হাদীস মানবেন নাকি সুন্নাহ মানবেন
লিখেছেন লিখেছেন সঠিক ইসলাম ২০ জুলাই, ২০১৫, ০৯:০৪:৫৪ রাত
যারা সুন্নাহ ও হাদীসের মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন না...
অনেক ক্ষেত্রে মূল হাদীসের তরজমায় "সুন্নাহ" লিখে পাশে ব্র্যাকেটে "হাদীস" দিয়ে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায়। হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদীসে সুন্নাহ আঁকড়ে ধরে আহলে সুন্নাত হওয়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে, তবে হাদীসের উপর আমল বা অনুসরণ করার কথা কোথাও বলা হয়নি। আহলে হাদীস ভাইগণ একটি হাদীস পেশ করতে পাবেন না যে রাসূল সা. উম্মতকে হাদীস মজবুত করে আঁকড়ে ধরতে বলেছেন।
► আহলে সুন্নাত ও আহলে হাদীসের সংজ্ঞা
ইসলামী ইতিহাসে একটি গোষ্ঠী রয়েছে যারা নিজেদের ‘আহলে কুরআন’ বলে আরেক গোষ্ঠী দাবী করে তারা ‘আহলে হাদীস’ আর আমরা বলি আমরা ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত’।
যারা ‘আহলে কুরআন’ তারা কুরআনের পরে অন্য কিছু মানে না তাই তারা হাদীসও মানে না।
যারা ‘আহলে হাদীস’ তারা কুরআন ও হাদীস পর্যন্ত মানে সুন্নাহ-সাহাবা ইজমা কিয়াস মানে না।
আর আমরা কুরআন সুন্নাহ, সুন্নাতে সাহাবা তাবেঈন, ইজমা, কিয়াস মানি বিধায় আমরা “আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ”।
আমরা সবাই কুরআন ও হাদীসের পার্থক্য জানি বুঝি কিন্তু অনেকে আমরা হাদীস ও সুন্নাহর মাঝে কী পার্থক্য তা জানি না।
এ বিষয়টি জানার উপরই নির্ভর করে যেকোনো মুসলমান ‘আহলে হাদীস’ হতে পারে না । হ্যাঁ, আহলে সুন্নাহ হওয়া অপরিহার্য।
► হাদীস ও সুন্নাহর পার্থক্য
হাদীস: চারটি বিষয়ের সমন্বয় হলো হাদীস-
১। রাসূল সা. তাঁর জীবনে যা কিছু বলেছেন।
২। রাসূল সা. তাঁর জীবনে যা কিছু করেছেন।
৩। রাসূল সা. যে সকল বিষয়কে সমর্থন করেছেন।
৪। রাসূল সা. এর ব্যক্তিগত অবস্থা ও গুনাবলী।
এ চারটি বিষয়ের সমন্বিত রূপকে পরিভাষায় হাদীস বলা হয়।
সুন্নাহ: সুন্নাহ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো পথ। কুরআন, হাদীস, ফিকহের পরিভাষায় ভিন্ন ভিন্ন অর্থ থাকলেও হাদীসের পরিভাষায় সুন্নাহ শব্দের অর্থ হলো-الطريقة المسلوكة في الدين. মুসলমানদের জন্য অনুস্মরণীয় দীনের পথের নাম সুন্নাহ।
কুরআনে কারীমে এসেছে- قل هذه سبيلي ادعو الي الله. বলুন এটা আমার পথ আমি মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকি। (ইউসুফ:১০৮)
সারকথা উম্মতের জন্য অনুসরণীয় রাসূল সা. এর পথকে হাদীসের ভাষায় সুন্নাহ বলা হয়েছে।
সুতরাং হাদীস এবং সুন্নাহ শব্দ দুটি পরস্পর পরিপূর্ণরূপে স্বতন্ত্র বা বিরোধী নয় আবার সমার্থকও নয় ; বরং উভয় শব্দ কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে অভিন্ন অর্থাৎ কোনো কোনো জায়গায় হাদীস পাওয়া যায় কিন্তু সুন্নাহ থাকে না, আবার কখনো সুন্নাহ পাওয়া যায় কিন্তু হাদীস থাকে না। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে হাদীস ও সুন্নাহ একই সাথে বিদ্যমান।
কোনো কোনো বর্ণনা বা কাজকে শুধু হাদীস বলা যায়, কিন্তু সুন্নাহ নয় - এমন বর্ণনার প্রকার তিনটি:-
