এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের আগুনঃ এক বছরেও গ্রেফতার হয়নি চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা
লিখেছেন লিখেছেন লেখক ০৮ জুলাই, ২০১৩, ০৯:০২:১৩ রাত
সিলেটের শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের ধবংসলীলার স্মরনীয় দিন আজ
২০১২ সালের ৮ জুলাই শতবছরের ঐতিহ্যমন্ডিত এমসি কলেজে স্মরণকালের ভয়াবহ ধবংসযজ্ঞে মেতে উঠে সিলেটের ছাত্রলীগ নামধারী চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঐ দিন বিকালে ছাত্র শিবিরের সাথে সংঘর্ষের পর
সন্ধ্যায় এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে আগুন দেয় ছাত্রলীগ।
পুড়ে ছাই হয়ে যায় ৪টি ব্লকের ৪৮টি কক্ষ।
ঐতিহ্য পোড়াল ছাত্রলীগ : এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ধীরেশ চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, এমসি কলেজ ছাত্রাবাসটি ১২০ বছরের পুরনো। আর এই ছাত্রাবাসটির সবকটি ব্লকে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ। সবার চোখের সামনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল এমসি কলেজের ৯১ বছরের প্রাচীন ছাত্রাবাসের ৩টি ব্লক। নান্দনিক স্থাপত্যের সুবিশাল আয়তনের সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের সঙ্গে জড়িয়ে এ কলেজের সাবেক ও বর্তমান হাজার হাজার ছাত্রের আবেগানুভূতি। হোস্টেলের সামনে সুবিশাল মাঠ। খোলামেলা মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ। ৬টি ব্লকে ভাগ করা হোস্টেল ভবন। প্রতিটি ব্লক দৈর্ঘ্যে কয়েকশ’ ফুট লম্বা। এক ব্লক থেকে অন্য ব্লকের দূরত্বও অনেক। ৪র্থ ও ৫ম ব্লকের মাঝে রয়েছে ছাত্রদের গোসলের জন্য পুকুর। ছায়াঘেরা মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের এমন হোস্টেল বিরল। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো হোস্টেল ভবনের ভিন্নধর্মী স্থাপত্যশৈলী। স্থাপত্যকলার সংশ্লিষ্টদের মতে, সেমিপাক্কা আসাম টাইপের এত বিশাল ভবন কোথাও হয়তো এখন আর অবশিষ্ট নেই। ইতিহাস থেকে জানা যায়, সিলেটের স্বনামখ্যাত শিক্ষানুরাগী রাজা গিরিশ চন্দ্র রায় তার পিতামহ মুরারী চাঁদের নামানুসারে ১৮৯২ সালে স্থাপন করেন মুরারী চাঁদ কলেজ। শুরুতে ক’বছর কলেজের ব্যয়ভার বহন করেন রাজা নিজেই। এরপর তত্কালীন শিক্ষামন্ত্রী আবদুল মজিদ সিআইই’র প্রচেষ্টায় ব্রিটিশ সরকারের অর্থানুকূল্য পাওয়ায় কলেজটি ১৯২১ সালে স্থানান্তরিত হয় টিলাগড়ে অবস্থিত থ্যাকারে টিলায়। এ সময় কলেজের জন্য একাধিক একাডেমিক ভবন নির্মিত হয়। একই সময় কলেজের অদূরে নির্মিত হয় সুবিশাল এই হোস্টেলটি। প্রায় ২০ কেদার ভূমির ওপর নির্মিত হোস্টেলের ভবন, এর অঙ্গসজ্জা ও স্থাপত্যশৈলী যে কোনো দর্শনার্থীর দৃষ্টি কাড়ত। অসংখ্য নামজাদা ও কীর্তিমান ব্যক্তিত্ব যেমন এই হোস্টেলে থেকে অধ্যয়ন করেছেন, তেমনি অনেক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের পদধুলি পড়েছে এখানে। বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সিলেট সফরে এলে ১৩২৬ বঙ্গাব্দের ২১ কার্তিক একটি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেন এমসি কলেজ হোস্টেলে।
ধরা ছোঁয়ার বাহিরে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা:এমসি কলেজের হোস্টেল পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের মধ্যে কাউকেই এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করনি পুলিশ।ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী পংকজ,মিঠু,আলমগীর,তাজিম আজও ঘুরে বেড়াচ্ছে স্বাধীনভাবে।তাহলে কি ধরা ছোঁয়ার বাহিরেই থেকে কে যাবে সন্ত্রাসীরা?যারা ১২০ বছরের পুরনো ঐতিহ্য ধ্বংস করল তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কি কিছুই করার নেই?
বিষয়: রাজনীতি
১৩৬৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন