সর্বাধুনিক হয়ে আসছে জামায়াত!!!
লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ০৭ এপ্রিল, ২০১৪, ০২:৫৬:৫৭ দুপুর
সর্বাধুনিক হয়ে আসছে জামায়াত, জামায়াতে ইসলামী বদলে যাচ্ছে, চিরতরে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী সংগঠনটি, আওয়ামীলীগ অচিরেই নিষিদ্ধ করছে এই সংগঠনটিকে এই ধরনের নানামুখী বক্তব্য মাঠে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আলোচনা-সমালোচনা যেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জনম সঙ্গী। উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতের ঈর্শনীয় ফলাফলে এই সংগঠনটিকে নিয়ে হঠাৎ উত্তাপ ছড়ানো হয়েছে বেশী। চারদিকে চলছে তুমুল আলোচনা। টকশো, রাজনৈতিক সমাবেশ, পত্রপত্রিকা, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় এমনকি চায়ের কাপে এ সময়ের সবচেয়ে আলোচনার বিষয় জামায়াত। একেক জন একেক দৃষ্টিতে পর্যালোচনা করছে জামায়াতকে নিয়ে। এক মিডিয়া রিপোর্ট করছে নিষিদ্ধ হলে নতুন নামে আসবে জামায়াত। পরদিন সেই পত্রিকায় রিপোর্ট করলো নিষিদ্ধ হলে এনজিও হবে জামায়াত। এক পত্রিকায় লিখছে-নিষিদ্ধ হলে জামায়াতের প্রস্তুতি নেয়া আছে। অন্য পত্রিকায় লিখছে-বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে এখনো ভাবেনি জামায়াত। নানান জনের নানান মতকে সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামী তাঁর আগামী দিনের পথ চলা একটু থামাবেনা। আদর্শের উপর অবিচল থেকে সময়ের দায়িত্বশীল ভ’মিকা জামায়াত রাখবে ইনশাল্লাহ। কোন মিথ্যাচার, অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কর্মীরা একটুও থমকে দাঁড়াবেনা। এটাই সময়ের দাবী। আজ অনেকে জামায়াত সম্পর্কে না জেনেই অন্ধকারে ঢিল ছুড়ছে। জামায়াতের কার্যক্রম, ভবিষ্যত পরিকল্পনা সবকিছুই স্পষ্ট। ১৯৪১ সালে সমাজ, ব্যক্তি, রাষ্ট্রের সংস্কার ও সংশোধনের জন্য জামায়াতের প্রতিষ্ঠা।
বর্তমান সময়ে আলোচিত সংগঠন জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে কিছু বক্তব্য তুলে ধরছিঃ-
নির্বাচন পদ্ধতিঃ- ক) জামায়াতের দীর্ঘ ঐতিহ্য অনুযায়ী বিশ্ব স্বীকৃত গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে রুকনগণ তাদের আমীর নির্বাচিত করেন।
খ) জামায়াতের সর্বোচ্চ পদটি কর্মপরিষদ বা মজলিসে শুরার কোন ক্ষুদ্র অংশের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে না; বরং হাজার হাজার রুকন জামায়াতের গঠনতন্ত্রের বর্ণিত আমীরের গুণাবলী বিবেচনা করে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে ভোট দানের মাধ্যমে তাদের আমীর নির্বাচিত করে থাকেন।
নেতৃত্ব তৈরিঃ- জামায়াতে ইসলামীতে সংগঠনের নেতৃত্বে যাতে জেনারেশন গ্যাপ না হয়, সেজন্য পরিকল্পিতভাবেই যোগ্যতা সম্পন্ন ও নিষ্ঠাবান লোকদেরকে চেইন অব লিডারশীপে রাখা হয়। দায়িত্বশীলদের ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দের ভিত্তিতে নয়, সংগঠনের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়েই লোক বাছাই করা হয়। জামায়াতে যারা সংগঠনভুক্ত হয় তাদেরকে সত্যিকার মুসলিম ও মুজাহিদ হিসেবে গড়ে তোলার এমন কর্মসূচী রয়েছে, যাতে মন-মগজ-চরিত্র সমন্বিতভাবে গড়ে উঠে।
স্বাধীনতা যুদ্ধের ভ’মিকা সংক্রান্তঃ- যে আশংকার কারণে ১৯৭১ সালে দেশের ভারত বিরোধী ও ইসলামী মহল স্বাধীনতার সংগ্রামে অংশগ্রহণ করতে পারল না
ক) ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ইসলাম বিরোধী শক্তির ক্ষমতায়ন। ১৯৭২-১৯৭৫, ১৯৯৬-২০০১, ২০০৯-২০১৪ আওয়ামী শাসনামলে ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযানি তার প্রমাণ।
খ) ভারতের আধিপত্যের চাপে দেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়া।
সন্ত্রাসী সংগঠন সংক্রান্তঃ-জামায়াত কোন গোপন তৎপরতায় বিশ্বাসী নয়, জামায়াত সকল প্রকার সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের চরম বিরোধী। কারণ নবী-রাসূলগণ এই ভ্রান্ত পন্থা অবলম্বন করেননি। জামায়াত সবসময় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করে এসেছে।
জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণঃ-প্রতিটি নির্বাচনে জামায়াতের ফলাফল ছিল গর্ব করার মতো। ১৯৮৬, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জামায়াত অংশগ্রহণ করে। ২০০১ সালে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৭ আসনে বিজয়ী হয় জামায়াত। ৩১টি আসনে নির্বাচন করে ভোট পেয়েছিল ২৩,৮৫৩৬১ ভোট। গড় হার ছিল ৭৬৯৪৭ ভোট। ২০০৮ সালে ভৌতিক কারবারের নির্বাচন হয়েছিল বাংলাদেশে। সেখানেও ৩৮ টি আসনে প্রতিদ্বন্দিতা করে ২আসনে বিজয়ী, ৩০ আসনে দ্বিতীয় ও ৬টি আসনে তৃতীয় হয়েছে। ৪টি আসন জামায়াত ও বিএনপি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এই আসনগুলো উন্মুক্ত রাখা হয়। এর মধ্যে ২টিতে দ্বিতীয় ও ২টিতে তৃতীয় হয়েছিল জামায়াত। ৩৮ আসনে লড়ে ৩২ লক্ষ ৯ হাজার ২ শত ২৬ ভোট অর্থাৎ ৮৪ হাজার ৪শ ৫৩ ভোট প্রতি আসনে পেয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ৪৬৫ টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১১৭ জন প্রার্থী দিয়ে ৩৭ জন বিজয়ী হয়। আর ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ২ শতাধিক প্রার্থী দিয়ে ১২০ জন ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান ৫৬ জন প্রার্থী দিয়ে ৩৫ জন বিজয়ী হয়। আওয়ামীলীগ কারচুপি না করলে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্য থেকে ৮০ থেকে ১০০ টি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হত।
সামাজিক কার্যক্রমে জামায়াতঃ- দুঃস্থ মানবতার সেবার লক্ষ্যে জামায়াতের রয়েছে সমৃদ্ধশালী একটা সমাজসেবা বিভাগ। দাতব্য চিকিৎসালয়, রোগীর পরিচর্যা, পরিচ্ছন্ন অভিযান, রাস্তাঘাট মেরামত, অফিস-আদালতের কাজের সহযোগীতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও আকস্মিক দুর্ঘনায় জনগণের পাশে দাঁড়ানো, দুর্দশাগ্রস্থ বিত্তহীন ও ছিন্নমূল মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা, গরীব ও মেধাবী ছাত্রদের সহযোগীতা প্রদান, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান, কর্জে হাসানা প্রদান, সমাজের অবিবাহিত যুবক-যুবতীদের যৌতুকবিহীন বিবাহের ব্যবস্থা, মৃত ব্যক্তির কাফন-দাফন ও জানাযায় অংশগ্রহণ, প্রতিষ্ঠিত সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাসমূহের সহযোগীতা গ্রহণ এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা সৃষ্টি জামায়াতের কার্যক্রমের অন্যতম দিক।
মাইয়েতের কাফন-দাফন ও জানাযা ফরজে কেফায়া। কোন লোক মারা গেলে সে এলাকার জামায়াতের দায়িত্বশীল ও কর্মীরা মাইয়েতের গোসল দেয়া, কাফন পড়ানো, কবর খোঁড়া ও জানাযায় অংশগ্রহণ অপরিহার্য দায়িত্ব মনে করে। প্রোগ্রাম চলাকালীন কোন ব্যক্তির মৃত্যুর খবর আসলে প্রোগ্রাম মুলতবী করে মাইয়েতের দাফন-কাফনে ও জানাযায় শরীক হওয়ার জন্য জামায়াতের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া আছে।
মানুষের মনগড়া আইন ও অসৎ লোকের শাসনই মানবজাতির অশান্তি ও বিশৃঙ্খলার প্রদান কারণ। যুগে যুগে নবী ও রাসূলগণ আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন কায়েমের উদ্দেশ্যে সর্বাত্বক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তাদেরই পথ ধরে জামায়াতে ইসলামী ঐ মহান উদ্দেশ্যে ময়দানে ভ’মিকা রাখছে ও আগামী দিনেও রাখবে ইনশাল্লাহ। সরকার ২০০৯ সাল থেকেই জামায়াতের প্রকাশ্য কার্যক্রম অঘোষিতভাবে নিষিদ্ধ করে রেখেছে। নির্যাতন করে নিঃশেষ করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এতেও জামায়াত কর্মীরা দমে যায়নি। সত্য ও সুন্দরের কর্মীরা কোন অবস্থাতেই দমাবার পাত্র নয়। বাংলাদেশের মাটিতে আবারও প্রমাণ হবে সত্য সমাগত, মিথ্যা বিতাড়িত, সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী।
সংগৃহীত : Click this link
বিষয়: বিবিধ
১৬৩৮ বার পঠিত, ২৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভাই এই কাজগুলো করলেতো এতোদিন বিপ্লব হয়ে যেতো। আমি যতদুর জানি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সিলেবাসে ”সমাজকল্যন ম্যানুয়েল” নামে একটি বই আছে। সকল জনশক্তিকে বইটি পড়ার অনুরোধ রইল।শুধুমাত্র আলোচনার মাধ্যমে নয়; তৃণমূলে জামায়াতরে কাজকে শক্তশিালী করার মাধ্যমে গরীব, অসহায় মানুষরে সবো করে তাদরে মশিনকে এগয়িে নতিে হব।
মন্তব্য করতে লগইন করুন