না.গঞ্জের সাত হত্যাকাণ্ডে ঘটনায় অভিযুক্ত মন্ত্রীর জামাতা কর্নেল তারেক সাঈদকে আগাম অবসর!
লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ০৭ মে, ২০১৪, ০৯:৪১:৩৭ সকাল
নারায়ণগঞ্জে প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণের পর খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত লে. কর্নেল তারেক সাঈদকে সেনাবাহিনী থেকে আগাম অবসরে পাঠানো হয়েছে (প্রি-ম্যাচিউরড রিটায়ারমেন্ট)। একইভাবে অভিযুক্ত মেজর আরিফকে আগাম অবসরে পাঠানো হয়। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্বাহী আদেশে সেনাবাহিনী এই ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এই দুই সেনা কর্মকর্তা আপাতত তাদের বর্তমান বাসায়ই থাকতে পারবেন। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে এ দু'জনসহ সব অভিযুক্তকেই ফৌজদারি আইনে আদালতের মুখোমুখি হতে হবে।
গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত যে কেউ, এমনকি কোনো মন্ত্রীর জামাতা হলেও রেহাই নেই বলে ঘোষণা দেওয়ার পরদিনই লে. কর্নেল তারেকসহ দুই সেনা কর্মকর্তার ব্যাপারে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলো। লে. কর্নেল তারেক ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর জামাতা। এদিকে র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত
সংসদীয় কমিটিতে বলেছেন, তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে র্যাবের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। হাইকোর্টও এক স্বপ্রণোদিত নির্দেশে সাত হত্যাকাণ্ডে র্যাবের সংশ্লিষ্টতা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।
ছয় কোটি টাকার বিনিময়ে নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। লে. কর্নেল তারেক সাঈদসহ কয়েকজন র্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম। গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
এর আগে নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠার পর নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও র্যাব-১১-এর সিওসহ তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়। র্যাবের তিন কর্মকর্তাকে সেনাবাহিনীতে ফেরত নেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাতজনকে খুনের ঘটনায় র্যাব-১১-এর কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর সোমবার র্যাব সদর দফতর চার সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির প্রধান হলেন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. আফতাব উদ্দিন আহমেদ। সেনাবাহিনী থেকে অভিযুক্ত দুই সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও র্যাবের তদন্ত কমিটি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করবে।
তদন্ত কমিটির একজন সদস্য সমকালকে জানান, এরই মধ্যে তদন্ত কমিটির সদস্যরা কাজ শুরু করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলবেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান সমকালকে বলেন, তদন্ত কমিটি স্বাধীনভাবে কাজ শুরু করেছে। র্যাবের তদন্ত কমিটি ছাড়াও উচ্চ আদালতের নির্দেশে তিন মন্ত্রণালয় থেকে ছয়জন প্রতিনিধি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশে আরও একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি কাজ করবে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের শ্বশুর সিদ্ধিরগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম সমকালের কাছে অভিযোগ করেন, নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় র্যাবের কয়েকজন অসৎ সদস্যের হাত ছিল। র্যাব নজরুলসহ সাতজনকে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে। এ জন্য র্যাব-১১-এর সিও এবং দু'জন মেজর পদমর্যাদার কর্মকর্তা মিলে ছয় কোটি টাকা নিয়েছেন। শহীদুল ইসলামের অভিযোগ, র্যাব-১১-এর তৎকালীন সিও লে. কর্নেল তারেক সাঈদ, মেজর আরিফসহ তিন কর্মকর্তা ছয় কোটি টাকার চুক্তিতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
বিষয়: বিবিধ
১৪০২ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সরকার কিন্তু ঘুমের মধ্যে আছে
গুম , খুন করা থেকে অবসর নিয়েছে ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন