সন্তানকে উত্তম চরিত্রবান হিসেবে গড়ে তুলার দায়িত্ব তার পরিবারের
লিখেছেন লিখেছেন গনঅভ্যুত্থানের ডাক ০৩ জুলাই, ২০১৩, ০৯:৩৮:১১ সকাল
একটা সন্তানকে উত্তম চরিত্রবান হিসেবে গড়ে তুলার দায়িত্ব তার পরিবারের,তার বাবা মায়ের।আপনার সন্তানকে কিভাবে গড়ে তুলবেন এ দায়িত্ব শুধুই আপনার
এখন আপনি যদি তাকে নিয়ে শাহবাগ যান,তাহলে সে শাহবাগীদের মত করে বড় হবে।আর আপনি যদি তাকে ফুলকুড়ি আসরের প্রোগ্রামে নিয়ে যান,তাহলে সে ফুলের মত গড়ে উঠবে।
স্যরি,শাহবাগ এবং ফুলকুড়ি আসরের কথা বলাতে কেও আবার মাইন্ড করবেন না।আমি শুধু দু'টো যায়গার উদাহরন দিয়েছি। আপনার সন্তানকে ভালো কিংবা মন্দ হিসাবে গড়ে তুলার জন্য আমাদের সমাজে অসংখ্য স্হান রয়েছে। আপনাকে বেঁচে নিতে হবে আপনি আপনার সন্তানকে কোথায় নিয়ে যাবেন বা কোথায় পাঠাবেন। আপনার ঘরেও কিন্তু আপনার সন্তানের ভালো-মন্দ হওয়ার যথেষ্ট উপকরন রয়েছে।আপনারা বাবা মা কিন্তু সন্তানের আসল শিক্ষক।
আমি আবার আপনাকে মনে করিয়ে দিচ্ছি, আপনার সন্তানকে গড়ে তুলার দায়িত্ব আপনার।
আপনাদের দু'টি গল্প শুনাবো।
গল্প নাম্বার-১
প্যারিসে আমার পরিচিত কিছু পরিবার আছে যারা শরিয়তের বিধি নিষেধ যথাযত ভাবে পালন করেন। এবং বিভিন্ন ইসলামিক প্রোগ্রামে তাদের বাচ্চাদের নিয়ে হাজির হন।
একটা বাচ্চা প্রতিদিন তার মাকে দেখে হিজাব পরে ঘরের বাহিরে যেতে। একদিন সে তার মাকে প্রশ্ন করলো, আম্মু তুমি কেন এভাবে তোমার শরির কাপড় দিয়ে ঢেকে বের হও। অন্য মেয়েরা কেন এটা করেনা।
তার মা তাকে বলেছিলেন, অন্যরা অমুসলিম আর আমরা মুসলিম তাই আমরা এভাবে কাপড় পরি।আর আমরা থাকি অমুসলমান দেশে। বাচ্চাটা ছোট বলে এর চেয়ে বেশি কিছু বলার সুযোগ ছিলোনা।
গত ছুটিতে ঐ পরিবারের সবাই দেশে বেড়াতে যায়।ততদিনে বাচ্চাটাও একটু বড় হয়েছে।দেশে যাওয়ার পর বাংলাদেশের অন্যান্ন বেপর্দানশীল মহিলাদের দেখে বাচ্চাটা তার মাকে প্রশ্ন করেছিলো, মা বাংলাদেশের সব মহিলারাই কি অমুসলমান।বাংলাদেশ কি অমুসলমানের দেশ ?
ফ্যালফ্যাল করে তার দিকে চেয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো জবাব ছিলোনা।কেননা আমাদের দেশের বেশিরভাগ মহিলাদের যে অবস্তা!
গল্প নাম্বার-২
গত রবিবার আমি আমার ৬ বছর বয়সের ভাগনাকে নিয়ে বাংলাদেশ কমিউনিটি মসজিদে যাচ্ছি বাচ্চাদের একটা প্রোগ্রামে।
বাস থেকে নামার পর আমার ভাগনা আমাকে প্রশ্ন করে, মামা মানুষ কেন শয়তান হয় ?
আমি তার প্রশ্ন শুনে অবাক। এত ছোট একটা বাচ্চাকে কি উত্তর দেব। তাকে কৌতুহলবশত বললাম,তুমিই বলো। সে আমাকে বললো, শয়তান মানুষদের দেখে যাতে আপনারা সতর্ক থাকতে পারেন সেজন্য কিছু মানুষ শয়তান হয়।
সে আবার আমাকে প্রশ্ন করলো, মামা মানুষ কিভাবে শয়তান হয়।
আমি আবার তাকে বললাম, এটাও তুমি বলো।
সে বললো, আল্লাহ মানুষের জন্য দু'টি পথ রেখেছেন। এক পথে গেলে মানুষ শয়তান হয় । আর অন্য পথে গেলে মানুষ ভালো হয়। আল্লাহর কথা শুনে যারা তার পথে আসে তারা ভালো মানুষ হয়। আর যারা আসেনা তারা শয়তান হয়।
তার এ কথাগুলো শুনে আমি তাকে বুকে জড়িয়ে আদর করলাম। ভাবলাম সে এ কথাগুলো শিখলো কোথা থেকে। বাসায় এসে তার মা আর মামানিকে বললাম তার এই পান্ডিত্বপূর্ন কথাগুলো।জানতে পারলাম, তারা দু'জনে কুরআনের কিছু আয়াতের উপর আলোচনা করছিলো,যেখানে সেও তাদের সাথে বসা ছিলো।সে খুব মনোযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনেছে।
আমি বললাম, সে শুনেই কান্ত হয়নি, কথাগুলো সে তার অন্তরে গেঁথে নিয়েছে।
সম্মানিত পাঠক, আমার এ দুটো গল্প আপনাদের শুনানোর উদ্যেশ্য হলো, আপনি আপনার সন্তানের কচি মনে যা দিবেন সে কিণ্তু তার অন্তরে গেঁথে রাখবে। এক সময় এগুলো প্রস্ফুটিত হবে। আপনি যদি তার অন্তরে গোলাপের চারা রোপন করেন, তাহলে এই চারাটি এক সময় বড় হয়ে ফুল ফুটবে, গন্ধ ছড়াবে গোলাপের। আর যদি আপনি তার অন্তরে রজনীগন্ধার চারা রোপন করেন তাহলে গন্ধ ছড়াবে রজনীগন্ধার।
অতএব আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনার সন্তানের অন্তরে কি চারা রোপন করবেন, শাহবাগের চারা নাকি অন্য কিছু।
বিষয়: বিবিধ
১২৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন