নামাজী মুসলিম ভাইদের প্রতি আহবান
লিখেছেন লিখেছেন আমি মুসলমান ২১ মার্চ, ২০১৩, ১১:৫২:৩৫ সকাল
শুরুতেই বলে নেয়া ভাল যে আহবানটি শুধু মুসলিম ভাইদের প্রতি না হয়ে নামাজী মুসলিম ভাই কেন বললাম। সিয়াহ সিত্তার অন্যতম গ্রন্থ সহীহ তিরমিযী শরীফেরর একটি হাদীসের প্রতি মনোযোগ আকর্ষন করছি সকলে “নিশ্চই মুসলমান ও কাফিরের মধ্যে পার্থক্যকারী হল নামাজ” সোজা কথায় মুসলমান হতে হলে অবশ্যই নামাজ পড়তে হবে। কিন্তু আমাদের দেশে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা নামাজ পড়েন না কিন্তু দাবী করেন যে তিনারা মুসলিম। তিনারা নামে, পারিবারিক পরিচয়ে সকল স্থানেই নিজেদেরকে মুসলিম হিসেবেই পরিচয় দেন। কিন্তু এ হাদীস অনুযায়ী মুসলমান কারা তা পরিস্কার।
আমরা পৃথিবীর ২য় বৃহত্তম মুসলিম দেশের নাগরিক। কিন্তু আজ রাজনৈতিক চালের মারপ্যাচে আমরা এমন এক পরিস্থিতিতে এসে উপনীত হয়েছি যে পূর্বের মতই দেশের ৮৫-৯০% জনগন মুসলিম হওয়া সত্তেও অতি অল্প কিছু সংখ্যক নাস্তিকেরা মহান আল্লাহ, রাসুল (সা ও ইসলাম সম্পর্কে অকথ্য ভাষায় কটুক্তি করে চলেছে। আর আমাদের সরকার তাদের সহযোগিতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে চলেছে, যদিও সরকার জনসাধারণের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ হয়েছে। এমনকি কোথাও কোথাও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনির হাতেই সাধারন মানুষ প্রান হারাচ্ছে। এই ধর্মীয় বিষেদাগারের বিরুদ্ধে যারাই কথা বলছে সরকার তাদেরই কঠোর হস্তে দমনে ব্যাস্ত রয়েছে।
শাহবাগের এই কর্মসূচী শুরুর অনেক আগে থেকেই এসকল নাস্তিকরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাদের কুকর্মগুলি চালিয়ে এসেছে। এগুলো অনেক আগেই আদালতের নজরে এসেছে এবং আদালত BTRC ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনিকে ইন্টারনেটের এসকল সাইটগুলোকে নিয়ন্ত্রনের নির্দেশও দিয়েছিল। কিন্তু কিজানি এক অদৃশ্য ইশারায় আদালতের এই আদেশকে তিনারা বৃদ্ধাঙ্গুলি করে নাস্তিকদেরকে তাদের অপকর্মগুলি চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। আর এসকল নাস্তিকরাই শাহবাগের কর্মসূচীর হোতা তথা উদ্যোক্তা।প্রশ্ন আসতে পারে এসকল অপকর্ম অনেক আগে থেকে চললেও শাহবাগের কর্মসূচী শুরুর পর থেকে কেন এগুলো প্রচার করা হচ্ছে? উত্তর হল যে অপকর্মগুলি অনেক আগে থেকে চললেও অধিকাংশ মানুষই তা জানত না, আমিও জানতাম না। শাহবাগের কর্মসূচীটি যখন ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্টদের নামে চালান হল, এবং দাবী করা হল যে তারা কোন রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছেন না তখনই সকলেই উৎসুক হল যে এই আসীফ মহীউদ্দিন, অমি রহমান পিয়াল, আরিফ জেবতিক, ইমরান এইচ সরকার, আহমেদ রাজীব হায়দার প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ কারা, কি তাদের কার্যক্রম? শুরু হল খোঁজ নেয়া, এবং সকলের পরিচয় ও কৃতকর্ম বের হওয়া শুরু হল একেক করে। দেখা গেল উদ্যোক্তাদের অধিকাংশই স্বঘোষিত নাস্তিক এবং তারা তাদের সকল মেধা ব্যায় করে মহান আল্লাহ, রাসুল (সা ও ইসলামের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনায় ব্যাস্ত। এরপরই তাদের কুকর্মগুলি সকলের আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠল। কারন সবকিছুর উপরে হল আমরা মুসলমান। আমরা এমন সব ব্যাক্তিবর্গকে কিভাবে সমর্থন দেব যারা আমাদের ধর্মের মুলে আঘাত করেছে।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে কিছু নামাজী মুসলিম ভাই এসকল নাস্তিকদেরকে সমর্থন দিয়েছেন। তবে আমি এব্যাপারে সম্পূর্ন নিশ্চিত যে তিনারা এই বিষয়গুলোকে এত গভীর ভাবে ভেবে দেখেননি। আজ আমাদের সময় এসেছে এই বিষয়গুলি ভেবে দেখার। একদিকে নাস্তিকদের ধর্মের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা অন্যদিকে ইমরান এইচ সরকার কতৃক নাস্তিক হিসেবে তাদের স্বীকারোক্তি। এ অবস্থায় আমরা মুসলিমরা নাস্তিকদের কোন কার্যক্রমকে সমর্থন করতে পারি কিনা। আরো লক্ষনীয় বিষয় হল যখনই কেউ এই নাস্তিকতার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তখনই তাকে শাহবাগের ঐ মঞ্চ স্বাধীনতা বিরোধী ও রাজাকার বলে আখ্যায়িত করেছে। এমনকি শুধূমাত্র তাদের মতের সাথে ঐক্যমত পোষন না করলেই তারা তাদেরকে রাজাকার বলে আখ্যা দিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকিকে নিয়ে কটুক্তি করতেও পিছপা হয়নি তারা। সন্মানিত আল্লামা আহমেদ শফী যখন এসকল নাস্তিকতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন, নাস্তিকদের প্রতিহতের ঘোষনা দিলেন, তখন শাহবাগের এই মঞ্চ তার বিরুদ্ধে বিষেদাগার শুরু করল। সম্পূর্ন রাজনৈতিক পরিচয় মুক্ত এই আলেমে দ্বীন যখনই নাস্তিকদের বিরোদী কোন কর্মসূচী দিয়েছেন তখনই শাহবাগের এই মন্ঞ তা প্রতিহত করার ঘোষনা দিয়েছে।
তবে কেন নাস্তিকদের পক্ষে এই মন্ঞের অবস্থান? তাদের মুল দাবীর সাথে নাস্তিকদের প্রতিহত করার তো কোন সম্পর্ক নেই। উদ্যোক্তারা নামে অধিকাংশ মুসলিম হলেও কেন তারা ইসলাম বিদ্বেসী এ সকল নাস্তিকদের পক্ষ নিচ্ছেন? আমার-আপনার-তাদের সকলের ধর্মই যদি ইসলাম হয় তবে আজ আমার-আপনার দর্মীয় অনুভুতি ইসলামকে অবমাননা করার কারনে যেভাবে ব্যথিত হচ্ছে তাদের কেন তা হয় না? তার কারন একটাই নাম তাদের মুসলিমদের মত হলেও ধর্ম বিস্বাস তাদের সকলেরই ঐ আসীফ মহীউদ্দিন, আহমেদ রাজিব হায়দার দের মতই। তাদের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে যুদ্ধাপরাদীদের ফাসির দাবীর আড়ালে তারা বাংলাদেশকে একটি ধর্মহীন দেশে পরিনত করতে চায়, যেখানে ইসলামী রীতিনীতির কোন মুল্য থাকবেনা।
সুতরাং একজন সচেতন নামাজী মুসলিম নাগরিক হিসেবে অবশ্যই আমাদের এটি ভেবে দেখতে হবে যে আমরা কাদেরকে কি উদ্দেশ্য সাধনে সহযোগিতা তথা সমর্থন করছি? এতে আমরা আমাদের মুসলমানিত্বের দাবীর সাথে সামন্জস্যপূর্ন কাজ করছি কিনা।
এমতাবস্থায় আমরা কাদেরকে সমর্থন করব? ধর্মের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনাকারী, অপমানকারী, ধর্মহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় রত বাম-রাম-নাস্তিক ঐ ব্লগার এন্ড অনলাইন এক্টিভিস্টদের? নাকি ধর্মের অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থানগ্রহনকারী আলেমে দ্বীন আল্লামা আহমেদ শফীর আন্দোলনের প্রতি?
বিষয়: বিবিধ
১১৮৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন