চলমান ইসলামী চেতনা ও ঐক্যের বন্ধন যেন অটুট থাকে।
লিখেছেন লিখেছেন পান্থ নজরুল ১২ এপ্রিল, ২০১৩, ০৭:২২:৩২ সকাল
বাতিলের মূর্তিমান আতঙ্ক হযরত আমিনী (র.) এর মরণের পর আসলে মরণ নয় সরকার কর্তৃক তাঁকে তিলে তিলে অত্যাচার-নির্যান করে মেরে ফেলার পর হতাশাগ্রস্ত হৃদয়ে ভাবতে ছিলাম, ইহুদী-নাসারাদের মানসপুত্র ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক-মুরতাদদের বিরুদ্ধে সিংহের মতো গর্জে উঠবে কে? কে রণ হুঙ্কার দিয়ে তাদের হৃদয়ে কাঁপন ধরাবে? কে শাসক গোষ্ঠীর রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে মুসলমানদের অধিকার আদায়ে হযরত তিতুমীর (র.) এর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে?
আমাদের ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে মহান রব্বুল আলামীন মধ্যাহ্ন গগণের ঝলমল সূর্যের মতো বাংলার আকাশে উদীয়মান করলেন, হযরত আল্লামা আহমদ শফী (দা.বা.) কে। বাংলাদেশে বহুধা বিভক্ত আলেম সমাজ তাঁর ডাকে হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে যেভাবে একতাবদ্ধ হয়েছে। যেভাবে গা ঝাড়া দিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। নিরাশায় দুদল্যমান মুসলিম সমাজে যেভাবে আশার আলো সঞ্চারিত করেছে নিকট অতীতে এমন ঐক্যবদ্ধ জাগরণ আমাদের চোখে পড়ে নি।
আশির দশকে আমীরে শরীয়ত হযরত হাফেজ্জী হুজুর (র.) এর ডাকে বাংলার আলেম সমাজ ঠিক এভাবে জেগে উঠেছিল। ইসলামী হুকুমত কায়েমের জন্য গোটা আলেম সমাজ সে দিন ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আলেম সমাজের জাগরণ দেখে সে সময় তাগুতি শক্তি বিপদ টের পেয়ে প্রমাদ গুণতে শুরু করেছিল। কিন্তু অল্পকালের মধ্যে সম্মানিত আলেমগণ দৃষ্টি কটু সংকীর্ণতার পরিচয় দিয়েছিলেন। তাদের বিশ্রী বিভক্তি আর দলাদলি দেখে লাখো লাখো আলেম ভক্ত সাধারণ জনগণ ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ে মুষড়ে পড়ে ছিল। তবুও আমরা আশা ছাড়ি নি। আলেম সমাজ একই ময়দানে একত্রিত হবে, আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল (সা.) এর দুষমনদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে গর্জে উঠবে এমন আশা সবসময় মনের গহীনে জাগরুক রেখেছি।
আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের আশা পূরণ হতে চলেছে। এ জামানার সালাহ উদ্দিন আইয়ূবী হযরত আহমদ শফী (দা.বা.) এর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ওলামায়ে হক তাদের এলেমের হক আদায় করছেন বলে মনে হচ্ছে। তবে এখনো হাজারো ওলামা-মাশায়েখ, পীর-দরবেশ এ মহাজাগরণে সক্রিয় হয় নি। আল্লারওয়াস্তে দ্বীনের খাতিরে সব ভেদাভেদ ভুলে কালবিলম্ব না করে সবাইকে এ জামাতে শরীক হয়ে নিজ নিজ যোগ্যতা অনুযায়ী হক আদায় করতে হবে। এ স্বতস্ফুর্ত জাগরণকে বৃথা হতে দেয়া যায় না। পাড়ায়-পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায় ইউনিট ঘটন করে সর্বস্থরের মুমিনকে বাতিলের বিরুদ্ধে সক্রিয় করে তুলতে হবে।
ওলামায়ে হকের শানদার দরবারে আমাদের আশা চলমান একতা এবং ভ্রাতৃত্বের সুকঠিন প্রাচীর যেন নিছক হীন স্বার্থে ভেঙ্গে না পড়ে। কোনো শয়তানী শক্তি যেন ভয় দেখিয়ে বা প্রলোভনের ঘূর্ণাবর্তে ফেলে পথভ্রষ্ট করতে না পারে। আমরা দেখেছি এরশাদ শাহীর জামনায় রাষ্ট্রীয় খরচে হজ্বর করানোর প্রলোভন দেখিয়ে ওলাময়েকেরামগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে ফাটল সৃষ্টি করা হয়েছিল! সুতরাং ঈমানী চেতনায় বলিয়ান হয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ, সংঘবদ্ধ এবং ভ্রাতৃত্বের সুদৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। এ অভূতপূর্ব ঐক্যকে দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর করতে হবে। আর যদি কারো অবিমৃশ্যকারীতার জন্য কিংবা মুনাফেকীর জন্য চলমান ঐক্যবদ্ধতায় ফাটল ধরে তাহলে তাঁকে উম্মতে মুহাম্মদি ক্ষমা করবে বলে মনে হয় না। আদালতে আখেরাতেও তাকে জবাব দেহি করতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন