নূরানীতে শেষ রাত

লিখেছেন লিখেছেন টিনটিন ২১ মার্চ, ২০১৩, ০২:১১:৪৫ রাত

রাত দুই টার মত হবে।সময় টা আন্দাজ করে লেখা।আংক করতে করতে পরার টেবিলেই ঘুমিয়ে পরেছিলাম। হঠাৎ দরজায় নক করার মত শব্দে ঘুম ভাঙে। ভাবলাম পাসের রুম এর ছেলেটা হবে হয়ত।

বলে রাখি দেশ এর বর্তমান পরিস্থিতির কারনে, আমি আমার রুম এর দরজা বাইরে থেকে তালা দিয়ে রাখি।এই বাসাটার বাথরুম গুলোতে দুটো করে দরজা। আর দুই রুম এর মাঝে হয়ায় এক রুম থেকে অন্ন রুমে বাথরুম থেকেও যাওয়া যায়।

ওভাবেই রাতে ঘুমানোর আগে রুম এ ঢুকি। ......

দরজায় নক করার শব্দ টা বেড়েই চলছে। আমি অনেক বিরক্ত হয়ে বলে উঠি ,

কে ??

ও পাশ থেকে অপরিচিত গলায়, , " আমি দরজা টা একটু খুলেন "

আনুমান করলাম দরজার ওপাশে দুই ,তিন জন লোক হবে। ওরা নিজেদের মধ্যে কথাও বলছিল। সরাসরি দরজা খলার উপায় নেই।তাই ব্যাপার টা কি দেখার জন্য বাথরুম থেকে ঢুকে পাসের রুম দিয়ে বের হই। পাসের রুমে কেউ এখন নেই তাই এই রুম এর দরজা আমি ই - লাগাই।

রুম থেকে বের হয়ে দরজার নিচ দিয়ে n , জানলার কাঁচ দিয়ে দেখলাম টর্চর আলো ঘোরা ফেরা করছে। সন্দেহ লাগল। তাই পাশের রুম এর ভাই দের ডাকার জন্য করিডোর দিয়ে যেতে থাকি, আর যায়ার সমায় জানলা দিয়ে দেখলাম আরও অনেক গুলো টর্চর আলো। ঘটনা বুঝতে আর বাকি রইল না।

দরজায় হালকা নক করতেই, টর্চের আলো আমার উপর এসে পরে। তখন ওখান থেকে ঘুরে বাথরুম এর দরজা দিয়ে ঢুকে ওদের দরজায় নক করি,এক বার যোরে ডাকও দেই। কোন সাড়া না পেয়ে ওখান থেকে বের হই। আর বের হয়ে একেবারেই অবাক হয়ে যাই পেছন দরজা খোলা দেখে । ভেজানো না, একেবারে ই খোলা । দরজার দুই কপাট দুই দিকে মুখ করা। তাহলে কি পুলিশ দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে গেছে। (পরে জানতে পারি ৩নং রুমের আজাদ ভাই পালায় যাওয়ার সময় এই দরজা খুলে রেখে যায়) ।

তখনি দেখলাম টর্চ হাতে একজন দরজার দিকেই আসছে। বুঝতে পারলাম সময় নেই, ওই খোলা দরজা দিয়ে ই এক দৌড় দেই। লকটার সাথে ধাক্কা লাগে । অপ্রস্তুত থাকার জন্যই বোধহয় পরে যায় সে, সাথে সাথেই চিৎকার ধর, ধর, ধর, ধর অনেক গুলো কণ্ঠে অনবরত...

পিছনে তাকানর সময় নেই আমি দৌড়ে চলে যাই কেয়ারটেকারের বাসার পিছনে । ওখান থেকে দেয়াল টপকে পাশের বাসার পিছন দিয়ে আর একটা দেয়ালের সামনে যাই ।

আমি নিশ্চিত ধরা পরবই । এত গুলো পুলিশ এর কাছ থেকে পালানো যায় নাকি। আর এই দেওয়াল টাই বা এত উঁচু কেন ।

টানা দুই তিনবার চেষ্টা করে উচু দেওয়ালটা পার হই । হাত , পা , মুখ কথাও বাকি নাই ছিলে যেতে।

ওখানে একটা ৫তলা বিল্ডিং Construction এর কাজ চলছিল ওটার। এখনও গেট লাগানো হয়নি ,দৌড়ে উঠে যাই ৫তলার ছাদে । নিচের সব কিছু স্পষ্ট দেখতে পারছিলাম আমি । দেখলাম পুলিশ এর খোঁজাখুঁজি চলছে । রাস্তায় ও অনেক গুলো পুলিশের গাড়ি ,একটা লেগুনা ,একটা পলিশ ভ্যান আর চার পাঁচটার মত C.N.G ।

জায়গাটা একদমই নিরাপদ লাগছে না।এভাবে খোঁজা খুঁজি চলতে থাকলে তো বেশি সময় লাগবে না আমার ধরা পরতে। নিচে নামাও বিপদজনক ,তাতে কারও চোখে পরার সম্ভাবনা আছে।আমি তখন পাইপ বেয়ে চিলেকোঠার ছাদে ওঠার সিন্ধান্ত নেই। উঠেও পরি।

হৃৎপিণ্ড টা শরীর থেকে বেরিয়ে পরবে এমন অবস্তা।সমানে দোয়া কালাম পরছি , আল্লাহ কে ডাকছি।

ভাবলাম ওরা যদি এদিকে এসেই পরে তাহলে বাচার শেষ চেষ্টা হিসাবে পানির ট্যাংকির ভেতর নেমে পরব ,অথবা পাঁচ তলার বেলকণীর উপর যে খালি জায়গাটুকু আছে ওখানে নেমে পরবো ।

এভাবে খানিক টা সোময় পার হয়, তার পর এক সময় দেখলাম বাসার সবাইকে পুলিশ ভ্যানে তোলা হল । খুবি খারাপ লাগলো তখন । নিজে পালিয়ে এসেছি স্বার্থপরের মতন। অন্তত একজন কে নিয়ে পালাতে পারলে এতটা খারাপ লাগত না ।

একটু পর পুলিশের গাড়িও চলে যায় । এবারের মত হয়ত বেঁচে গেলাম।

তখনও যানিনা কি অপরাধ আমাদের।কেনই বা এমন সাড়াশি অভিযান পুলিশের।

বাকি রাত টা এখানেই পার করে দেই...............

বিষয়: বিবিধ

১৩১৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File