একজন প্রেসিডেন্টের কথা

লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৪:৪৮:০৪ বিকাল



ছোটবেলায় রাস্তায় কফি আর কলা ভাজা বিক্রি করতো ছেলেটি। কুকুরকে ভীষণ ভয় পেত সে। পথে কোনো কুকুর দেখলেই ভয়ে দৌড়াতে শুরু করতো। এই ভয় তাকে অস্থির করে তুলতো। প্রচণ্ড ভয় পেয়ে একদিন হঠাৎ ছেলেটি প্রতিজ্ঞা করলো আর ভয় পাবে না সে। সিদ্ধান্ত হলো- যখনই কুকুর দেখবে তখনই চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে থাকবে। সিদ্ধান্ত কাজে দিল। এই সিদ্ধান্তই পাল্টে দিলো তার জীবনের মোড়। কারো রক্তচক্ষুই আর ভয় পেত না ছেলেটি। কোনো সমস্যা এলে ভয় পেয়ে তা থেকে পালিয়ে না গিয়ে তাকে মোকাবিলা করা, সমস্যা উৎস খুঁজে বের করা পরিণত হয় তার স্বভাবে। এবং এই মন্ত্রই তাকে পৌছেঁ দেয় সাফল্যের চূড়ায়।যার কথা বলছি তিনি আর কেউ নন,তিনি আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার ডাঃ মাহাথির মোহাম্মদ। মাহাথিরের পূর্বপুরুষ চট্টগ্রামের! চট্টগ্রাম জেলার উত্তরাংশে রাঙ্গুনিয়া উপজেলাধীন চন্দ্রঘোনা ও কাপ্তাইগামী সড়কের সামান্য পূর্বে কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত একটি প্রসিদ্ধ গ্রাম মরিয়ম নগর ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে এ গ্রামের এক যুবক ব্রিটিশ শাসিত মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। তিনি ছিলেন জাহাজের নাবিক মালয়েশিয়ায় আলোর সেতার গিয়ে এক মালয় রমনীর সঙ্গে সম্পর্কে আবদ্ধ হন। তাদের ঘরেই জন্ম নেয় বিখ্যাত মাহাথিরের পিতা মোহাম্মদ ইস্কান্দার। এ সূত্রে মাহাথিরের রক্তে মিশে আছে বাংলাদেশের রক্ত।বাংলাদেশের ফজলি আম আর দই তার প্রিয় খাবার। ১৯৮১ সালের ১৬ জুলাই ৫৫ বছর বয়সে মালয়েশিয়ার চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী হন ড. মাহাথির মোহাম্মদ।আর দশজন প্রধানমন্ত্রীর মতো তিনি ছিলেন না। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এদিক- ওদিক ঘুরে বেড়াই। দেহরক্ষী আছে তবে তাদের অনেক দূরে থাকতে হয়। আমি মনে করি, যেসব নেতা জনগণ থেকে শারীরিকভাবে বিচ্ছিন্ন থাকেন, আমি তাদের মতো নই। আমি একজন সাধারণ মানুষ হয়ে থাকতেই পছন্দ করি। পছন্দ করি নিজে বাজার করতে। সবার সাথে মিশে কফি পান আমার পছন্দ।’ মাহাথিরই পৃথিবীর একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি নিজের নাম লেখা ব্যাজ পরতেন। ‘আমাকে দশজন যুবক দাও, তাহলে আমি সারা বিশ্বকে তোলপাড় করে দেব’- বলেছিলেন ইন্দোনেশিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট সুকর্ণ। কিন্তু মাহাথিরের কাছে ব্যাপারটি ছিল - ‘ দশজন যুবক দেওয়া হলে মালয়ীদের সাথে নিয়ে আমি বিশ্বজয় করে ফেলবো।’ বাস্তাবে হয়েছেও তাই মালয়েশিয়ার নতুন প্রজন্মকে তিনি স্বদেশপ্রেমে এমনভাবে উদ্বুদ্ধ করেছেন যে, তারা নিজেদের জীবন বাজি রেখে দেশকে উন্নতির শিখরে পৌছেঁ দিয়েছেন নিরহংকারী এই মানুষটি বলেছিলেন, "জনগণ আমাকে ভুলে গেলেও আমার কোনো দুঃখ থাকবে না। মন্দটাই মনে রাখে মানুষ। ভালোটা হাড়গোড়ের সঙ্গে মাটিতে মিশে যায়। জনগণ আমাকে মনে রাখল কি রাখল না তাতে আমার কিছুই যায় আসে না। "

বিষয়: বিবিধ

১৩৮২ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

292753
০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৪
হতভাগা লিখেছেন :
''এ সূত্রে মাহাথিরের রক্তে মিশে আছে বাংলাদেশের রক্ত।''


০ তবে মাহাথির আচার আচরনে ও কাজে কর্মে বাংলাদেশীদের মত ছিলেন না ।
০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৬
236349
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : সহমত
292762
০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৩
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য পেলাম। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

মহাথির ও এরদোগান এর মত দশজন নেতা পেলে ‍মুসলিম বিশ্ব অনেক এগিয়ে যেত।
292830
০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:৪৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : মাহাথির মুহাম্মদ এর হার্ট অপারেশন করা হয়েছিল নিজের দেশেই। যদিও পাশের সিঙ্গাপুরেই উন্নত চিকিৎসার ব্যাবস্থা ছিল। মজার ব্যাপার হচ্ছে ওই অপারেশন যারা করেছিলেন তাদের মধ্যে কয়েকজন ডাক্তার ছিলেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেডিকেল এর ছাত্র!!!
292924
১০ ডিসেম্বর ২০১৪ সকাল ০৮:১৬
শেখের পোলা লিখেছেন : ইনিতো ডিজিটাল দেখেননি, চেতনাও ছিলনা৷ মানুষ কেমনে মনে রাখবে? রাখলে রাখবে অন্তরে৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File