সম্মানবিহীন সর্বোচ্চ বীরত্বসূচক পদক ধারণ করে লাভ কি?(একজন বিডিআর সদস্যের আত্মজীবনী)

লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১০:০৪:৫১ সকাল



বিডিআর এর সর্বোচ্চ পদক “বাংলাদেশ রাইফেলস্ পদক” (বিআরএম) প্রাপ্ত জনাব সাঈদ কামরুজ্জামান স্যারের সুখের কথা উনার নিজের মুখে শুনুন। স্যার আমরা লজ্জিত আমাদের ক্ষমা করুন।

সম্মানবিহীন সর্বোচ্চ বীরত্বসূচক পদক ধারণ করে লাভ কি?

বিগত ২৪ শে ফেব্রুয়ারী ২০০৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক পিলখানা প্যারেড গ্রাউন্ডে আনুষ্ঠানিকভাবে বিডিআর এর সর্বোচ্চ পদক “বাংলাদেশ রাইফেলস্ পদক” (বিআরএম) পদকটি আমাকে নিজ হাতে পরিয়ে দেন। সীমান্ত সংঘর্ষে উপস্থিত বুদ্ধি, অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ আমাকে ঐ উপাধি প্রদান করা হয়।

“বল বীর চির উন্নত মম শীর” এই বীরের উপাধি নিয়ে কি লাভ? বিগত ১৬ এপ্রিল ২০০৫ তারিখে (বিএনপি সরকারের সময়ে) আখাউড়া সীমান্তে প্রতিবেশী দেশ কর্তৃক সশস্ত্র বিএসএফ সদস্যের দল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সীমান্তবর্তী হীরাপুর গ্রামে অনুপ্রবেশ করে। অনুপ্রবেশকারী বিএসএফ সদস্যগণ ভারতীয় নাগরিকদের সহায়তায় হিরাপুর গ্রামে ব্যাপক লুটতরাজসহ নিরীহ নারী ও শিশুদেরকে মারধর করে। গ্রামবাসী বাধা দিলে বিএসএফ গুলি বর্ষণ শুরু করে এবং গ্রাম দখল করে রাখে।

বাংলাদেশী নাগরিকদের সশস্ত্র বিএসএফ এর কবল থেকে গ্রামবাসীদের উদ্ধার এবং বিএসএফ কে বাংলাদেশের ভূখন্ড থেকে বিতাড়িত করার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঐ সময় বিএসএফ এর সাথে সম্মুখ সংঘর্ষে অংশগ্রহণ করি। আমার নেতৃত্বে বিডিআর ও বিএসএফ এর মধ্যে প্রায় ৪/৫ ঘন্টা তীব্রভাবে গুলি বিনিময় হয়।

গুলি বিনিময়ের এক পর্যায়ে বাংলাদেশ সীমান্তের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশকারী বিএসএফ এর কোম্পানী কমান্ডার, এ্যাসিটেন্ট কমান্ড্যান্ট শ্রী জীবন কুমার গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন এবং কনষ্টেবল কে কে সুরেন্দার গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতরভাবে আহত হয়। সেই সাথে সশস্ত্র বিএসএফ দল কোম্পানী কমান্ডারের লাশ ও আহত কনষ্টেবল কে ফেলে রেখে বাংলাদেশের ভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য হয় এবং তাদের কবল থেকে বাংলাদেশী নাগরিকদের জানমাল রক্ষা পায়।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বীরত্বসূচক সর্বোচ্চ সম্মান বা পদক বা খেতাব পেয়ে কি লাভ হলো? লাভ হয়েছে নিম্নরূপ:

১. বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) এর কোন অনুষ্ঠানে দাওয়াত না পাওয়া।

২. সম্মানী না পাওয়া।

৩. অবসরের পর থেকে ২১ নভেম্বর এর সশস্ত্র বাহিনী দিবসে অদ্যবধি দাওয়াত না পাওয়া।

৪. মানবাধিকার লঙ্ঘন করে বিএসএফ এর কোম্পানী কমান্ডার কে হত্যা করার অপরাধে সাময়িকভাবে আমেরিকার ভিসা না পাওয়া (পরবর্তীতে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়নি তা প্রমাণ করার পর ভিসা প্রাপ্তি)।

৫. ত্রিপুরা রাজ্যে বেসরকারীভাবে আমার মাথার দাম ১(এক) লক্ষ রুপি ঘোষণা।

এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মায়া ত্যাগ করে দেশ মাতৃকার টানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করলাম, সবশেষে এখন লাভ-ক্ষতির হিসাব এর Balance Sheet করলে কি পেলাম তার উত্তর আজ খুঁজে পাইনা?? অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে উপরোক্ত বিষয়ের অবতারনা করলাম, এটি পড়ে যদি কেউ দুঃখ বা কষ্ট পান তাহলে নিজ গুণে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।

তথ্যসুত্যঃSayed Kamaruzzaman

বিষয়: বিবিধ

১৯৯৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

173632
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:৩৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : জবাবহীন!
নির্মমতা কতটুক হলে জাতি হয় নির্লজ্জ।
173782
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৩
178200
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:৫৬
অজানা পথিক লিখেছেন : ধন্যবাদ
178907
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:১৩
মুমতাহিনা তাজরি লিখেছেন : ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File