পবিত্র মাহে রমজানের বিশেষ উপহার! অকল্যাণকর মন্দ অভ্যাস ত্যাগ!
লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ১৬ জুন, ২০১৬, ১১:৫৫:৩১ সকাল
আজ ১০ রমজান। রমজানুল মোবারকের রহমতের ১০ দিন শেষ হয়ে যাবে আজকেই, তারপর শুরু হবে মাগফেরাতের ১০দিন এবং সবশেষ নাজাতের ১০দিনের শুরু থেকে পুণ্যের মৌসুম রমজানের বিদায়ের সুর বেজে উঠবে কয়েকদিন পর থেকেই। এভাবেই পুরো হবে সংযমের মাস। এতে একটি রুটিনবদ্ধ জীবনের অভ্যাস গড়ে উঠছে। সিয়াম সাধনায় কষ্ট হলেও দূর হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর কিংবা কল্যাণকর বহু অভ্যাস। রোজার পূর্ণাঙ্গতা রক্ষায় মনোযোগী হলে নেতিবাচক আরও বহু আচরণগত বৈশিষ্ট্য থেকেও মুক্তি ঘটছে রোজাদারদের। সচেতন চেষ্টায় ও অনুভূতিতে বর্জনীয় এ বিষয়গুলো স্থায়ীভাবে পরিহারের উদ্যোগ নিলে রোজাদারের জীবনে পার্থিব ক্ষেত্রেও সাফল্য ও মুক্তির সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে।
রমজানের সিয়াম সাধনা মুমিন বান্দাদের অনেক অপার্থিব-পার্থিব কল্যাণ উপহার দিয়ে যাচ্ছে। গোনাহ মাফ, সওয়াব অর্জন ও আখেরাতে মুক্তি এ মাসের বড় উপহার। নিয়ম ও আদব রক্ষা করে সিয়াম পালন করলে অর্জিত হয় তাকওয়া। এরই পাশাপাশি পার্থিব বহু কল্যাণের অধিকারী হতে পারেন মুমিন বান্দারা। শেষ হিসাবে যেগুলো পরকালীন জীবনের কামিয়াবির জন্যও সহায়ক হয়। সেসবেরই একটি হচ্ছে নিয়মানুবর্তিতা অবলম্বন ও অকল্যাণকর অভ্যাস ত্যাগ।
রমজান মুমিনের জীবনে সংযম নিয়ে আসে। মাসব্যাপী একটি কল্যাণময় ও অপরিহার্য রুটিনের অনুসারী করে তোলে সবাইকে। ভোররাতে উঠে সাহরি খাওয়া, সারাদিন উপোস করা আর সন্ধ্যায় ইফতার গ্রহণের কোনো বিকল্প থাকে না রোজাদারের সামনে। ইফতারের ঘণ্টা দেড়েক পরই ক্লান্তি ঝেড়ে তারাবির নামাজ পড়তে দাঁড়িয়ে যেতে হয়। রোজার মান ও সৌন্দর্য রক্ষা করতে হলে দিনব্যাপী পরিহার করে চলতে হয় পরনিন্দা, ঝগড়া, অশ্লীলতা ও অশোভন কাজ। রোজাদার মুমিনরা রোজা ভেঙে যাওয়ার মতো কারণগুলো যেমন সম্পূর্ণ পরিহার করে চলেন, তেমনি রোজা মাকরুহ হওয়ার মতো বিষয়গুলোও (মন্দ ও অশোভন কাজ) সাধ্যমত বর্জন করে চলেন। পান-ধূমপানসহ ছোটখাটো বহু অস্বাস্থ্যকর, অনুচিত ও অকল্যাণকর অভ্যাস থেকে বাধ্য হয়েই ১৫-১৬ ঘণ্টা বিরত থাকতে হয়। এভাবেই একটি সুন্দর নিয়মানুবর্তিতা ও অকল্যাণকর অভ্যাস ত্যাগের চর্চা গড়ে ওঠে এ মাসে। এটি রমজানের অন্যতম উপহার। রমজানের এ উপহারকে উপলব্ধির সঙ্গে গ্রহণ করলে যেমন খাদ্যাভ্যাস, আচরণ ও স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে, তেমনি তাতে পরকালীন মুক্তির পথও মসৃণ হয়।
রমজানে আবশ্যিক ও প্রেরণাযোগ্য বর্জনগুলোর পাশাপাশি রয়েছে বেশকিছু কল্যাণকর অর্জনেরও অনুপ্রেরণা। এ মাসে নেকির কাজ বেশি করা, গরিব-দুঃখীকে সাহায্য করা, দান-খয়রাত করা, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও চর্চা করার অনুপ্রেরণা বহু হাদিসে এসেছে। এগুলোও জীবনে সুন্দর নিয়মানুবর্তিতা, কল্যাণকর সু-অভ্যাস ও নীতি গড়ে তোলার নিয়ামক হিসেবে ভূমিকা রাখে। জীবনে নিয়ম ও শৃঙ্খলা সব ক্ষেত্রেই সাফল্য বয়ে আনে। আর সে নিয়ম ও শৃঙ্খলা যদি ইতিবাচক ক্ষেত্রে ও উপায়ে তৈরি হয়, তাহলে তাতে ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণের দুয়ার উন্মোচিত হয়। মাহে রমজান আমাদের ইতিবাচক ও পুণ্যময় এক উজ্জ্বল নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলা উপহার দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দায়িত্ব এ নিয়মানুবর্তিতা, শৃঙ্খলার চেতনা ও শিক্ষাকে সারা বছর ধরে রাখা। আর জীবনের সব বর্জন ও অর্জনকে কেবল আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নিবেদন করা।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সবগুলো রোজা সঠিকভাবে পালন করার তওফিক এনায়েত করুন। আমিন!
বিষয়: বিবিধ
১৫৫৫ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন