কারো বই পড়ার সিস্টেম না জানা থাকলে জেনে নিন (দয়া করে পুরো লেখাটা একবার মনোযোগ দিয়ে পড়)
লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১০:৩৯:৫৬ সকাল
হে বাপু ! তোমার পুর্ববর্তিগণ আদাজল খেয়ে নিজেদের আসল কাজকর্ম ভুলে গিয়ে মাওলানা মওদূদীকে (রহ) এতটা প্রমোট দিয়েছেন যে, পুর্ব পশ্চিমের প্রতিটি প্রান্তরে কুটি কুটি বনী আদম তার সাহিত্যের সাথে পরিচিত হচ্ছে প্রতিদিন। সাথে সাথে অতি সম্মানের সাথে তার নাম নিয়ে দোয়া করছে।। কি দরকার নতূন করে আরো কিছু ভক্ত বাড়ানোর। যেগুলো আছে তাদের কেই তো দুনিয়ার কাফের মুশরিকরা সামলাতে পারছে না। এবার খ্যান্ত দেও বাপুরা।
তারপরেও একটা ফ্রী পরামর্শ দেই বাছাধনেরা। কারো বই পড়ার সিস্টেম না জানা থাকলে অভিজ্ঞ কোন এক জনের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে নাও। মেডিকেল স্টুডেন্ট যদি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজের কিতাব নিয়ে না বুঝে উল্টা পাল্টা ভূল ধরে কান্দাকাটি করে তাহলে দোষটা কার, যে বই লিখলো তার না যে যোগ্যতার উর্ধে উঠে বেহুদা লাফ মারলো তার ? নিজের যোগ্যতার বাইরে ভাবতে গেলে পাগল হয়ে মাথার চুল গুলো অকালে হারাবে বাপুরা। এমনিতেই তোমাদের কিতাব পত্রের মারেফাতী রসের একটু একটু করে নিঃস্বরণ শুরু হয়েছে। এসবের গন্ধও কিন্তু তেমন একটা সূবিধার না বাপু ! ইতিমধ্যে অনেকে সেগুলো নিয়ে বিস্তর সমালোচণা শুরু করেছে কেবল মাত্র এই অধম ছাড়া।
আমার পরামর্শটা মন দিয়ে শুনো। কারো বই পড়ার আগে মনোজগত থেকে সকল ধরনের ঝোক প্রবণতা, নেতিবাচক বা ইতিবাচক সকল প্রকার দৃষ্টি ভংগিকে ধুয়ে মুছে নাও। অতঃপর সত্য সন্ধানীর দৃষ্টি নিয়ে প্রতিটি লাইন মনোযোগ দিয়ে পড়ো। যদি একটি শব্দ নিয়ে বিভ্রান্তী তৈরি হয় তাহলে পুরো বাক্যটির সাথে মিলিয়ে নিয়ে কয়েকবার পড়ো। যদি একটি বাক্য নিয়ে বিভ্রান্তী তৈরি হয় তাহলে পুরো পুর্বের কোন প্যারার সাথে মিলিয়ে কয়েকবার পড়ো। যদি একটি প্যারা বা শিরোনাম নিয়ে বিভ্রান্তী তৈরি হয়, তাহলে পুরো বইর ভুমিকাটি কে সামনে নিয়ে আগে পিছে মিলিয়ে আরো কয়েকবার পড়ো।
এর পরেও যদি পুরো বইটিই বুঝতে ব্যর্থ হও বা বিভ্রান্তীতে পড়ো তাহলে লেখকের বই লেখার মূল উদ্ধেশ্য কে সামনে নিয়ে চিন্তা করে দেখো যদি কোন সমাধাণ বা মানসিক প্রশান্তি পাও তাহলে পড়ে চিন্তা করো বর্তমান বাস্তবতার সাথে লেখার কোন না কোন মিল পেলে কিনা। তাতেও যদি শান্তি না পাও তাহলে বইটি কে বাদ দিয়ে অন্য কাজে মন দাও। আর বুঝে নাও যে, লেখক সম্পর্কে পূর্বের ধ্যান ধারণা তোমার মনজগতকে এতটাই আচ্ছন্ন করে রেখেছে যে, তুমি লেখকের লিখিত বইগুলোর প্রতিটি ছত্রের আড়ালে তোমার অন্তরে পোষণ করা ধারণা সমৃদ্ধ কিতাবের পৃষ্টাগুলোই অনবরত পাঠ করে যাচ্ছো। এর থেকে ভালো হয় বইটি কে এড়িয়ে গিয়ে অন্য বই অধ্যায়ন শুরু করো। কারণ যে কোন বইর কোন একটি বিষয় তুমি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছো তার মানে এই নয় যে, পুরো বইটি বাতিল যোগ্য অথবা বুঝার মতো না।
সর্বশেষ আরো একটা পরামর্শ দেই বাপু। বান্দারামীর একটা সীমা থাকে উচিত। বান্দারামী বেশি করলে কিন্তু লোকজন জোকার বলে ডাকা শুরু করবে। অতএব সাধু সাবধাণ।
বিষয়: বিবিধ
১৩১৮ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কারও ভুল ধরতে হলে আগে ষ্ট্যান্ডার্ড (মূলটা) জানতে হয় এর পর ষ্ট্যান্ডার্ডটা থেকে যারটা ভুল বলা হবে তার ডেভিয়েশন বের করে প্রমাণ করতে হবে যে তারটা মূল থেকে সম্পর্কযুক্ত না বা দূরে সরে গেছে।
উনার সমালোচক একজনের একটা লিখিত জবাব আকারের একটা বই এর কিছু অংশ পড়েছিলাম – উনি সম্ভবত জনাব ত্বাকী উসমানী। সমালোচনার বিষয় ছিল মুয়াবিয়া(রাঃ) এর ঘটনাবলী নিয়ে লেখা মওদুদীর একটা বইয়ের উপর। তাতে জনাব ত্বাকী উসমানী এমন কিছু যুক্তি উপস্থাপন করেছে যাকে সত্যিই যুক্তি বলা যায় না, আর মনে আছে যে মওদূদী রেফারেন্স হিসেবে ইবনে কাসীরের একটা বইয়ের রেফারেন্স এনেছে অনেক জায়গায়।
ইবনে কাসীরকে যদি এখানে ষ্ট্যান্ডার্ড ধরা হয় তবে মওদূদী সেটা কপি-পেষ্ট করেছে, মানে ডেভিয়েশন নাই, আর ত্বাকী উসমানী মুয়াবিয়া(রাঃ) এর ব্যাপারে মওদূদীকে বাদ দিয়ে মূলত ইবনে কাসীরের আলোচনা কেই সমালোচনা করেছেন। তবে এটা জানতে হলে কাসীর এর বক্তব্য ধারা না বুঝলে – একদল ত্বাকী উসমানী নিয়ে লাফাবে আরেকদল মওদূদী – মূল বা সত্যই যে জানবে তো না, ভুল ধরবে কিভাবে?
আমার আসলে ইন্টারেষ্ট ছিল মওদূদী বোঝা, এর জন্য মিনিমাম একটা ষ্ট্যান্ডার্ডের জন্য ইবনে কাসীর এর সুনাম বিভিন্ন জায়গায় দেখার কারণে, তাকেই বেছে নিয়েছিলাম। তবে এতো বিশাল সমাহার এবং তার বইয়ের বাংলা ভার্সনের অনলাইনে অপ্রতুলতায় – মওদূদীর বই ভালোভাবে এখনো ধরাই হয় নাই।
thanks
সত্যিই খুব সুন্দর করে বলেছেন..
যার মাঝে সামান্যতম বিদ্যা-বুদ্ধি ও সদিচ্ছা আছে তাঁর তো এত সহজ কথা না বুঝার কথা নয়!!
ধন্যবাদ
হলেও বা কি!পাছে আসল ব্যপারটি বেধগম্য হয়ে সমালোচনা করার পথটি যদি বন্ধ হয়ে যায়
মন্তব্য করতে লগইন করুন