সাভার ট্রেজেডি বনাম কলুর ছেলে রানা

লিখেছেন লিখেছেন নির্বোধ১২৩ ২৫ এপ্রিল, ২০১৩, ০৪:৫৫:০০ রাত



মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আপনি যথার্থই বলেছেন(!)– “কিছু হরতাল সমর্থক ভবনটির ফাটল ধরা দেয়ালের বিভিন্ন স্তম্ভ এবং গেট ধরে নাড়াচাড়া করেছে; ভবনটি ধসে পড়ার পেছনে সেটাও একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে।“ (সূত্র: বিবিসি) http://www.newsevent24.com/2013/04/24/%E0%A6%AD%E0%A6%AC%E0%A6%A8-%E0%A6%A7%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%B9%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5

কলুর ছেলে রানাকে বাঁচান দেশের কল্যান না হলেও দলের কল্যান হবে! কতগুলো গার্মেন্টসকর্মী মরেছে, ওরা তো মানুষ নয়! ওদের কোন নিরাপত্তার দরকার নেই, ওরা জন্মেই তো শেয়াল কুকুরের মত মরতে? বরং রানার মত কর্মী বেঁচে থাকলে আপনারা বারবার ক্ষমতায় আসতে পারবেন।

অসহায় আমজনতার মনে একটি কথাই ঘুরে ফিরে আসছে – এটা কি শ্রেফ দূর্ঘটনা না কি নরমেধযজ্ঞ? মৃত্যুর মিছিলে আজ যারা নাম লিখেয়েছে সেই হতভাগাদের নিয়ে যে আরো কত নাটক রচনা হবে! তদন্ত কমিটি হবে, উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে একটা ছেলে ভুলানো মামলাও হবে এবং কলুর ছেলে রানার মত নিবেদিত কর্মী স্বাভাবিক জীবন যাপন করবে, সম্পদের পাহাড় গড়বে এবং যথারীতি আবারো এমন অনেক দশতলা দালান বানাবে।

সূত্রান্তরে প্রকাশঃ “কলুর ছেলে সোহেল রানা। সাভারের এক সময়ের যুবলীগ নেতা। ক্ষমতার দাপটে হয়েছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। তার দখলবাজির হাত থেকে রেহাই পাননি সংখ্যালঘুরাও। গতকাল যে ভবনটি ধসে পড়ে, তার মধ্যেও এক সংখ্যালঘুর সম্পত্তি রয়েছে। এক সময়ে এই সোহেল রানা তার বাবার তেলের ঘানিতে কাজ করতেন। বোতলে ভরে সরিষার তেল বিক্রি করতেন হেঁটে হেঁটে।সোহেল রানার বাবার নাম আবদুল খালেক। সবাই তাকে খালেক কলু বলেই চিনতেন। বাড়ি সাভারের বাজার রোডে। বাড়িতে গরুর ঘানিতে তেল বানাতেন আবদুল খালেক। স্থানীয় অধরচন্দ্র হাইস্কুল থেকে নবম শ্রেণী পাস করেছেন রানা। এরপর অভাবের তাড়নায় তার আর লেখাপড়া হয়নি। তাদের বাড়িটিকে এখনো কলুর বাড়ি হিসেবেই জানেন স্থানীয়রা।

এই সোহেল রানাই রাজনীতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। প্রথমে একটি তেল তৈরির মেশিন বসান। গরুর ঘানি থেকে উন্নতি হয় মেশিনে। নাম দেন রানা অয়েল মিল। গোলাপ ফুল মার্কা নামের সেই সরিষার তেল সরবরাহ করা হয় রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায়। সেই রানা আজ পৌঁছেছেন সমাজের উচ্চপর্যায়ে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় তিনি থোড়াই কেয়ার করতেন স্থানীয় প্রশাসনকে। ১৯৯৮ সালের ঘটনা। তখনো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। এই সোহেল রানা তখন দখল করেন স্থানীয় রবীন্দ্রনাথ সাহার জমি। সেখানে ডোবার ওপরে রানা প্লাজা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয় ওই বছরই। রবীন্দ্রনাথ সাহা আদালতে মামলা করলেও সে মামলা বেশিদূর এগোয়নি। একপর্যায়ে পাগল হয়ে যান রবীন্দ্রনাথ সাহা। ২০০৬ সালে পৌরসভা থেকে ছয় তলা ভবনের অনুমোদন নেয়া হয়। ২০০৭ সালের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে রবীন্দ্রনাথ পাগলা আবার মাঠে নামলে র্যাোব-৪-এর কর্মকর্তা কমান্ডার আরিফের কারণে তিনি আবার পিছু হটেন বলে স্থানীয় সূত্র জানায়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সাভারের অসংখ্য মানুষের জমি তিনি দখল করেছেন বলে জানা যায়। স্থানীয় প্রশাসন ছিল তার কাছে জিম্মি। তার ইশারায় সাভারে অনেক কিছুই ঘটত। গতকাল হরতালকারীদের শায়েস্তা করতেই তার নির্দেশে গার্মেন্টগুলো খোলা রাখা হয়। এলাকায় তার রয়েছে বিশাল বাহিনী। এই বাহিনী সাভারের বেশির ভাগ অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করছে বলে জানা যায়। গতকাল ভবন ধসের সময় তিনি নিজেও আটকা পড়েছিলেন। দুপুর ১২ টার দিকে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ। ধারণা করা হচ্ছে প্রশাসনের সহায়তায় তিনি অজ্ঞাত কোথাও গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।“

মাননীয় স্বরাস্ট্রমন্ত্রী আপনি জনগনকে আশ্বস্থ করেছেন; তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নিবেন। অতীতে যেমন দেখেছি, এদেশে সব দূর্ঘটনার পরই ঘটা করে তদন্ত কমিটি হয় এবং একসময় সব উত্তাপ থেমে গেলে যথারীতি সব কিছুই থেমে যায়। এ ক্ষেত্রে আশা করি তেমনটি হবে না। নয় তো জনগন বুঝবে; আপনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন দূর্গতদের সাহায্য করতে নয় বরং দলীয় কর্মীর শুভার্থী হয়ে জনগনকে বোকা বানাতে।



বিষয়: বিবিধ

১১২২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File