শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা সাহেবের বড় ছেলের প্রতিক্রিয়া....
লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৭:৩৮:৫৮ সন্ধ্যা
গত সাড়ে তিন বছর আমার পরিবার যে কি পরিমান কষ্ট সহ্য করেছে, তা বলে শেষ করা যাবে না। আমাদের পরিবারের সদস্যরা সবাই এখন অনেক শক্ত মানসিকতার মনে হলেও আসল কথা হলো, এখন আমরা সবাই প্রায় বোধশক্তিহীন। বাবার এটাই প্রথম জেলে যাওয়া নয়। কিন্তু এবার জুলুম সহ্যের সীমা অতিক্রম করেছে অনেক আগেই। প্রত্যেক শনিবার গাজীপুরের কাশিম্পুরে দেখা করতে যাওয়া, বাইরে থেকে বাবার সব চাহিদা পুরনের চেষ্টা, আইনি লড়াই এর জন্য দৌড়াদৌড়ি, নিষ্পাপ মানুষটির জন্য হাজার চেষ্টা করেও কিছু না করতে পারার গ্লানি আরও হাজার সমস্যা কুরে কুরে খেয়েছে আমাদের পরিবারটিকে। এত কিছুর পরেও বাবার মুখের একটু নিষ্পাপ হাসিতে মলিন ছিল সবকিছু। এর মাঝে আমি ছিলাম বাইরে। বাবার অনেক কিছু করার ইচ্ছা থাকলেও করে উঠতে পারিনি। ১০ই ডিসেম্বের যখন হটাত বাবার সাথে তার পরিবারকে শেষবারের মত দেখা করতে বলা হয় আমি তখনও দেশের বাইরে। ঐদিন রাতেই flight ধরে ঢাকায় চলে আসি আমি। পথে শুধু দোয়া করছিলাম যেন আল্লাহপাক বাবার সাথে দেখা করার একটা শেষ সুযোগ দেন। আলহামদুলিল্লাহ্সে সুযোগ আমি পেয়েছি। বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, “Physical revenge নয় আমার সাথে করা অবিচারের প্রতিশোধ তোমরা ইসলামি আন্দোলন করে ইসলাম প্রতিষ্ঠার বিনিময়ে দেবে। সেদিন দেখা করে চলে আসার পর পরই জানলাম যে ফাশির রায় ঐদিন ই কার্যকর করা হবে। যেখানে কারা কতৃপক্ষের আমাদের কাছে লাশ দেবার কথা সেই ফারিদপুরের উদ্দেশে রউনা দেবার জন্য যখন আমি সহ আমার আরও ১৫ জন পরিবারের সদস্য বাসার নীচে অপেক্ষা করছি তখনি আওয়ামী মানুষরূপী পশুগুলি আমাদের ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাসার নীচে আক্রমন করে। ওদের পাল্টা ধাওয়া করতেই মাঝখানে পুলিশ এসে আমাদের ঘিরে ফেলে। এরপর অবাক হয়ে খেয়াল করলাম পুলিশ আমাদেরকেই আঘাত শুরু করলো। ইচ্ছা মত পিটিয়ে, টেনে হিঁচড়ে যখন আমাদের গাড়িতে তোলা হয় তখন ভাবছি পুলিশ আজ না জানি কোথায় নিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আমাদের রমনা থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ২ ঘন্টা পর যখন মামা আর বড় আপু এসে আমাদের ছুটিয়ে নিলেন আমাদের মাঝে ৪-৫ জন ভালো রকম আহত। বাসায় যখন ফিরলাম আর বাবার জানাজায় যাওয়ার অবস্থা রইলনা। বর্বরতম সমাজেও মনে হয় মানুষ এভাবে আচরণ করেনা। বাবাতো জান্নাতের ফার্স্টক্লাস টিকেট কেটে চলে গেলেন স্বার্থপরের মত। আমাদের ঘাড়ে বিশাল এই দায়িত্তের বোঝা বইবার শক্তি দাও হে আল্লাহ এই দোয়াই করি।
বিষয়: বিবিধ
১৯৪২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন