না? কেন? আমরা কি পারি না আমাদের জ্ঞান ও মননকে আর একটু শানিত করতে, একটু সুপথে চালিত করতে? তার জন্য নিজ নিজ আন্তরিকতাই যথেষ্ট; আসুন - সবাই মিলে সে চেষ্টাই করি!
বিষয়: বিবিধ
১৩৫৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন