"সন্তানের শাহাদৎ বরণে আনন্দিত হেফাজত কর্মীর মা মর্জিনা বেগম"
লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ১০ মে, ২০১৩, ০১:১৭:৩৪ দুপুর
"আমার সন্তান কোরআনের হাফেজ সে শাহাদৎ বরণ করেছে এতে আমি আনন্দিত মহান আল্লাহর কাছে একটাই চাওয়া আমার আল্লাহ যেন কিয়ামতের মাঠে আমার সন্তানের সাথে সর্বপ্রথম সাক্ষাৎ করায়। ইসলামের জন্য আমার ১৭ বছরের সন্তান জীবন দিয়েছে এতে দুঃখ করার কিছুই নেই। বরং আমার গৌরব যে আমি শহীদের মা হতে পেরেছি। আমার শহীদ ছেলের জানাযায় শরিক না হওয়ার জন্য অনেক আলেম-ওলামায় কেরামদের বাঁধা দেয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে একান্ত আলাপকালে এসব কথা বলেন, ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে গিয়ে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের ছুরির আঘাতে নিহত সালথা উপজেলার ইউসুফদিয়া গ্রামের বাসিন্দা হাফেজ সাইদুর রহমানের মা মরজিনা বেগম।
এসময় মরজিনা বেগম আরো বলেন, আমার ৪টি ছেলে সবাই কোআনে হাফেজ-এর মধ্যে একজন চলে গেলেন মহান আল্লাহর কাছে। ১১ বছর আগে মারা যান আমার স্বামী সিরাজুল ইসলাম। তার মুত্যুর পর সংসারে নেমে আসে অভাব অনটন ৫ মেয়ে, ৪ ছেলের লেখাপড়া শিখাতে মরিয়া হয়ে উঠি কিছুদিন পর ছেলে মেয়েদের লেখাড়ার খরচের কিছু ভাগ নিতে আসেন আমার ভাই হাফেজ ইউসুফ আলী।
ইউসুফ আলী বলেন, সাইদুর রহমানের বাবা মারা যাওয়ার পর ওর লেখাপড়ার দায়িত্ব নেই আমি। প্রথমে সাইদুরকে ঢাকা নুরজাহান রোড বাইতুল ফজল মসজিদ মাদ্রাসায় ভর্তি করি। সেখান থেকে ও হেফজ শেষ করার পর একই মাদ্রাসার অংশ আলীয়াতে অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি করি। সেখানেই লেখাপড়া চলমান ছিলো সাইদুরের।
তিনি আরো জানান, রোববার ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে যৌথ বাহিনীর হামলার পর। সাইদুরের খোঁজ-খবর না পাওয়া গেলে সাইদুরের বোন সাবিয়া আক্তার ও সাবানা আক্তার খোজাখোজি শুরু করে। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজাখোঁজির একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাইদুরের ফাইল ছবি দেখে তার লাশ শনাক্ত করা হয়। রাতে সেখান থেকে আত্মগোপনে সাইদুরের লাশ নিয়ে আসা হয় গ্রামের বাড়িতে। আনার পর সাইদুরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের কোপের দাগ দেখা যায়। ধারণা করা হয় পুলিশের গুলিতে সাইদুরের মৃত্যু হয়নি, সন্ত্রাসীদের ছুরির আঘাতেই তার মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকালে সাইদুরের জানাজায় শেষে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
এদিকে লাশে চেহারা দেখে নিহতের চাচা সামচুল হক বলেন, নিহতর পর ওর নুরানী চেহারা হয়েছে ওকে আল্লাহ শহীদের দরজা দিয়েছে মনে হয়। নিহত হওয়ার তিন দিন পর লাশ দেখলাম মনে হলো এখন মারা গেছে সাইদুর, কারণ একটু পঁচন বা দুর্গন্ধ হয়নি। সাইদুর এমনভাবে নিহতের ঘটনায় পরিবারের দুঃখ প্রকাশ না থাকলেও এলাকাবাসীর মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
(বিঃদ্রঃ লেখাটি আমার না সংগৃহীত)
বিষয়: বিবিধ
১৩৩৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন