ধর্মনিরপেক্ষ নয়, ইসলামী রাষ্ট্র চাই
লিখেছেন লিখেছেন আমি মুসলমান ০৫ এপ্রিল, ২০১৩, ১২:০০:৩৭ রাত
ধর্মনিরপেক্ষ বলে যে কথাটি আমাদের সমাজে চালু আছে প্রকৃতপক্ষে আমরা অধিকাংশ মানুষই ভুল বুঝি। সরকারী কোষাগারের বিপুল অর্থ ব্যায়ে, মন্ত্রী-আমলাদের প্রানান্তকর প্রচেস্টার ফলে, প্রচার মাধ্যমের কল্যানে আমাদের এটাই বোঝান হচ্ছে যে, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে সকল ধর্মের মানুষের ধর্মীয় কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে সমঅধিকার নিশ্চিত করা। এ দাবীর উপর ভিত্তি করে আমাদের মন্ত্রী-আমলারা ঈদ উৎসবে যেমন বানী দেন, তেমনি পুজা-অর্চনা বা বড়দিনেও বানী দেন। নিজেদের ধর্ম ইসলাম বলে দাবী করলেও অন্য ধর্মাবলম্বিদের সকল ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের সাথে সহমত পোষন করে আসেন। আর জনগণকে এটাই বোঝাতে চান যে তিনারা যে ধর্মেরই হোন না কেন, সকল ধর্মের প্রতি তাদের অনুভূতি সমান। এটি কতই না মহৎ কাজ(!)।
এভাবেই ধর্মনিরপেক্ষ কথাটির ভুল ব্যাখ্যা উপস্থাপন করা হচ্ছে আমাদের সামনে। নিরপেক্ষ কথাটির অর্থ হল কোন পক্ষেই নয়। তাই ধর্মনিরপেক্ষ কথাটির অর্থ হল কোন ধর্মেরই পক্ষে নয়। আর যদি সকল ধর্মের পক্ষে হয় তবে তা কোন ভাবেই ধর্মনিরপেক্ষ হল না বরং তা সকল ধর্ম সমপক্ষ বা অন্য কোন শব্দ ব্যাবহার করা যেতে পারে। এ কারনেই ধর্মনিরপেক্ষ বলে প্রচলিত কথাটি তার প্রচারিত ব্যাখ্যার সাথে সামন্জস্যপুর্ন নয়। প্রকৃতপক্ষে ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মহীনতারই আরেক নাম। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের কাজ হল সমাজ তথা দেশ থেকে যাবতীয় ধর্মীয় নিয়ন্ত্রনাদী সম্পূর্নরুপে উৎখাত করা। তাদের চেস্টা থাকে যে প্রত্যেকটি ধর্মকে শুধুমাত্র উপাসনালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা। উপাসনালয়ের বাইরে ধর্মের কোন স্থান তারা সহ্য করতে পারেননা। কিন্তু উদ্বেগজনক ব্যাপার হল যে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা ইসলাম ধর্মের কার্যকলাপ সীমাবদ্ধকরনে যতটা আগ্রহী অন্য ধর্মের ব্যাপারে তা নন। সারা পৃথিবী জুড়েই ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের এহন আচরন স্পস্ট। বাংলাদেশেও এর ব্যাতিক্রম নয় যদিও এদেশে এসকল ব্যাক্তিবর্গ নাম ও সামাজিক পরিচয়ে মুসলিম হবার দাবী করেন।
ইসলামের সাথে অন্য সকল ধর্মের কিছু নীতিগত পার্থক্য রয়েছে। অন্যান্য ধর্মের মত ইসলাম শুধুমাত্র কতগুলি নির্দিষ্ট ধর্মীয় আচার অনুস্ঠান পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ইসলাম হচ্ছে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যাবস্থা। এবং একজন মুসলমান হিসেবে আমরা প্রত্যেকে এটি স্বীকার ও বিস্বাস করেই নিয়েছি যে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের একমাত্র প্রভু, হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) আমাদের নবী ও আল-করআনে বর্ণিত সকল বানীসমুহ নিঃসন্দেহে সত্য ও অবশ্য পালনীয়। এ বিস্বাস ও স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে রাসূল (সাঃ) এর বিদায় হজ্জের সময় বর্নিত এ বানী ও আমরা মানি যে, আল্লাহ বলেন “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে (জীবন ব্যাবস্থাকে) পরিপূর্ণ করলাম, তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামতকে সম্পুর্ন করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য একমাত্র জীবন ব্যাবস্থা হিসেবে মনোণীত করলাম” (সুরা-মায়িদা, আয়াত-৩ )। এ আয়াতের দ্বারা একথাই কি পরিস্কার হয়না যে, মুসলমান হিসেবে আমাদের সমাজনীতি, রাস্ট্রনীতি, অর্থনীতি সর্বপরি জীবননীতি সবই হতে হবে ইসলাম অনুযায়ী তথা আল-কুরআন অনুযায়ী। ধর্মানিরপেক্ষতা হল সরাসরি এর বিরোধিতা এবং জেনে হোক বা না জেনে হোক যারাই এই সকল বিষয়ে ইসলামের বিধান মানতে বিরোধিতা করছেন তারা সকলেই প্রকৃতপক্ষে কুরআনের নির্দেশেরই বিরোধিতা করছেন। সুতরাং চিন্তা করার বিষয় যে একজন মুসলমান হিসেবে আমরা কেউ এই ধর্মনিরপেক্ষতাকে সমর্থন করতে পারি কিনা, আর তা করলে আমাদের মুসলমান হবার দাবীর যৌক্তিকতা থাকে কতটুকু।
তাই আসুন আমরা ইসলাম জেনে পরিপুর্নভাবে ইসলামে দাখিল হই, আর ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ধর্মহীনতা প্রতিষ্ঠার চক্রান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাড়াই।
বিষয়: বিবিধ
১১৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন