ছাত্রশিবিরের আট জন নেতার খোঁজ পাবে কি তার সাথীরা?
লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ০৫ মার্চ, ২০১৪, ০৪:২১:৪৪ বিকাল
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে আজ বিরাজ করছে এক ভয়াবহ গুমোট আবহাওয়া। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে এক ঘৃণ্য চক্রান্তের বলী হচ্ছে সাধারণ মানুষ, বিশেষত বিরোধী মতাদর্শের মানুষ ও সংগঠনগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বাংলাদেশের সবচেয়ে সক্রিয়, গতিশীল ও মেধাবী ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের উপরও নেমে এসেছে অত্যাচারের খড়গ।
ইসলামী ছাত্রশিবির বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন। প্রায় অর্ধকোটি ছাত্রের এই সংগঠনটি ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়বার লক্ষ্যে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরীর অঙ্গীকার নিয়ে অব্যাহতভাবে কাজ করে চলেছে। ইতোমধ্যেই শিবির এক বিরাট সংখ্যক তরুণ গড়তে পেরেছে যারা নেশামুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত ও ইভটিজিংসহ অন্যান্য ঘৃণ্য অপরাধ থেকেও দূরে থাকে। কিন্তু বর্তমানে প্রতিটি মূহূর্তে এই ইসলামবিরোধী সরকার তাদের সাথে অমানবিক ও অগণতান্ত্রিক আচরণ করছে। গত চারটি বছরে সারা দেশে তাদের সকল কার্যালয় বন্ধ করে রাখা হয়েছে। কোথাও কোন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালনের ন্যূনতম সুযোগও দেয়া হয় নি। শান্তিপূর্ণ ঘরোয়া বৈঠককে নাশকতার ষড়যন্ত্র ও গোপন বৈঠক আখ্যা দিয়ে নেতাকর্মীদের অহরহ গ্রেফতার করা হয়েছে। অফিস ও বাসা থেকে কুরআন, হাদীস ও ইসলামী সাহিত্য বের করে এনে “জিহাদী বই” উদ্ধারের নাটক সাজানো হচ্ছে। সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ গত তিন বছর ধরে মিথ্যা অভিযোগ ও মামলায় কারাগারে আবদ্ধ আছেন। এই অমানবিক ও স্বৈরাচারী আচরণের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করতে গেলেই নির্বিচারে চালানো হচ্ছে গুলি, একই সঙ্গে চালানো হচ্ছে গণগ্রেফতার। ইতোমধ্যে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ সারা দেশে প্রায় দুই শতাধিক মানুষের জীবনহানি ঘটেছে; শতাধিক নেতাকর্মী হাত, পা, চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিরপঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। পুলিশের শটগান ও রাবার বুলেটসহ বিভিন্ন আগ্রাসী আক্রমণে সহস্রাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন যাদের সুচিকিৎসার জন্য হাসপাতালেও নেয়া যাচ্ছে না, কারণ সেখান থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ি, মসজিদ, রাস্তাঘাটে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার বেপরোয়া গ্রেফতারে শিবিরের নেতাকর্মী ও সমর্থকসহ প্রায় ৩৬,০০০ মানুষ আজ কারাগারে অসহনীয় যন্ত্রণায় দিনাতিপাত করছেন। মিথ্যা মামলায় হয়রানী, রিমান্ডে পৈশাচিক নির্যাতন এবং জামিন পাবার পরও জেলগেট থেকে গ্রেফতারের মত জঘন্য হয়রানি আজ নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সরকার বাহিনীর নতুন মাত্রার নিপীড়ন “গুম” এর শিকার জনপ্রিয় বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম, ইলিয়াস আলীসহ আরো শতাধিক মানুষের মতো শিবিরের আট জন নেতাও গোয়েন্দা সংস্থা, র্যাব ও পুলিশের হাতে গুম হয়েছেন, আজ দু’বছরেও যাদের কোন সন্ধান মেলে নি। তাদের মধ্যে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন মেধাবী ছাত্র আল মুকাদ্দাস এবং এম. ওয়ালীউল্লাহ ২০১২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি, রাজশাহী মহানগরী শাখার দপ্তর সম্পাদক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম মাসুমকে চলতি বছরের ৪ এপ্রিল এবং এরও কিছুদিন আগে চলতি বছরের ২ এপ্রিল ঢাকা মহানগরী পশ্চিম শাখা শিবিরের আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত সভপাতি হাফেজ মো. জাকির হোসেনকেও গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়। আজও তাদের কোন খোঁজ মেলেনি। এখানেই শেষ নয়! গত ২৩ জুন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র, শিবির নেতা মোঃ তাজাম্মুল আলী ও আজিজুল ইসলামকে ঢাকার বাড্ডা থেকে জনসমক্ষে ৮-১০ জন লোক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে মাইক্রোবাসে করে উঠিয়ে নিয়ে যায়। এই দুজনকে খুঁজতে এসে গত ২৬ জুন রাত ৮টার দিকে রাজধানীর গুলশান থানার সামনে থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক আব্দুস সালাম ও ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখার শিবির নেতা নুরুল আমিন গ্রেফতার হন। গুম হওয়াদের খুঁজতে এসে নিজেরাই হলেন গুমের শিকার! কী অনিশ্চিত আজব এ দেশ! এখন পর্যন্ত তাদের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। এই দুজনও আইন-শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক আছে বলে নির্ভরযোগ্য বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিষয়: বিবিধ
১৩৪২ বার পঠিত, ২৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মূর্দার পক্ষে থাকলেই বা কি আর না থাকলেই বা কি?
আর একটি ৭১ যদি ঘটে যায় ২০১৪ সালে, সব কিছুর শেষে ইরাকের মতই এ জাতির সব মায়েরা বুক থাপড়িয়ে বলবে, ছি। হাসিনার ক্ষমতার জন্য মিছে এ জাতি অনাকঙ্খিত যুদ্ধে জড়িয়েছে। এটি বুঝুতে আরও সময় লাগবে। তখন হয়তবা আমরা অনেকেই এতিম হয়ে যাব।
আমার গ্রামে আমার চোখের দিকে তাকায় এমন হিম্মত কার? সুতরাং আমার স্বাধীকারকে যে ভূল ব্যখ্যা দিয়ে রাজাকার বানাবে আমি কি তার নকো ভোতা করাটা বোকামি হবে?
মন্তব্য করতে লগইন করুন