২৮ শে অক্টোবর ২০০৬ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়!
লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ২৮ অক্টোবর, ২০১৫, ১০:৫৬:৫০ সকাল
২৮ শে অক্টোবর ২০০৬ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো দিন,নৃশংস দিন, যে দিনের বর্বরতা বিশ্ব বিবেককে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল । এ দিনে বাম-আওয়ামী সন্ত্রাসীরা লাঠি দিয়ে পিঠিয়ে ইসলামী ছাত্র শিবিরের ৬ জন নেতা কর্মীকে হত্যা করেছিল ঢাকা বায়তুল মোকারম মসজিদের উত্তর গেইটে। শুধু হত্যা করে ক্লান্ত হয়নি নরপিচাশের দল ,তারা লাশের উপর নৃত্য করে উল্লাস করেছিল। সমগ্র পৃথিবী অবাক বিস্ময়ে দেখেছিল এ অমানবিকতা, সভ্যতার নৃশংসতা। অবাক লাগে যখন দেখি নৃত্যকারি বাপাদিত্য বসু হুঙ্কার দেয় শহীদ মিনারে পিয়াস করিম এর মত বুদ্বিজীবিদের লাশ নিতে দিবে না। সে দিন জামাতের শান্তি পূর্ণ সমাবেশে শেখ হাসিনার নির্দেশে ১৪ দলের অস্ত্রধারী ক্যাডাররা নির্মম ভাবে পিঠিয়ে হত্যা করেছিল জামাত-শিবিরের ৬ জন নেতা কর্মীকে বায়তুল মুকারমের উত্তর গেইটে।
খুনী চক্র সেদিন পরিকল্পিত ভাবে লগি বৈঠা, ট্রাকভর্তি ইট আর বস্তা ভর্তি মরনাস্ত্র নিয়ে সকাল সাড়ে দশটার সময় বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেইটে মঞ্চ প্রস্তুত কাজে ব্যস্ত নিরীহ জামাত শিবির কর্মীদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। নেতা কর্মীদের পাহাড়সম হিম্মত গুলির মুখে বুক পেতে দিয়ে শত্রুর বুহ্য ভেদ করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার দৃশ্য সত্যি অনুপ্রেরণার। TV তে দেখতে ছিলাম মুজাহিদুল ইসলাম ভাই কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যান কিন্তু বাতিলরা তাকে আর ফিরতে দেয়নি। মানুষরূপী হায়েনাদের লগি বৈঠার নির্মম আঘাতে স্পটেই শাহাদাত বরণ করেন তিনি। মুজাহিদ ভাইয়ের শাহাদাতের পর হিন্দার উত্তরসূরীরা খুনের নেশায় আরও উন্মত্ত হয়ে উঠে।
ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের জন্য অনেক বেদনার এদিন , চোখের সামনে আন্দোলনের সাথী কে হত্যার পর লাশের উপর নৃত্য করেছিল যে নরপিচাশ সে বাপ্পাদিত্য বসু এখন বুক ফুলিয়ে বলে বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ব করতে হবে। কিন্তু ইসলামি দলগুলো ধর্মহীন রাজনিতী নিষিদ্বের কথা একবার ও বলেনা। ইসলামী দলগুলোর মধ্যে ঐকের অভাব হলেও পরস্পরের মধ্যে এখনো শ্রদ্বাবোধ কাজ করে। বামদল গুলি মিথ্যা অপবাধ তাদের বিপরীত আদর্শের প্রতি বা তাদের প্রতিন্দ্বদী নেতা বা কর্মীদের বিরুদ্বে ছুড়ে দেয়।
আজ কে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পর্যবেক্ষণ করলে একথা দিবা লোকের মত স্পষ্ট হবে প্রকৃতপক্ষে ২৮শে অক্টোবের ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি নীতি-নির্ধারনী দিন। কারণ এর পূর্বে আওয়ামীলীগ বা তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ বাদীরা এবং সমাজতন্ত্রের ধ¦জাধারী নাস্তিকেরা ভাবতো তারা পেশী শক্তি দিয়ে ইসলামী আন্দোলন তথা জামায়াতে ইসলামীকে এদেশের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে পারবে কিন্তু আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহে আমাদের ১৩ জন ভাইয়ের শাহাদাত আর অসংখ্য ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে অস্ত্রে সুসজ্জিত হায়নাদের মোকাবেলায় ওমর, আলী, খালেদ সাইফুল্লাহ,তারেক বিন জিয়াদ ও সালাউদ্দিন আইয়্যুবীর উত্তরসূরীদের শাহাদাতের তামান্না আর পরিস্থিতি বিরোচিত মোকাবেলার কারণে দিন ব্যাপী সংর্ঘষের পর সন্ধ্যায় যখন তারা পিছু হটতে বাধ্য হলো তখন তারা বুঝতে পারলো সম্মুখ সংর্ঘষে কিংবা শক্তি প্রয়োগ করে তারা জামায়াত শিবির কে দমন করতে পারবেনা। শাহবাগের নাস্তিক-মুরতাদ চক্র অপপ্রচার চালিয়ে জনগনকে জামাত-শিবিরের বিরোদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু ২৮ শে অক্টোবরের ন্যায় এক্ষেত্রেও জামাত শিবির অন্তত্য দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। কোরানের পাখি আল্লামা দেলোওয়ার হোসাইন সাঈদীকে দেলু শিকদার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল্ড মেডেলধারী আব্দুল কাদের মোল্লাকে কসাইকাদের সাজিয়ে নিরপরাধ ব্যক্তিদেরকে সাজা দেওয়ার কারণে জনগনের নিকট যুদ্ধাপরাধ বিচারের আড়ালের ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলন নির্মূলের দূরভিসন্ধি পরিষ্কার হয়ে গেছে। ছাত্র শিবিরের বর্তমান কেন্দ্রীয় সভাপতি জনাব আব্দুল জাব্বার ভাই তখন চট্টগ্রাম কলেজ সভাপতি ছিলেন। আমরা চট্টগ্রাম মহানগরী জামাতের উদ্যোগে প্রতিবাদ মিছিল করতেছিলাম, হাজার হাজার জনকে নিতে জামাত শিবির চট্টগ্রামে বিশাল সমাবেশ করেছিল। দুঃখজনক হলেও সত্যি সেদিনও আমরা বি এন পি কে পাইনি। বেলা বারটার দিকে আমার এলাকার এক বড় ভাই ফোন করে বললেন ”ঢাকায় শিবিরদের কে মেরে ফেলতেছে”(যদিও উনি আওয়ামীলীগ) তারাতারি করে টিভি সেটে বসলাম তখন বাংলাভিশনে মুজাহিদ ভাইয়ের হত্যাকান্ড লাইভ দেখাচ্ছিলো।
বর্বর হত্যা কান্ডের আরো কিছু ভিডিও লিঙ্ক
Click this link
Click this link
Click this link
Click this link
Click this link
Click this link
বিষয়: বিবিধ
২২৫০ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন