দোহাই লাগে - দেশের মানুষের অভিশাপ কুড়াবেন না।
লিখেছেন লিখেছেন নির্বোধ১২৩ ০২ মে, ২০১৩, ০৯:৫১:০১ সকাল
পত্রিকায় প্রকাশ - রানা গোয়েন্দা হেফাজতে থেকেও যেভাবে গার্মেন্ট মালিকদের মার ধর করেছে আর হুঙ্কার দিয়েছে “তোরা আমার বিরুদ্ধে কথা কইতাছস বাইর হইয়া লই। তহন বুজবি। তোগো সবগুলারে দেইখা লমু। কয়দিন আটকাইয়া রাখব আমারে” তাতে প্রতীতি হয় যে; সরকার বড়জোড় গার্মেন্টস মালিকদের ফাঁসাবে আর সুকৌশলে রানাকে বাঁচিয়ে দিবে।
আটককৃত গার্মেন্টস মালিক গং এর ভাষ্য অনুযায়ী তারা রানার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছিলেন। তারা চাইলেই সেখান থেকে সরে যেতে পারছিলেন না। এ যাবত রানার যে পরিচয় পাওয়া গেছে তাতে এমনটা হলে হতেও পারে। রানার যেমন আছে অঢেল টাকার নহর তেমনি আছে খুঁটির জোর তাইতো খোদ প্রধানমন্ত্রী নিজে সংসদে সাফাই গাইতে পারেন!
“কয়দিন আটকাইয়া রাখব আমারে” বাক্যটায় তার যথেষ্ট আস্থা আছে বুঝা যায়। আর সেই আস্থা সে অর্জন করেছে বলেই এমনটা বলতে পারে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর নৈতিকতার পরিচয়ে এটা ধারণা করতে কষ্ট হয় না যে; এই পর্যন্ত রানার বিরোদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তাতে চরম শাস্তির বিধান নেই। সত্যা মিথ্য যা ই হোক, পত্রিকান্তরে প্রকাশ; রানা যে গোয়েন্দা হেফাজতে আছে সেখানেও নাকি মাসিক বড় অঙ্কের চাঁদা ঢালত। রানাকে যখন স্বাস্থ পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নেয়া হচ্ছিল; রানার স্বতঃষ্ফূর্ত চেহারা দেখে মনে হল - সে কেবল আঙ্গুলের কড়ায় দিনের হিসাব কষছে যে, এই ঝঞ্জাট কাটিয়ে তার বের হতে আর ক'দিন বাকী!
জানা যায়; আদালতের নিষেধাজ্ঞার আগে রানা বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে নগদে একুশ কোটি টাকা তুলেছে। এ জাতীয় দুর্বৃত্তদের লুটপাটের বেশীরভাগ টাকাই থাকে গুদামে বস্তা ভরা। এরা ব্যাঙ্কে ঠিক ততটুকুই রাখে যতটুকুর জন্য যথার্থ আইনী ব্যাখ্যা দিতে পারবে। অর্থাৎ আইনতঃ বৈধতা দিতে পারবে। আর তা হয়তো তাদের অর্জিত টাকার একটা ক্ষুদ্রতম অংশই মাত্র।
স্বভাবতঃই ধারণা করা যায় যে, জীবনের এতবড় বিপর্যয় এড়াতে সে কী পরিমান টাকা ঢালতে পারে। আমাদের দেশে টাকা থাকলে যেকোন অন্যায় অনাচার করেও পার পাওয়া যায়। তার উপর যদি থাকে রানার মত লুটপাট রাহাজানির অবৈধ টাকা আর রাজনৈতিক প্রভাব তাহলে তো ‘সোনায় সোহাগা’। তাকে আর পায় কে, তার টিকিটা ছোঁয় কে? পারিবারিক ভাবেই রানার পরিবার অতি সুবিধাভোগী ও ধুরন্দর প্রকৃতির। বাপ ছেলে চাচা দুলাভাইরা ভাগ-যোগ করে প্রধান ক্ষমতাশীন দলগুলোর স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা। এরা সব সরকারেরই সুবিধাভোগী পরিবার।
সূতরাং সে যদি এমনটা মনে পোষন করে আর সত্যি সত্যি তার কোন লঘু দন্ড হয় তা হলে; এটা জলের মত পরিস্কার যে ভবিষ্যতে কি হতে চলেছে। ইতোমধ্যেই নানা মুখে গুঞ্জন চলছে – রানাকে দীর্ঘ দিনের রিমান্ডে নেয়া মানেই হল; তাকে বিশেষ খাতিরে হাজতবাস করানো। যে দেশে আইনের শাসনের অভাব সেই পোড়া দেশে এমনটা কেউ ভাবতেই পারে! রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি অনুরোধ; ক্ষমতায় থাকতে এজাতীয় দুর্বৃত্তদের প্রশ্রয় দিবেন না আর বিরোধী দলে থাকতে তাদের ইস্যূ নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করবেন না। আপনাদের এমন দ্বিমুখী নীতির খেসারত হয় তো আপনাদের সন্তানদের দিতে হবে না ঠিক কিন্তু দেশটা রসাতলে যাবে। দোহাই লাগে - দেশের মানুষের অভিশাপ কুড়াবেন না।
আরো পড়ুনঃ
http://www.facebd.com/bdpratidin/2013/05/01/1106.htm
বিষয়: রাজনীতি
১১৭০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন