একটি রাত ! ইসলামী আন্দোলনের ভাইদের মনোবল! (দয়া করে পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে মন্তব্য করবেন)
লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১২:৫৫:৪৮ দুপুর
বিশ্বরোড সংলগ্ন একটি গ্রাম । উপজেলা থেকে মাত্র ১ কিঃ মিঃ দূরে অবস্থিত । গ্রামটিতে জামায়াত শিবিরে প্রভাব সর্বদাই বেশি আর সঙ্গত কারনেই বিরোধীপক্ষ একটু ভয়ে ভয়ে চলে । কারন উপজেলায় যেতে হলে এই গ্রামের উপর দিয়েই যেতে হয় । আর একই কারনে পুলিশ প্রশাসনের নজরদারি অনেক বেশি । এশার নামাজের পর পরই এই গ্রামের মানুষগুলো রাতের খাবার খেয়ে নেয় । তারপর চলে বিলের ধারে যাবার প্রস্তুতি । কাথা বালিশ কম্বল এই তাদের সম্বল । কি বৃষ্টি কি শীত তার পরেও হয়না বাড়িতে থাকা । কখনো কখনো যদি মাঝ রাতে যদি বৃষ্টি আসে তাহলে তো আর কিছু করার নেই । কাথা , বিছানা , বালিশসহ সবকিছু ভিজে জুবু থুবু বাড়ি আসতে আসতেই । কখনো বা হাটতে গিয়ে উল্টে পড়েন পানিতে আর তাতেই সব ভিজে যায় । ১৫ থেকে ৫০ বছর এর ভিতরে যারা আছে সবারি একই দশা । এলাকার জামাইরা তো আসা বাদই দিয়েছে । তারপরেও জামাই এলে দিনের মধ্যেই চলে যেতে হয় । নইলে রাতে থাকাথাকির টেনশন । সবাই জানে পুলিশ কোন না কোন মুহূর্তে অভিযান চালাতে পারে । আর এই রাত্রি যাপন চলছে ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে । আর কতদিন চলবে কেউ জানেনা । শুধু আল্লাহর উপর ভরসা । সেই দিন ১৮ তারিখ । কাদের মোল্লার ফাসির রায়ের প্রতিবাদে হরতাল চলছে । সারা দিন পুলিশ বিজিবির ব্যাপক টহল । কারন প্রশাসন জানে এখানে সাতজন শহীদ হয়েছে আর এর প্রতিশোধ জামায়াত শিবির নিবেই । আর এইদিকে গ্রামবাসি আরও বেশি সতর্ক । আজ তারা আরও তাড়াতাড়ি চলে যায় । আর ঐখান থেকে তারা সবাই রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে কি ঘটে দেখার জন্য । সবার একটিই চাওয়া পুলিশকে যেন পিটানো হয় । যেন পুলিশ মার খেলে তাদের মনে প্রশান্তি চলে আসে । আমি আশ্চার্য হয়ে দেখলাম , তারা যে এতদিন থেকে এভাবে আছে তাতে তাদের মনে বিন্দুমাত্র ক্ষোভ নেই বরং সরকারবিরোধী মনোভাব যেন দিন দিন তুঙ্গে উঠছে । নিজেরাই নিজেদের মধ্যে সরকারের অপকর্মের বর্ননা করছে আর একে অপরকে সাহস জোগাচ্ছে । তারা দেখতে কৃষক শ্রেনীর হলেও তাদের চিন্তাধারা সত্যি অবাক করার মত । ডিশলাইনের কল্যানে তারা মোটামুটি সব খবরই রাখে । হটাৎ করে রাস্তায় এক ভয়ঙ্কার কারবার শুরু হলো । আর জনগনের মাঝে শুরু হল এক উদ্দীপনা । যেন তারা এটাই চেয়েছিল । পুলিশ জামায়াত শিবিরকে রাস্তায় উঠতেই দিবে না আর এরা উঠবেই । কিন্তু পুলিশের মনোবাসনা পূর্ণ হলোনা । জামায়াত শিবিরকে তারা রুখতে পারলনা । এদের কৌশলের কাছে পুলিশকে নাজেহাল হতে হল । টানা দুই ঘন্টা চললো শিবির পুলিশ খেলা । শিবিরের ছেলেরা যে কি রখম সাহসী আর কৌশলি তা নিজ চোখে না দেখলে অনুভব করাই যাবে না । যাক রাত একটা বেজে গেল । রাস্তায় অতিরিক্ত পুলিশের মহড়া চলছে আর ততক্ষনে পিকেটিংকারিরা নিরাপদে । দূর থেকে রাস্তাটাকে মনে হল একটি শুন্য ময়দান । বিশ্বরোড কিন্তু একটি জনপ্রানীও নেই আছে শুধু পুলিশের ছোটাছুটি । এরপর এদিকে রাত চারটা পর্যন্ত চলে সাঈদী সাহেবের তাফসির , সংসদে বিভিন্নজনের ভাষন ইসলামী গান শোনা এবং খোশ গল্প । শেষ রাত হতে হতে কেউ কেউ ঘুমিয়ে পড়ে । যেদিন সমস্যা বেশি মনে হয় সেদিন চলে পাহারা দিয়ে রাত্রি যাপন । এরপর কেউ কেউ বাড়ি যায় আর অন্যরা ফজর পড়ে বাড়িতে ঘুমায় । চলছে প্রতিদিন একই নিয়ম কিন্তু আর কতদিন চলবে ? কেউ কি জানে এই দূর্দিনের শেষ কোথায় ?
বিষয়: বিবিধ
২৬৮৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন