এক উড়ন চণ্ডীর গল্প

লিখেছেন লিখেছেন তিতুমির ০৪ মার্চ, ২০১৪, ১১:৪০:২২ সকাল

অনেক দিন আগের কথা , মনে হয় ফোর কিংবা ফাইভে পড়ি ।

ঢাকা নরসিংদির মাঝামাঝি মাধবদি একটা জায়গা আছে , তখন সেখানে থাকতাম , বাসস্টান্ডের সাথেই একটা হাই স্কুল আছে সেখানে পড়তাম , আর থাকতাম বাসস্টান্ডের সাথেই সড়ক ও জন পথের বাসায় , আব্বা ছিল ইন্জিনিয়ার ।

একদিন স্কুলে গেলাম , বন্ধুরা বলল , আজকে একটা ফুটবল মেচ আছে চল সবাই খেলা দেখে আসি , না বুঝেই রাজি হয়ে গেলাম , পড়ে জানলাম স্কুলের শেষেই যেতে হবে , হাফ ছেড়ে বাচলাম , আর যাই হোক স্কুল ফাকি দিতে হবে না । পড়ে স্কুল শেষে সবাই চলে গেল যার যার বাসায় , আর আমরা কয়েক উড়নচণ্ডী রওয়ানা হলাম ফুটবল মেচ দেখতে যদিও তখনো জানি ই না কোথায় খেলা , তাতে কী ? কী যে এক আকর্ষণে ছুটে যাচ্ছি মুগ্ধ পানে ! চিন্তাই করলামনা মায়ের কথা , যিনি স্কুল শেষে বসে থাকে আমার জন্য । তো যাক সেই কথা , আসা যাক আসল কথায় , স্কুলের পাশেই ছিল বাজার আর বাজারের পাশেই ছিল রেল স্টেশন , যেতে হবে রেলে , অপেক্ষা করতে লাগলাম রেলের জন্য , সে কী এক উত্তেজনা , সেই উত্তেজনার কারণে ভুলে গেলাম বাসার কথা , মায়ে র কথা ,অনেক পড়ে কাঙ্খিত রেল গাড়ি , রেল গাড়ি দেখে তো পিলে চমকে যাবার পালা , রেলের ভিতর বাইরে বাদুড় ঝুলা মানুষ আর মানুষ , কিন্তু তাতে কী ? আমরা তো সামনে যাবার জন্য , পিছনে তো যেতে পারি না ? এদিক সেদিক ছুটা ছুটি করতে লাগলাম একটু জায়গার জন্য , অবশেষে জায়গা পেলাম , রেলের দুই বগির মাঝের যে জায়গাতে জয়েন্ট থাকে সেখানে উঠে বসে পড়লাম , এক হাতে কিন্তু বই খাতা , আরেক হাতে কোনও রকমে ওই জয়েন্ট টা ছোট্ট হাতে আকড়ে ধরলাম , এভাবেই এক সময় পৌছলাম , এবং খুব খুব মজা করে খেলা দেখলাম ।

খেলা শেষে এবার বাসায় ফিরার পালা , আবার রেল গাড়ি আসবে ঐ জন্য করতে লাগলাম এবং আসল আর আসার সময় রেলের ভেতরে ই সিটে বসেই আসলাম মাধবদিতে রাত তখন আট টা হবে সিএইচআর দিকে গুট গুটে অন্ধকার একটু ভয় ভয় লাগতে শুরু করেছে সবে মাত্র । চিন্তায় তখন আসল বাসার কথা , স্কুল শেষ হয়েছে সেই তিনটায় এখন রাত আট টা , আম্মা তো নিশ্চয় পাগল হয়ে গেছে , আবার ভাবলাম , আরে মায়েরা ওই একটু পাগল হয় ই , এটা কিছু না , মজা টা ই আসল !

তো এখ কী করব ? এখন যদি যাই , একে বারে ই মেরে ফেলবে , বন্ধু তো পাশেই আছে , শেয়ার করলাম বিপদ নিয়ে , বন্ধু তো আরো সরস , সে চল আজকে আমাদের বাসায় , বাসায় যাবার দরকার নাই , আরো মজা অবে , মজাই মজা , মন আবার মজার আনন্দে বাসার কথা ভুলে ওর সাথে ওর বাসায় চলে গেলাম আর অনেক মজাই হল। বুঝতেও পারলাম না এই মজা মজা না , আরো মজা আছে । চিন্তা করলাম না মা বাবার কথা , যারা নিজেরা না খেয়ে আমাদের খাওয়ায় , আমাদের জন্যই ওদের সব চিন্তা ভাবনা । আজকে এত বছর পর ভাবি , আমার সন্তান এমন করলে তো আমি বাচতেই পারবোনা , আর ভাবলেই লোম খাড়া হয়ে উঠে , যাক সে কথা

পরের দিন ঘুম থেকে উঠে সুবোধ বালকের মত স্কুলে গেলাম , আর ওই দিকে আমার আম্মা আব্বা আমাকে খুজতে খুজতে স্কুলে এল আর আমাকেও পেয়েও গেল , আমি তখন উদের চোখে মুখে মায়া মমতা দেখলাম না যদিও সেটা থাকার কথা না , দুই জন ওই ক্লাস থেকেই কান ধরে টেনে হিচড়ে বাসায় আনলো আর চলতে লাগলো উত্তম মাধ্যম , চোর পিটান মাইর এবং দুইজনে মিলে কে যে ফার্স্ট , বুঝতে পারছিলাম না , আর মুখে বলতে ছিল , তর আর পর লেখার দরকার নাই , আজথেকে আর বাইরেই যেতে পারবিনা এই বলে আব্বা গেল নাপিত ডাকতে , একটু পড়ে এক তাগড়া লোক নিয়ে এল এবং সেই লোক আমার খাউরা মাউরা করে কেটে দিল যাতে এই চুল নিয়ে আমি বাইরে যেতে না পারি কারণ ছোট বেলা থ্কেই আমি একটু ফেসন সচেতন ছিলামতো আর সেটা আবার আমার আম্মা আব্বা না জানে , যেমন বুনো শুওর , তেমন ই বাঘা তেতুল ।

আজকে মনে হয় ,পৃথিবীতে খারাপ মানুষ আছে থাকবেও হয়তো কিন্তু খারাপ বাবা মা কখনো ই নয় । পৃথিবীতে সব সম্পর্ক ই ছিন্ন হতে পারে কিন্তু বাবা মায়ের সম্পর্ক ছিন্ন হয় না হবে না , সবাই চলে গেলেও বাবা মা ই থাকবে , সন্তানের জন্য , আমার আব্বা আজ নাই উনার জন্য এখন অনেক অনেক অনেক মায়া লাগছে । উনার হাতের মাইর এখন ও মনে হলে খুব খুব ভাল লাগে । সময় থাকতে মনা হুশিয়ার

বিষয়: বিবিধ

১২৭৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

186535
০৪ মার্চ ২০১৪ দুপুর ১২:১১
দ্য স্লেভ লিখেছেন : hehehehehe daroon laglo..
186599
০৪ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০২:২৬
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : ভাল লাগলো, ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য
186607
০৪ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০৩:০৬
তিতুমির লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
186760
০৪ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৩
সজল আহমেদ লিখেছেন : ভাল লাগল খুউউব।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File