যেভাবে শহীদ হলেন ইখওয়ানপ্রতিষ্ঠাতা হাসানুল বান্না
লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ০৯ জুলাই, ২০১৩, ১০:১৭:২৪ সকাল
সেদিন ছিলো ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯ , ইখওয়ানের প্রচুর
নেতাকর্মিরা জেলে । সরকারি বাহিনীর ফেরআউনি তান্ডবে অনেক
আত্মগোপনে । ইখওয়ানপ্রধান হাসানুল বান্না মুক্ত , তাকে সরকার
গ্রেফতার করছে না , আবার অভিযোগ থেকে মুক্তি দিচ্ছে না । তাই
উল্লেখিত তারিখে হাসানুল বান্না আপন শ্বশুড় আব্দুল করীম
মনসুরকে সাথে নিয়ে কায় রো শহরে একটি গাড়িতে উঠলেন । গাড়ি চলছে , তিনি লক্ষ করলেন সন্দেহভাজন মোটরসাইকেল
আরোহী তাকে অনুসরন করছে । তিনি এতে সতর্ক
হয়ে উঠলেন ...কিন্তু এরিমধ্যে এই আততায়ীরা এসে তাকে গুলি করে ,
গুলিটা তার শ্বশুড়ের গায়ে মারাত্মকভাবে লাগে ,
পরবর্তীতে আরেকটা গুলি তার নিজের গায়ে লাগে , ওটা প্রথমটার
মতো তেমন মারাত্মক নয় । এ অবস্থায় তাদেরকে হাসপাতালে যাওয়া হয় । তার শ্বশুড় সুস্থ হয়ে ওঠেন , কিন্তু
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরকারের নির্দেশে তার চিকিতসা গ্রহণ
করে নাই , তাই তিন ঘণ্টায় প্রচুর রক্তক্ষরণে তিনি শাহাদত বরণ
করেন । এভাবে বিনা চিকিতসায় শহীদ হলেন
কোটি কোটি অন্তরে বিপ্লবের প্রদীপ প্রজ্বলনকারী সেই চেতনার
বারুদ । এরপর পুলিশের কড়া প্রহরায় তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয় ।তখন তার সবভাইয়েরা কারাগারে । তাই নব্বইউর্ধ পিতা একাই
তাকে গোসল দেন । পুলিশ কাউকে কাছে ভীড়তে দেয় নি , গোসলের
পর তার পিতা পুলিশকে জানাযার জন্যে কিছু পুরুষলোককে আনার
কথা বলেন , কিন্তু নির্দয় পুলিশ সে অনুমতিও দেয়নি । তাই তিনি ঘরের
নারীদেরকে সাথে নিয়ে এই বৃদ্ধ বয়েসে ছেলের লাশ কাধে করে পাড়ার
মসজিদে যেখানে হাসানুল বান্না নামায পড়াতেন সেখানে নিয়ে যান । তারপর একাই জানাযার নামায আদায় করেন । অন্যদিকে পুলিশ
কাউকেই কাছে ভীড়তে দিচ্ছে না । যে কাছে আসতে চায়
সাথে সাথে তাকে গ্রেফতার করে , এরপর এক খৃষ্টান ব্যক্তির
সহায়তায় তার বৃদ্ধ পিতা তাকে দাফন দেন । এভাবেই সমাহিত হলেন
শতাব্দীর এক শ্রেষ্ঠ মহানায়ক !!! পরবর্তী অবস্থা আরো করুণ ।
পুলিশ পুরো এলাকায় কড়া নজরদারি শুরু করে , যাতে কেউ কালো পোষাক পরে শোক প্রকাশ করতে না পারে ,
মসজিদে মসজিদে শুরু হয় তল্লাশি যাতে কেউ ফরজ আদায়ের পর নফল
পড়ে তার জন্যে দুআ করতে না পারে ... এখন আসি আসল কথায় , আজ ফ্যাসিবাদি সরকার
বাংলাদেশে ইসলামি বিপ্লব দমাতে যেসব জুলুম-নির্যাতনের পথ
অবলম্বন করেছে । তাই বলে কি এদেশের ইসলামি বিপ্লব নিঃশেষ
হয়ে যাবে ? দেখুন না , প্রেসিডেন্ট জামাল আব্দুন নাসের শহীদ হাসানুল
বান্নার সাথে কী নিষ্ঠুর আচরণই না করল , তাই বলে কি মিসর
থেকে ইসলাম বিদায় নিয়ে নিল , নাসেরের পর আসল আনোয়ার সাদাত , তারপর হোসনি মোবারক ... তারপর কে আসল মিসরের শাসক হয়ে ?
হাসানুল বান্না মিসরের প্রতি ঘরে ঘরে বিদ্যমান ... নাসের , সাদাত ,
মোবারকের নাম কি আজ কেউ নিতে চায় ...
আজকের অপসারিত প্রেসিডেন্ট মুরসি হলেন সেই হাসানুল বান্নার মানসপুত্র ...অতএব সিসির বর্তমান কার্যকলাপে হতাশ হওয়ার কিছু আছে বলে আমি করি না ।
বিষয়: বিবিধ
৩২১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন