ফিল্ম জগৎ বিষয়ে এলার্জি আছে এমন কারো এ পোস্ট পড়ার দরকার নেই
লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৯:৫৩:২৩ সকাল
১.......বিনোদনের আশায় টিভি চালু করলো উদীয়মান লেখক । বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছে মোবাইল অপারেটরের। সাবজেক্ট প্রেমিক প্রেমিকার ফোনালাপের সুবিধার্থে কলরেট কমানোর খবর প্রচার! বিরক্ত হয়ে চ্যানেল চেঞ্জ করলো।
বাংলা নাটক দেখতে বসলো সে। নাটকের বিষয়বস্তু নায়ক নায়িকার প্রেম ও তা সফল হওয়া বা ভেঙ্গে যাওয়া! এখানেও সেই একই বিরক্তিকর প্রেম ভালোবাসার কেচ্ছা কাহিনী! বিরক্ত হয়ে আবার চ্যানেল পাল্টালো সে।
একটা মুভি দেখতে বসলো এবার। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিরক্তিতে মুখ কুঁচকে উঠলো!! সেই একই বিষয়!! এখানেও প্রেম ভালোবাসার কাহিনী!! নায়কের সীমাহীন ব্যক্তিত্বহীনতা, মূল্যহীন কাজে মূল্যবান সময়ের অযথা অপচয়, বিশৃঙ্খল জীবন যাপন আর নায়িকার নোংরামি, বেহায়াপনার মধ্যে শিক্ষনীয় কিছু খুজে পেলোনা! বিরক্তির সীমা অতিক্রান্ত হওয়ায় টিভি বন্ধ করে দিল সে!
রাতের বেলা ঘুমিয়ে পড়ার আগে মোবাইলটা হাতে নিয়ে এফএম রেডিওটা অন করলো সে। রাতের বেলা যেন প্রেমের হাট বাজার বসেছে রেডিও চ্যানেলগুলোতে!! টিভির তুলনায় মোটেই কোনদিকে কম যায়না প্রেমের ঠিকাদার এসব চ্যানেলগুলো! এর চেয়ে ঘুমিয়ে পড়াই ভালো ভেবে রেডিও বন্ধ করে দিল সে!
পুরো মিডিয়া একটা ডিজিটাল ডাস্টবিনে পরিনত হয়েছে! নেই কোন নৈতিক শিক্ষার ছোয়া, নেই বাস্তবধর্মী শিক্ষনীয় কোন উপাদান!! নেই মানুষের বিবেক বুদ্ধি জাগ্রত করার কোন প্রয়াস!! আছে শুধু তরুন প্রজন্মকে ব্রেন ওয়াশড, অথর্ব, মানসিকভাবে পঙ্গু করে দেবার কৌশল!! এ মিডিয়া সুমনের জন্য নয়! তার চাই এমন মিডিয়া যার এক একটা ঘন্টা হবে এক একেকটা নৈতিক শিক্ষা প্রদানের ও তরুণদের কল্যানের পথে আসতে জাগ্রত করার ক্লাশ! সেখানে জায়গা হবেনা কোন সস্তা, মূল্যহীন, অবৈধ কাজে উৎসাহিত করার কোন আবেদন!
২.......৯ম শ্রেনীতে পড়ুয়া ছাত্র পিয়ালের ভারতীয় বাংলা ছবি খুবই পছন্দ। সব ছবির কাহিনী প্রায় একই! প্রেম ভালোবাসা! শুধু নায়ক নায়িকা ভিন্ন। কিশোর বয়সের অপরিপক্ক মনে ছবিগুলোর নায়কের চরিত্র তার মনে দাগ কাটে! প্রেমের গান তার মনে একজন নারীর অনুপস্থিতির কথা বারংবার স্মরন করিয়ে দেয়!! ভবিষ্যতের নায়ক হবার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে তার কাচা মন! তবে এ নায়ক সমাজের নায়ক নয়, নায়িকার নায়ক!!
৩.......কয়েকবছর পর.......পত্রিকা হাতে নিয়ে প্রথমেই বিনোদন পাতা খুলে কাঙ্খিত সংবাদটি খুজতে লাগলেন হালের জনপ্রিয় ভিন্নধারার লেখক এবং সদ্য মিডিয়ায় প্রবেশ করা ফিল্ম স্ক্রিপ্ট রাইটার সুমন। যা খুঁজছিলেন তা পেতে বেগ পেতে হলোনা। বিনোদন পেজে বড় করেই ছাপানো আছে খবরটা। বাংলাদেশের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া একটি গনহত্যা ও তা থেকে একদল যুবকের সৃষ্টি হওয়া অপার দেশপ্রেম এবং ত্যাগের একটি ঘটনা নিয়ে সুমনের রচিত উপন্যাস থেকে তৈরি 'দ্য সেক্রিফাইস' চলচিত্রটি বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা চলচিত্র হিসেবে সমালোচক ও দর্শকদের মন জায়গা করেছে! সস্তা গতানুগতিক ধারার প্রেমের চলচিত্রের বাধ ভেঙ্গে লাখো তরুনের মনে নৈতিকতা, দেশপ্রেম, ত্যাগের চেতনা জাগ্রত করতে পেরেছে সুমন!! সুমন আজ সফল তার লক্ষ্যে পৌছাতে পেরে!! কিন্তু..........কিন্তু.........পত্রিকার ৩য় পাতার একটি সংবাদ সুমনের মনকে বিষিয়ে দিল!!
'প্রেমে ব্যর্থ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী পিয়ালের ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা'
সে বুঝতে পারলো তাকে, তাদের সবাইকে আরো অনেক দূর যেতে হবে.......পথ এখনো অনেক বাকি...........!!!!
বিষয়: বিবিধ
১৪০১ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক সুন্দর লেখা.
মন্তব্য করতে লগইন করুন