একটি বিশ্লেষন : শাহবাগের কর্মসূচীর উদ্যোক্তা বামপন্থি ও নাস্তিকরা
লিখেছেন লিখেছেন আমি মুসলমান ২১ মার্চ, ২০১৩, ০২:৪৫:০৬ দুপুর
শুরুতেই বামপন্থি ও ডানপন্থি সম্পর্কে একটু জেনে নেই। কমিউনিস্ট ও সমাজতান্ত্রিক চিন্তা চেতনার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা রাজনীতিকে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বিগত ৫দশক ধরে বাম রাজনীতি বলা হয়। আর যারা এই রাজনীতির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অংশীদার বা সমর্থক তারা বামপন্থি। বাম রাজণতিতে ধর্মের কোন স্থান নেই। আর মোটা দাগে ডান রাজণীতি বলা হয় পুজিবাদের অনুসারী বা পাশ্চাত্যের গণতন্ত্রের অনুসারী বা ধর্মীয় মুল্যবোধের চেতনার অনুসারী রাজনীতি কে। যারা এধরনের রাজনীতির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অংশীদার বা সমর্থক তারা ডানপন্থি
শাহবাগের অবস্থান কর্মসূচীর উদ্যোক্তারা সকলেই বামপন্থি। বলে রাখা ভাল যে শাহবাগে সংঘটিত আচার-অনুষ্ঠান শুধুমাত্র একটি অবস্থান কর্মসূচী বৈ কিছু নয়, এটি কোনভাবেই কোন প্রকার আন্দোলনের পর্যায়ে পড়েনা। কেননা কোন রকম বাধা ছাড়া কখনও কোন আন্দোলন সংঘটিত হয়নি হতেও পারে না। এটি পুথিগতভাবে ও ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত ও প্রমাণিত। এটিকে আন্দোলন বললে প্রকৃত অর্থে যাবতীয় আন্দোলনকে শুধু খাটোই করা হবে। প্রকৃতপক্ষে এটি বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের ইশারায়, জণজীবন দূর্বিসহ করে, বৃহত ৩টি হাসপাতালের সকল রোগীদের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত করে, প্রখর পুলিশি নিরাপত্তায়, খাদ্য-পাণীয় সরবরাহের মাধ্যমে, সরকারী গণশৌচাগারের সেবায় ও অংশগ্রহনকারীদের মাঝে অর্থ বিতরনের মাধ্যমে সংঘটিত একটি সরকারী অবস্থান কর্মসূচী মাএ। উদ্যোক্তারা নামে, পারিবারিক পরিচয়ে, সণদপত্রে অধিকাংশেই মুসলমান। যদিও মুসলমান কখনই বামপন্থি হতে পারে না তথাপিও তারা বামপন্থি। নেতৃস্থানীয় সকল নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সময়ে বক্তৃতা বিবৃতিতে একথাই বলেন যে ধর্মীয় চিন্তা চেতনাকে রাজনীতি থেকে, সমাজনীতি থেকে সম্পুর্নরূপে বাদ দিতে হবে। যেটি বাম রাজনীতির অন্যতম প্রধান কথা। বাম রাজণীতিতে দলীয় ভাবে, সমাজনীতিতে, রাষ্ট্রীয়ভাবে ধর্মের কোন স্থান নেই। ধর্মীয় কোন বিষয়কে দলীয়ভাবে গ্রহন করা, সমাজনীতিতে স্থান দেয়া, রাষ্ট্রীয়ভাবে গ্রহন করা বা প্রতিষ্ঠিত করা বামপন্থিদের নীতি বিরুদ্ধ। একই সাথে বামপন্থিদের চরিত্র হল ধর্মের ব্যাপারে যারা তাদের সাথে দ্বিমত পোষন করবেন তাদেরকে স্তব্ধ করে দেবার প্রণান্তকর চেষ্টা করা। শাহবাগের অবস্থান কর্মসূচীর উদ্যোক্তারা একটি বিশেষ দাবীকে সামনে রেখে খুব সুচারু রুপে বাম রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করার আপ্রান চেস্টা করে যাচ্ছেন। দাবীটিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তারা এটাও বলছেন যে ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হোক ইত্যদি ইত্যাদি। যদিও প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে তারা ঠিক খোলস পাল্টানর মত করে বলছেন যে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবী তারা নাকি করেননি। বাংলাদেশের ধর্মপ্রান মুসলিম জনতা ধর্মের বিরোধী এধরনের আবদারে প্রবল প্রতিক্রিয়া পকাশ করার কারনেই তারা হঠাৎই ভোল পাল্টে ফেললেন।
পরবর্তী কথা বলেছিলাম যে উদ্যোক্তারা নাস্তিক। সংগত কারনেই প্রশ্ন আসবে যে কিভাবে তারা নাস্তিক? প্রকৃতপক্ষে নাস্তিক হল তারাই যারা সৃষ্টিকর্তাকে বিস্বাস করে না। মোটা দাগে, বাংলাদেশে প্রচলিত অর্থে যারা আল্লাহকে সৃষ্টিকর্তা, রব বা মালিক হিসেবে মানেনা তারা নাস্তিক। এখন লক্ষ করুন কারা এই শাহবাগের কর্মসূচীর উদ্যোক্তা? ব্লগার এন্ড অনলাইন এক্টিভিস্ট নামের আড়ালে আসীফ মহীউদ্দীন, অমি রহমান পিয়াল, আহমেদ রাজীব হায়দার, আরিফ জেবতিক, ইমরান এইচ সরকার প্রমুখ ব্যাক্তিবর্গ। তথ্য-প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারনে তাদের সকলের পরিচয় সকলেরৈ কাছেই পরিস্কার। প্রথম ৩জন তো স্বঘোষিত নাস্তিক এবং তারা বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে, বিভিন্ন ব্লগে তাদের লেখনির মাধ্যমে তা তুলে ধরার আপ্রান চেস্টা করেছেন। মুসলিমদের মত নাম দিয়ে কখনই তাদেরকে অন্য সকল মুসলিমদের মত করে ভাববার অবকাশ নেই কারন তসলিমা নাসরিন, আহমদ শরীফ, সালমান রুশদি এসকল নামও শুনতে মুসলমানই মনে হয় কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। এ বিষয়টি অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে মুসলমান হতে হলে অবশ্যই আস্তিক হতে হবে। নাস্তিক হয়ে মুসলমান সাজার কোনই সুযোগ নেই।
এবার আসি যারা শাহবাগের কর্মসূচির সাথে একাত্মতা ঘোষনা করেছে তারা কি সবাই নাস্তিক আর বাম? এক কথায় উত্তর হল না সকলেই তা নয়, কিছু সংখ্যক ব্যক্তি বাম ও নাস্তিক। কিন্তু যে সকল নামাজি মুসলিম ভাইয়েরা তাদেরকে সমর্থন করছেন তারা কি একবারও ভেবে দেখেছেন যে একটি নির্দিষ্ট দাবীকে ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করে তারা ইসলামের বিরোধিতা করছে, যে সকল নাস্তিকরা মহান আল্লাহ, রাসুল (সা, ইসলাম নিয়ে কটুক্তি করেছে তাদেরকে সমর্থন দিয়ে চলেছে, শহীদ উপাধী ও দেয়া হচ্ছে, এই কটুক্তির বিরুদ্ধে যারাই কথা বলছে তাদেরকেই রাজাকার বলা হচ্ছে, এমনকি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকি কেও রাজাকার বলতে দ্বিধা করছে না। সন্মানিত আল্লামা আহমেদ শফিকে নিয়েও কটুক্তি করতে তাদের বাধেনি। তারা আমাদের ধর্মীয় অনূভুতিতে আঘাত করবে, কিন্তু আমরা মুসলিমরা তার প্রতিবাদ করতে পারব না, যেই প্রতিবাদ করবে সেই হবে রাজাকার। এমনই তাদের কথা। এসব কিসের আলামত, ভেবে দেখেছেন কি?
সর্বশেষ বলতে চাই যে, বামপন্থি, নাস্তিকেরা কেউই মুসলমানদের বন্ধু হতে পারে না, মুসলমানদের কল্যানকামী হতে পারে না। যদি কখনও দেখা যায় যে তারা মুসলমানদের বন্ধু হতে চাইছে তবে সাথে সাথেই বুঝে নিবেন যে আমাদের বড় কোন ধরনের ক্ষতি করার পরিকল্পনা আছে তাদের।
বিষয়: বিবিধ
১০৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন