মানুষ মানুষের জন্যে, জীবন জীবনের জন্যেঃ অতঃপর রানার সাথে এমপি মুরাদ জংয়েরও বিচার চাই।
লিখেছেন লিখেছেন নির্বোধ১২৩ ২৯ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:৪০:৩৭ দুপুর
নমষ্যঃ ভূপেন হাজারিকা! রক্তে শিহরণ জাগনীয়া কী গান ই না তুমি গেয়ে গেছ –“মানুষ মানুষের জন্যে,
জীবন জীবনের জন্যে
একটু সহানুভূতি কী
মানুষ পেতে পারে না – ও বন্ধু?”
মরণের ওপাড় হতে আজ তুমি লুন্ঠিত মানবতার কান্না শুনতে পাচ্ছ কী? দূর্গত অসহায় মানুষের আহাজারীতে আজ বাংলার আকাশ বাতাস আর বিধাতার আরশ কেঁপে কেঁপে উঠছে। কিন্তু আমাদের পশু মন কি এতটুকু টলবে? হাঁ, আশার কথা যে; এখনো আমরা পঁচে যাইনি, সবাই হয়ে যাই নি হায়েনা ও! একজন সাহানাকে মৃত্যুকূপ থেকে বাঁচাতে উদ্ধার কর্মীদের টানা ২২ ঘন্টা জীবন মরণ যুদ্ধ শেষে যখন তারা তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলবে; ঠিক তখনই নিয়তি ভ্রুকুটি করে এক ফূঁতে সেই আশার প্রদীপটি নিভিয়ে দিল। উদ্ধার কর্মীরা আহত হয়ে কোন রকম প্রাণ বাঁচাতে ফিরে এল বটে। কিন্তু তাদের বুক ফাটা কান্না যদি দেখতে – আরো মর্মস্পর্শী একটা গানের জন্ম হতো আজ। দূর্ঘটনার ১১১ ঘন্টা পরও একজন সাহানাকে উদ্ধারের জন্য একের পর এক প্রতিবন্ধকতা ডিঙ্গিয়ে সাভারের উদ্ধার কর্মীরা এতটুকু দমে যায়নি। কিন্তু যখন সাহানাকে উদ্ধারের সব আশা মিলিয়ে গেল তখন তারা যেভাবে কেঁদেছে; কেবল কারো অতি নিকটজন হারালেই মানুষ এভাবে কাঁদতে পারে। তাই জেনে তুমি হয়তো খুশী হবে যে এদেশে এখনো ‘মানুষ’ বাস করে!
নানান সূত্রে পত্রিকান্তরে প্রকাশ –
“মুরাদ জংয়ের বাসায়ই আশ্রয়ে ছিল রানা”
সূত্রঃ http://www.amadershomoy2.com/content/2013/04/29/news0978.htm
অভিযোগ রয়েছে; এমপি মুরাদ জং আইনি হাত থেকে রক্ষা এবং আগামীতে আওয়ামী লীগের হয়ে যাতে আবারো নির্বাচন করতে পারে সে জন্যই সোহেল রানাকে র্যা বের কাছে ধরিয়ে দেয়া হয়। নিজের দোষ ঢাকতেই এই পন্থা বেছে নিয়েছেন স্থানীয় এমপি মুরাদ জং।
গোয়েন্দাদের একটি সূত্র জানিয়েছে, ভবন ধসের দিন আশুলিয়া ইনসাফ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে একটি মাইক্রোবাস যোগে স্থানীয় এমপি মুরাদ জংয়ের বাসায় নিয়ে আসা হয়। সেখানেই ৩ দিন অবস্থান করেন সোহেল রানা। কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তি তাকে বাঁচানোর চেষ্টা চালালে অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশের ফলে কেউ আর সাহস করেনি সোহেল রানাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতে। সোহেল রানা এমপি মুরাদ জংয়ের বাসায় অবস্থানের সময় তার সহযোগীদের সঙ্গে কিভাবে এ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় তা নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকও করেন। রক্ষা পাওয়ার জন্য মুরাদ জংকে মোটা অংকের টাকাও দেন সোহেল রানা। অবশেষে শুক্রবার রাতে মুরাদ জং প্রভাবশালী কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার নির্দেশে সোহেল রানাকে র্যা বের হাতে তুলে দেন। পরে র্যাশব শনিবার সকালে তাকে নিয়ে আসে। অবশ্য এর আগেই র্যা ব সোহেল রানার অবস্থান নিশ্চিত করে অভিযান চালাতে গেলে বাধার সম্মুখীন হন।
এমনটি যদি ঘটে থাকে - আওয়ামী লীগ আরো জনবিচ্ছিন্ন হতে না চাইলে অনতি বিলম্বে রানার পাপের ভাগীদার মুরাদ জংকে ও শাস্তির আওতায় আনবে। তা না হলে মানুষ এই অপরাধ কোনদিন ক্ষমা করবে না। ক্ষমতার দাপটে এক সময় যে রানা ‘ধরাকে সরা জ্ঞান’ করত আজ দেখুন – বিধাতা কেমন আপন হাতেই তার বিধান করে দিয়েছেন!
আমাদের দেশে ক্ষমতাশীন দলগুলো অতীতেও এমন বহু ঘটনা ঘটিয়েছে। মূল ঘটনাকে আড়াল করে দলীয় ব্যক্তিকে বাঁচিয়ে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে ঘুরিয়ে দিতে সব সময়ই লোক দেখানো নাটক "উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে" চাপিয়ে দিয়ে অনেক প্রহসনের বিচারও করেছে। এসব নাটক জনগন বুঝলেও কিছুই করার ছিলনা। এখন ক্রমে সময় বদলাচ্ছে - প্রযুক্তির কল্যাণে সাধারণ মানুষ এখন একে অন্যের খুব কাছে চলে এসেছে। ফোরাম বিহীন সাধারণ মানুষ এখন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ ও সংবাদ মিডিয়ায় মনের ক্ষোভটা আর দশজন সমঝদার সচেতন বন্ধুর সাথে শেয়ার করতে পারছে। এরই ধারাবাহিকতায় "শাহবাগের আন্দোলন" দানা বেঁধেছে। ওখানে স্বার্থকতা যা ই থাক না কেন; সাধারণ মানুষকে তো নাড়া দিতে পেরেছে? অতীতে যে তাও করা যেতো না?
এভাবেই মানুষ ক্রমে সচেতন হবে আর ভন্ডদের মুখোস উন্মোচিত হতে থাকবে। কাজেই ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা বিবেচনা করে আসুন আমরা সমাজ বিবর্তনের এই ধারাকে এগিয়ে নেই। ক্রমে আরো সচেতন হই - মনের ভিতরকার সুপ্ত মানুষটিকে এভাবেই খূঁচিয়ে খূঁচিয়ে জাগিয়ে তুলি!
মানবতা আজ বিপন্ন। যে ‘হাবিয়া দোজখ’ পাড়ি দিয়ে এখনো যে মানুষগুলো মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে; সবাই মিলে আসুন তাদের জন্য কিছু করি। মনে রাখবেন, দূর্গত মানুষদের সেবার নামে ইতোমধ্যে বহু ব্যক্তি সংস্থা ও গ্রুপ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। মানুষের আবেগকে পূঁজি করে এরা নানান ফন্দি ফিকির করে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে। আসুন এদের থেকে সাবধান থাকি, এদের প্রতিহত করি। যে যা পরি যেন সঠিক উপায়ে সঠিক সংস্থার মাধ্যমে দেই আপনার আমার সেই প্রচেষ্টা যাতে দূর্বৃত্তের হাত বাঁচিয়ে দূর্গত মানুষের সত্যিকারের উপকারে আসে
বিষয়: বিবিধ
১৪৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন