চলুন শিবিরের অস্ত্র ট্রেনিং শিখে নিইঃ ভয়ানক ছাত্রশিবির! ছাত্র শিবিরের গোপন ও ভয়ানক অস্ত্র!

লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ১৬ নভেম্বর, ২০১৩, ০১:৩৬:৫০ দুপুর



চলুন শিবিরের অস্ত্র ট্রেনিং শিখে নিইঃ ভয়ানক ছাত্রশিবির!

ছাত্র শিবিরের গোপন ও ভয়ানক অস্ত্র! ট্রেনিং ক্যম্পে যাব

কি যাবনা এই দ্বন্দ্ব ভুলে শিবিরের অস্ত্র দেখার খায়েসে, শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিলাম না অবশ্যই যাব। কারণ ট্রেনিং ক্যাম্পে না গেলে অস্ত্র দেখব কেমনে? এশার নামাযের পরে স্থানীয় এক

বাসায় শুরু হল ট্রেনিং ক্যাম্পের কার্যক্রম। শুরুতেই দারস-এ

কুরআন। সারাজীবন অনেক ওয়াজ মাহফিল শুনেছি কিন্তু দারসুল কোরআন কি তা জানা ছিলনা। যাইহোক শুনতে হবে ধৈর্য ধরে। এরা আবার কুরআনের নামে ব্রেন ওয়াশ করছে নাতো? শুনলাম মনমুগ্ধ হয়ে। সারাজীবনের ওয়াজ মাহফিলে যা শুনিনি তা শুনলাম দাড়ি গোফহীন ফুল প্যান্ট পরিধান করা প্রায় আমার সমবয়সি কিশোরের মুখে! মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে প্রতিটি হরফে, প্রতিটি পরতে কুরআনের কথা গুলো কেন যেন জীবনের

সাথে ফিট হয়ে যাচিছল। দারস শেষ হলে ভাবলাম ভালো ভালো কথার শেষে হয়ত আসল খেলা দেখাবে। রাত গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছিল আর একের পর এক আলোচনা চলছিল। ফাঁকে ফাঁকে চা বিস্কিটও ছিল। মুড়ি চানাচুড়ের কথা না হয় নাই বললাম। মধ্যরাতে দুই ঘন্টার জন্য বিরতী দিল এবং ঘোষণা হল শেষ রাতে বাকী কার্যক্রম হবে অন্য জায়গায়। সবাই ঘুমালো কিন্তু আমার ঘুম আসছিল না। কান খাড়া রেখেছিলাম অন্য কিছুর আওয়াজের আশায় কিন্তু তেমন কিছু কানে আসলানা। ভাবলাম শ্যালারা মনে হয় সর্বহারাদের চেয়েও হুশিয়ার। ঠিক রাত দুটায় সবাইকে জাগিয়ে দেয়া হল। ওযু করে সবাই প্রস্তুত, অতি সন্তর্পনে মার্চপাস্ট করে চলে গেলাম এক মসজিদের সামনে। মসজিদের কলাপসিপাল

গেট খুলে গেলে আমরা ভিতরে প্রবেশ করলাম। মনে মনে ভাবলাম হায়রে শিবির! ব্যাটারা অস্ত্র দেখাবি তো দেখা, তাই

বলে মসজিদের ভিতরে! আমার লক্ষ যেহেতু অস্ত্র দেখা তাই বেকুফ সেজে রইলাম এবং তারা যা আদেশ করছে অন্যান্যের সাথে আমিও তাই করছিলাম। সচরাচর আমরা মসজিদের যেখানে নামায পড়ি, সেখানে না নিয়ে মসজিদের তিনতলায় নিয়ে যাওয়া হল। উত্তেজনায় আমার কান গরম হয়ে গেল মসজিদের তৃতীয় তলায় সবাইকে কাতার বন্ধি করা হল যেমনটা নামাজে আমরা কাতার বন্ধি হই। ধির পদে আলখাল্লা পরিহিত এক ভদ্রলোক সামনে চলে গেলেন। আরে ইনি যে মসজিদের ইমাম সাহেব। তাহলে ব্যাটা ইমামতির ছদ্দাবেশে এই কাম করে!!! ঢিলে ঢালা জুব্বার আস্তিনের ভিতর থেকে এই

বুঝি অস্ত্রটা বেড়িয়ে আসছে, যখন এমন অপেক্ষায় ঠিক তখনই

তিনি কিবলামূখী হয়ে আল্লাহু আকবার বললেন। মনেমনে ভাবলাম হয়ত বিসমিল্লাহি আল্লাহুআকবার বলেই শুরু করবেন আসল খেলা। ঠিকই তিনি যথাসময়ে আসল খেলা শুরু করলেন। আমি যেহেতু নতুন তাই প্রথমে বুঝতে না পারলেও সবার তালে তালে, তারা যেরকম করছিল আমিও সেরকম শুরু করলাম। সে এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা। মনেহচ্ছিল আকাশে বজ্রপাত হচ্ছে, মসজিদের ছাদ ভেঙ্গে মেঘ খন্ডগুলো আমাদের মাথায় এসে পড়ছে! ইমাম সাহেবের তর্জন গর্জন যতই বাড়ছিল আদর্শের সৈনিকদের গোঙ্গানীও সমধিক হাড়ে বেড়েই চলছিল। কিছুক্ষণ পরে অনুভব করলাম এবার বজ্রপাত থেমে গেছে, মাথার উপর এসে পরা শিলা খন্ড গুলো গলতে শুরু করেছে। মসজিদের জায়নামাজ ভিজে যাচ্ছে। না রক্তে নয়, অস্ত্রের আগাতেও নয় বরং কুরআনের মধুর তেলাওয়াত আর সিজদায় কান্নায় রত প্রতিটি কর্মীর রোনাজারীতে!! শিবিরের অস্ত্র দেখতে এসে আল্লাহর কাছে শেষ রাতে ধরণা দিয়ে অশ্রু বিসর্জনের যে দৃশ্য সেদিন দেখেছিলাম সে স্মৃতি ভোলার নয়। দুনিয়ার সব অস্ত্র শিবিরের শেষ রাতের সেই অশ্রুর কাছে যে একদিন পরাজিত হবে সে বিশ্বাস আমার সেদিনই জন্মে ছিল। ''সাচ্চা ঈমানদার তো তারাই আল্লাহকে স্মরণ করা হলে যাদের

হৃদয় কেঁপে ওঠে৷ আর আল্লাহর আয়াত যখন তাদের সামনে পড়া হয়, তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা নিজেদের

রবের ওপর ভরসা করে৷'' যার প্রেরণায় শত বাঁধা উপেক্ষা করেও শিবির দেশের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে তাদের অবস্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছিল। মাঝখানে জোট আমলের

হালুয়া রুটি তাদের অশ্রু ঝড়া চোখে সানি পরেছিল কিনা জানি না কিন্তু আজকের কঠিন ময়দানে তারা যেভাবে টিকে আছে তাতে মনে হচ্ছে তাদের অশ্রু ভেজা সেই অব্যর্থ অস্ত্রগুলোর মরিচা দূর হয়ে আবার চকচকে ঝকঝকে সাদা হয়ে রুপালী ঝিলিক ছড়াতে শুরু করেছে।"

বিষয়: বিবিধ

১৬৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File