তুই নষ্টা, তুই ভ্রষ্টা, তুই সুখে থাক । আমি মারা যাচ্ছি……….
লিখেছেন লিখেছেন হরিলুট ২১ মার্চ, ২০১৩, ১১:০৯:২১ রাত
“তুই নষ্টা, তুই ভ্রষ্টা, তুই সুখে থাক । আমি মারা যাচ্ছি” এই ছিল আমার পিনিকের (মাল খাওয়ার) দোস্ত, ছোটবেলার ঘনিষ্ট বন্ধু আমার সুমন কাকার শেষ কথা ।
একটি সপ্নের মৃত্যু ঘটে সেদিন, যেদিন থেকে সুমনের রিলেশন হয় তার প্রিয়তমা রিক্তার সাথে । সুমন যাকে আদর করে ডাকতো মনি বলে । সুমনের বাবার সপ্ন ছিল তার একমাত্র সন্তান সুমন বড় হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে সংসারের দায়িত্ব নিবে । অল্পশিক্ষিত মানুষের খুব সাধারন একটি সপ্ন । কিন্তু আজ সপ্ন নেই, সব ফিনিশ, ঢিশমিশ, সব শেষ । সুমন কাকা দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে নরকে চলে গেছে । মানুষ আত্মহত্যা করলে তো নরকেই যায় ।
সুমন-রিক্তা আমাদের ছোট জেলা শহরের অনেক পপুলার একটা জুটি ছিল। ওদের রিলেশনের ব্যাপারটা সবাই জানতো
। তাই ওদের অনেক উচ্ছৃঙ্খল যত্রতত্র ঘোরাফেরা এলাকার সবাই মেনে নিত, কেউ কিছু মনে করতো না । কয়েক বছর প্রেম করার পর ওরা কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করে ফেলে । সুমনের পরিবার বিষয়টা মেনে নেয়, কিন্তু রিক্তাদের দিক থেকে তাৎক্ষনিক বিষয়টা কেউ মেনে নেয় না । পরে অবশ্য রিক্তাদের দিক থেকেও মেনে নিয়েছিল ।
সংসার জীবন শুরুর পর সুমন এলাকায় ব্যাবসা শুরু করে । সপ্ন দেখতে থাকে সুখী সংসারের । কিন্তু রিক্তার অন্যায় চাওয়া পাওয়ার কাছে তার সেই সপ্ন, সপ্নই থেকে যায় । বিয়ের পর রিক্তার চাহিদা অনেক বেড়ে যায়, আজ এটা লাগবে, কাল ওটা লাগবে । প্রিয়তমা রিক্তা মনির চাহিদা
পূরন করতে করতে সুমনের ব্যাবসার অবস্থা খারাপ হতে থাকে । বাড়তে থাকে সংসারের অশান্তি। মাদকাসক্ত হয় সুমন । আমার ছোটবেলার ঘনিষ্ট বন্ধু আমার আরোও ঘনিষ্ট হয় পিনিক করার সুবাদে । আমি আগাগোড়াই নষ্ট ছেলে (এখন না), কিন্তু সুমনের সেই শুরু, শুধুমাত্র তার প্রিয়তমার কারনে । এগুলো জীবনের অংশ, মানুষের জীবনে এরকম কত কী ঘটে, তাই বলে কী জীবন থেমে থাকে ।
থেমে থাকেনি রিক্তার জীবনও । শুরু হয় নতুন লীলা । রিক্তা অনৈতিক সম্পর্কে জড়ায় আমাদেরই কিছু ভাই ব্রাদারের সাথে । একটি নয় তিনটি নাগর ধরে, প্রমানও হয়, স্বীকারও করে তিনজনের সাথে অনৈতিক সম্পর্কের কথা । পৃথিবীর কোন স্বামী মেনে নিতে পারে না এই বিষয় । তারপরও আমরা
সবাই মিলে সুমনকে বুঝিয়ে রাখি। রিক্তা কথা দেয় এরকম কাজ আর কখনোও করবে না ।
কিন্তু হায় কেথায় কি….. সে তো বেশ্যা, আবার ধরা খায় সুমনের কাছে । ঘটনার দিন রিক্তা চলে যায় বাবার বসায় । সুমন আমার সাথে পিনিক করে রাতে বাসায় যায় । রাতে আমাকে ফোন দিয়ে বলে কাকা আমার ব্যাপক পিনিক হইছেরে, আর কোনদিন পিনিক খামু না, আর মাগীর কথা চিন্তাও করমু না । আমি পিনিকে ছিলাম তাই পিনিকে ওকে বলি বজান ওহন ঘুমা কাইল কতা কমু । এটাই সুমনের সাথে
আমার শেষ কথা । ঐ রাতে ও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে ।
পরদিন রিক্তার বোন আমাকে বলে, “সুমন মারা যাওয়ার আগে রিক্তাকে ফোন দিয়ে বলে, তুই নষ্টা, তুই
বেশ্যা, তুই সুখে থাক । আমি মারা যাচ্ছি……..
সুমন মারা যাওয়ার আগে চিঠি লিখে যায়- আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় । হায়রে প্রেমিক, হায়রে প্রেম । সুমন তোর স্থান নরকে । তুই ঠুনকো মাগীর কারনে তোর বাবার খুব সাধারন একটি সপ্ন পূরন করে গেলি না । তুই ধ্বংস হ, তুই ধ্বংস হ, তুই ধ্বংস হ,
আজ আমার বাজান সুমনের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী । সবাই প্রান খুলে দোয়া করবেন যেন সুমন নরকেও জায়গা না পায় । আর সুমনের প্রানপ্রিয় প্রিয়তমা রিক্তা ওরফে মনি ওরফে তুই নষ্টা ওরফে তুই বেশ্যা যেন সারাজীবন সুখে থাকে ।
বিষয়: বিবিধ
১৫৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন