জামায়াতে ইসলামী বারবার নিষিদ্ধ হলেও নির্মূল করা সম্ভব হয়নি...
লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ১৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪২:১৪ রাত
এই উপমহাদেশে জামায়াতে ইসলামী একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। এটি অনেকের কাছে যেমন ভালবাসার আবার অনেকের কাছে সমালোচনারও। জামায়াতে ইসলামী শুধুই একটি রাজনৈতিক দল নয়। এটি কেবল সামাজিক প্রতিষ্ঠানও নয়। এটি একটি পূর্ণাংগ ইসলামী আন্দোলন। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রকে আল্লাহর বিধানের আলোকে গড়ে তোলার জন্য চার দফা কর্মসূচীর ভিত্তিতে কাজ করছে জামায়াতে ইসলামী।
জামায়াতে ইসলামী গঠন
১৯৪১ সনের ২৬ আগস্ট বৃটিশ শাসিত দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশের লাহোর সিটিতে গঠিত হয় জামায়াতে ইসলামী। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন ৭৫ জন। সাইয়েদ আবুল আ‘লা মওদূদী আমীরে জামায়াত নির্বাচিত হন।
প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণের একাংশে সাইয়েদ আবুল আ‘লা মওদূদী বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীতে যাঁরা যোগদান করবেন তাঁদেরকে এই কথা ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে যে, জামায়াতে ইসলামীর সামনে যেই কাজ রয়েছে তা কোন সাধারণ কাজ নয়। দুনিয়ার গোটা ব্যবস্থা তাঁদেরকে পাল্টে দিতে হবে। দুনিয়ার নীতি, নৈতিকতা, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, সভ্যতা-সংস্কৃতি সবকিছু পরিবর্তন করে দিতে হবে। দুনিয়ায় আল্লাহদ্রোহিতার ওপর যেই ব্যবস্থা কায়েম রয়েছে তা পরিবর্তন করে আল্লাহর আনুগত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’
কাদিয়ানীদেরকে অমুসলিম ঘোষণার আন্দোলনের ইস্যুতে জামায়াতে ইসলমীকে প্রথম নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯৫৮ সালেও সামরিক আইনে জামায়াতে ইসলামী ৪৫ মাস নিষিদ্ধ ছিলো।
১৯৬৪ সালের ৬ই জানুয়ারী জামায়াতে ইসলামীকে দ্বিতীয় বার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আল্লাহর অনুগ্রহে তার এ পদক্ষেপও জামায়াতকে খতম করতে সক্ষম হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট জামায়াতের নিষিদ্ধকরণের নিদের্শকে বাতিল ঘোষণা করে।
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ
একাত্তরের ১৬ই ডিসেম্বর যে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল। দেশের স্বাধীন সত্তাকে জামায়াত মেনে নিয়েই রাজনৈতিক ময়দানে কাজ করছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশে ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার সংগ্রাম করছে এবং করতে থাকবে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণের জন্যেও জামায়াত দৃঢ়সংকল্প।
১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের যে সংবিধান রচিত হয় তার অধীনে ইসলামের নামে দল গঠন ও ইসলামী আন্দােলন ও তৎপরতা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও নিষিদ্ধ হয়। ইসলামের জাতীয় শ্লোগান “আল্লাহু আকবর’ শ্লোগান নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে জামায়াত তার কার্যক্রম গোপনে পরিচালনা শুরু করে। ভারপ্রাপ্ত আমির ছিলেন আব্বাস আলী খান।
আবারো প্রকাশ্যে রাজনীতি
৭৫ এর পটপরিবর্তনের পর জামায়াত আবারো প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন নির্বাসনে থাকা অধ্যাপক গোলাম আযম দেশে ফিরে আসেন। ১৯৭৯ সালে এক সাধারণ সভায় জামায়াত পুনরায় প্রকাশ্যে কাজ করার ঘোষণা দেয়। ১৯৮০ সালে প্রথমবারের মত বায়তুল মোকারমের সামনে জামায়াতের সভা হয়। প্রকাশ্যে এটাই ছিল স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম সম্মেলন।
মূলত ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতি নির্যাতনের স্টিমরোলার চলছে। এরপরও শহীদদের রক্তাক্ত কাফেলা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলন থেমে নেই। বারবার নিষিদ্ধ করে শহীদি কাফেলাকে নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। আল্লাহ না চাইলে এ কাফেলার অগ্রযাত্রা থামবার নয় ইনশাআল্লাহ।
বিষয়: বিবিধ
৭২৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
লেখাটা ছিল,কে, এম, হাসান।
মন্তব্য করতে লগইন করুন