সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর!!!
লিখেছেন লিখেছেন মেঘ বলেছে চৈত্রে যাব ০৭ মে, ২০১৩, ০২:০৪:১৭ রাত
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর!!!
পাঁচটা বেজে পাঁচ মিনিট।
মোবাইলে সময় দেখে নিল রম্য। সন্ধ্যা হতে আর বেশি দেরি নেই। আকাশটা পরিষ্কার আছে। কিন্তু গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আর এই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে রম্যর মাথা প্রায় ভিজেই গিয়েছে। যদিও তাঁর কাছে ছাতা আছে। এই ছেলেটার একটা বদ অভ্যাস আছে। বৃষ্টির মধ্যে কিছুক্ষণ মাথায় ছাতা ধরে আবার কিছুক্ষণ ছাতা মাথার উপর থেকে সরিয়ে নেয়। আজ সে বাসা থেকে জি ই সি, পুরো পথটাই হাতে ছাতা থাকা সত্ত্বেও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে ভিজেই এসেছে। হালকা স্পাইক করে রাখা চুল গুলো তাই বেশ তেল চটচটে মনে হচ্ছে।
পকেট থেকে রুমালটা বের করে চশমাটা মুছে নিল রম্য। একটা ব্যক্তিগত গাড়ির পাশে দাড়িয়ে গাড়ির জানালায় নিজেকে দেখে নিল একটু।
নাহ, দাঁড়ি কেটেই ফেলতে হবে। দেশের যা অবস্থা! এই খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি দেখলে পুলিশ আমাকে শিবির সন্দেহে ধরে নিতে এক সেকন্ডও দেরি করবে না। দাঁড়ি দেখে শিবির ধরা। কি বিচিত্র এই দেশ!
মনে মনে ভাবতে লাগল রম্য।
ক্যান্ডির পাশের দোকানটা থেকে একটা মার্লবোরো সিগারেট ধরিয়ে নিল। বৃষ্টির মধ্যে চা আর সিগারেট, ভালোই লাগে রম্যর কাছে। চায়ের ক্ষেত্রে টং দোকানের চা গুলোই তাঁর বেশি পছন্দ। স্যনমারের পাশের দোকান গুলোর মলটোভা দিয়ে বানানো চা হলে তো কোন কথাই নেই। কিন্তু এখন হাতে একদম সময় নেই। না হলে হেঁটে স্যানমারের পাশে চলে যেত। ক্যন্ডি থেকে স্যানমার কতটুকুই বা পথ!
- মামা, মুন্সি পুকুর পাড় যাবেন?
- হ মামা, যামু। মুন্সি পুকুরের কোন পাড়ে নামবেন?
- উত্তর পাড়ে। কত ভাড়া?
- পুইতিরিশ ট্যাকা।
- ত্রিশ টাকায় যাবেন?
- মামা, রাস্তায় ম্যালা ফানি উইঠছে। শইল্যে কুলায় না।
- আচ্ছা চলেন…
আরেকটা সিগারেট ধরিয়ে নিল রম্য। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির ফোটা গুলো একটু বড় বড় হয়ে ঝরছে। তবে মুষল ধারে বৃষ্টিহচ্ছে না। সিগারেটটা একটু ভিতরের দিকে রেখে রিক্সার সামনের পর্দাটা সরিয়ে দিল সে। বৃষ্টির গুড়ি গুড়ি ফোটা পায়ের মধে এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে। স্যান্ডেল খুলে ফেলল সে। একটু পাশে নিয়ে পা দুটকে ভিজাতে লাগল সে। সিগারেটে ফু দিচ্ছে আর ধোঁয়ার রিং বানিয়ে বৃষ্টির মধ্যে ছেড়ে দিচ্ছে।
প্রবর্তক পার হয়ে রিক্সাটা শেভরনের পথ দিয়ে না গিয়ে মেডিকেল রোড দিয়ে যাচ্ছে।
সিগারেট শেষ হয়ে গেছে। হাত দিয়ে বৃষ্টির ফোটার অনুভূতি নিচ্ছে রম্য। আবার মাঝে মধ্যে জিহ্বাটা বের করে বৃষ্টির ফোটার স্বাদ নিচ্ছে সে।
' মামা, রিক্সার হুডটা ফেলে দ্যান তো ', রম্য রিক্সাওয়ালাকে বলল।
মামা, বৃষ্টিতে ভিজ্যা যাইবেন তো।
ভিজলে ভিজব। আপনি হুড ফেলে দেন।
সাইরেন বাজিয়ে একটা এম্বুল্যান্স রিক্সার পাশ দিয়ে চলে গেল।
এই মেডিকেলের রাস্তাটায় আসলে রম্যর ভিতরে কেমন জানি নাড়া দিয়ে উঠে। অযথাই কতদিন এই মেডিকেলের করিডোরে হেঁটেছে সে। মন খারাপ হলেই মেডিকেলে এসে অর্থোপ্যাডিক, ক্যজুয়াল্টি কিংবা বার্ণ ইউনিটের কোরিডরে হাটা হাটি করে সে। অযথাই ওয়ার্ড গুলোর ভিতরে ঢুকে এইদিক সেইদিক তাকিয়ে রোগী গুলোকে দেখে নেয় সে। এমন ভাবে দেখে সে মনে হয় সব রোগী ই তাঁর পরিচিত।
অনেকদিন হয়ে গেল সে মেডিকেলে আসছে না। হয়ত খারাপ লাগা গুলো তাঁর শরীরের সাথে মানিয়ে গেছে।
বিষয়: বিবিধ
১৩২৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন