রাখে আল্লাহ মারে কে ! অলৌকিক আর কাকে বলে?

লিখেছেন লিখেছেন নির্বোধ১২৩ ১০ মে, ২০১৩, ০৭:৪৪:১৩ সন্ধ্যা





টিভির ব্রেকিং নিউজ –

‘রানা প্লাজা’ ভবন ধ্বসের ১৭ দিন পরও সন্ধান পাওয়া এক নারী শ্রমিক অক্ষত আছেন’

অবিশ্বাস্য সৌভাগ্যের খবরটি শুনে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না! সাভার রানা প্লাজা ধ্বসের ১৭ দিন পর যেসব লাশ উদ্ধার হচ্ছে সেসব এতটাই নষ্ট হয়ে গেছে যে; তা কি পুরুষ না মহিলা তা ই নির্ধারণ করা যাচ্ছিল না ঠিক তখনই সেখানে কোন জীবিত মানুষের বেঁচে থাকার সংবাদ শুধু অবিশ্বাস্যই নয় – মিরাক্যল! সত্য হলো যে; রানা প্লাজা ধ্বসের (৪০৮ ঘন্টা) পর ধ্বংসস্তোপে আটকে থাকা পোষাককর্মী ফরিদপুর রাজবাড়ির রেশমাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

জানা যায় - রানা প্লাজার ধ্বসের ১৭ দিন পর শুক্রবার উদ্ধারকর্মীরা যখন লাশের সন্ধান করছিলেন তখন দুপুর ৩টা ১০ মিনিটে সেনাবাহিনীর একজন উদ্ধারকর্মী মোয়াজ্জেম হোসেন দেখতে পান; কে যেন ছিদ্রপথে একটা পাইপ বের করে তা নাড়াচ্ছে। উদ্ধারকর্মীরা কাছে গিয়ে চিৎকার করে জানতে চাইলে রেশমা তার অস্তিত্বের কথা জানান দেন – ‘ভাই আমি জীবিত, আমাকে বাঁচান’। অবিশ্বাস্য এমন অলৌকিক ঘটনার আকস্মিকতায় উদ্ধারকর্মীরা স্তম্ভিত হয়ে যান! রানা প্লাজার বেসমেন্টের মসজিদে রেশমা এতদিন বেঁচে ছিলেন। অবশেষে বিকেল চারটা ২৮ মিনিটে উদ্ধারেকর্মীরা তাকে জীবিত ও সুস্থ্য অবস্থায় উদ্ধার করতে পেরে আল্লাহু আকবার ধ্বনীতে চারপাশ মুখরিত হয়ে উঠে।

এই ১৭ দিনে যখন এখান থেকে ১০৪২টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় তখন এই মৃত্যুপূরী থেকে যে কোন সুস্থ্য স্বাভবিক জীবিত মানুষ উদ্ধার হতে পারে তা ছিল একেবারেই অবিশ্বাস্য! এই ১৭ দিনের মধ্যে ১৫ দিনই তিনি কিছু শুকনো খাবার ও পানি খেতে পেয়েছেন। ধ্বংস স্তোপের ভিতর তিনি কার্টন জঞ্জাল সরিয়ে সরিয়ে উদ্ধার হওয়ার নানান চেষ্টা করেছেন, চিৎকার করে উদ্ধারকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করেছেন, কিন্তু প্রচন্ড শোরগোলে কেউ শুনতে পাননি। অবশেষে শুক্রবার দুপুর ৩টা ১০ মিনিটে তার সন্ধান মিলে। প্রায় এক ঘন্টার শ্বাঃসরুদ্ধকর চেষ্টার পর বিকাল ৪টা ২৮ মিনিটে উদ্ধারকর্মীরা তাকে জীবিত উদ্ধার করে সিএমএইচ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। রেশমাকে উদ্ধারের সময় সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। উপস্থিত সবাই আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

উদ্ধরের পর তাকে দ্রুত সাভার সিএসএইচ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডক্তারগণ তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। একটু সুস্থ্য হলে আলাপচারিতায় রেশমা জানান; দিন ক্ষণ তারিখ কিছুই তার মনে নেই। তিনি যে ১৭ দিন এই মৃত্যুপূরীতে বেঁচে ছিলেন তা যেন তার নিজের কাছেই বিশ্বাস্ হচ্ছিল না! তাই ১৭ দিন শুনে তিনি নিজেই অবাক হয়েছেন! জানিয়েছেন; নীচ তলাটি তেমন বেশী চাপা পড়েনি। হেঁটে হামাগুড়ি দিয়ে তিনি এখানে সেখানে যেতে পেরেছেন। কুড়িয়ে কিছু খাবার ও পানি যোগাড় করতে পেরেছেন, তা ই অল্প অল্প খেয়ে এত দিন বেচে ছিলেন।দুই দিন আগে খাবার পানি সব শেষ হয়ে গেলে তিনি বাঁচার আশা প্রায় ছেড়েই দেন।

মজার ব্যপার হলো; উদ্ধারের পর রেশমা কথা বলতে পেরেছেন, যথারীতি তার বাড়িওয়ালার বাড়ির ঠিকানা ও বোনের ফোন নম্বর বলতে পেরেছেন। সে অনুযায়ী তার বোনকে ফোন করে আনানো হয়। জানা যায়; ফরিদপুর রাজবাড়ির আনসার আলীর মেয়ে রেশমা ওখনে গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করতেন। তারা তিন বোন দুই ভাই। এমন ঘটনা পৃথিবীর জানা ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। আমরা সাহানাকে বাঁচাতে পারিনি কিন্তু রেশমকে জীবিতি উদ্ধর করতে পেরে যেন সে দায় অনেকটাই ভারমুক্ত হতে পারছি। সাহানার পারলৌকিক শান্তি কামনা করি আর রেশমার সুস্থ্য সুন্দর জীবন কামনা করি।

বিষয়: বিবিধ

১২৩৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File