(ক)
যেসব বর্ণনা, কাজ এক সময় শরীয়ত হিসেবে গৃহীত ছিল কিন্তু পরবর্তিতে তা রহিত হয়ে গেছে এগুলো হাদীসের আওতায় পড়ে কিন্তু সুন্নাত নয়। কারণ সুন্নত হলো উম্মতের জন্য অনুস্মরণীয় কাজকে বলে এগুলোর বিধান রহিত হয়ে যাওয়ায় তা আর অনুস্মরণীয় থাকে নি।
যেমন:
# এক সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে – توضئوا مما مست النار‘‘”
অর্থাৎ আগুনে রান্না করা বস্তু খাওয়ার পর তোমরা অযু কর। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এ বিধান আমাদের শরীয়তে বহাল থাকে নাই বরং রহিত হয়ে গেছে। তাই এটা হাদীস বলে মেনে নিতে হবে কিন্তু সুন্নত নয়।
# ইসলামের প্রথম যুগে মাসবুক ব্যক্তি মুসল্লিকে জিজ্ঞাসা করে জানতো কতো রাকাত তার ছুটে গেছে অতঃপর প্রথমে সে ছুটে যাওয়া রাকাত আদায় করে নিতো তারপর জামাতে শরীক হতো। হযরত মু’য়ায রা. একবার এর ব্যতিক্রম করলেন তিনি প্রথমেই জামাতে শরীক হলেন অবশিষ্ট নামায ইমামের সালাম ফেরানোর পর পড়লেন রাসূল সা. তা দেখে জিজ্ঞাসা করলেন তিনি উত্তরে বলেন হুজুর আপনার জামাত ছেড়ে আলাদা একাকি নামায পড়া পছন্দ হয়নি। এ পরিপ্রেক্ষিতে রাসূল স. বলেন- إنّ معاذا سنّ لكم سنة فاتبعواها‘‘”
মু’য়ায তোমাদের জন্য একটি সুন্দর পথ রচনা করেছে তোমরা এই পথ অনুস্মরণ করো। বুঝা গেল প্রথম পদ্ধতিটা শুধু হাদীস কিন্তু সুন্নাত নয় মু’য়ায কতৃক আমলটিকে রাসূল সুন্নাত বলেছেন কারণ এটা অনুস্মরণীয় পূর্বের বিধান রহিত হওয়ায় তা সুন্নত বলা যায় না।
সারকথা, অনেক হাদীস হাদীসের কিতাবে সংরক্ষিত আছে কিন্তু এগুলোর বিধান রহিত হয়ে গেছে তাই এগুলোকে হাদীস তো বলতেই হবে কিন্তু সুন্নাত বলা যাবে না। সুন্নাত হচ্ছে ঐসব হাদীসের বিপরীত যেগুলো এসেছে সেগুলো যা চিরকাল অনুস্মরণীয় ও পালনীয়।
(খ)
যেসব হাদীস নবীজীর সাথে খাস/ নির্দিষ্ট। যেসব হাদীস নবিজীর সাথে নির্দিষ্ট অন্য কারো জন্য তা পালনীয় নয়। নিঃসন্দেহে এগুলো হাদীস তবে সুন্নাত নয় কারণ উম্মতের জন্য তা অনুস্মরণীয় নয় ।
যেমন:-
বিবাহর ক্ষেত্রে চারের কোনো শর্ত রাসূলের জন্য ছিলো না। এ কারণে রাসূল সা. এর ঘরে একই সাথে নয়জন স্ত্রী একত্রিত হয়েছেন এটা রাসূল সা. এর কাজ তাই নিঃসন্দেহে তা হাদীস তবে সুন্নাত নয়। উম্মতের জন্য অনুস্মরণযোগ্য আমল হচ্ছে এক সাথে চারজনের বেশী স্ত্রী রাখার অনুমতি নেই সুতরাং উপরোক্ত রাসূলের আমলটি অনুস্মরণীয় নয় বরং এটা নবিজীর সাথে খাস বা নির্দিষ্ট। এ সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে –
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَحْلَلْنَا لَكَ أَزْوَاجَكَ ……………… مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ (سورة الاحزاب: ৫০)
হে নবী আমি আপনার জন্য আপনার বিবিগণ (যার সংখ্যা ৯) কে হালাল করেছি এই বিধান কেবলই আপনার জন্য। অন্য মুমিনের জন্য নয় (আহযাব-৫০)
(গ)
রাসূল সা. বিশেষ কোনো কারনে/ প্রেক্ষিতে কোনো কথা বলেছেন বা কাজ করেছেন উম্মতকে সাধারণ অবস্থায় তা অনুস্মরণ করার অনুমতি দেয়া হয়নি। তাই এগুলি অবশ্যই হাদীস কিন্তু সুন্নত নয়।
যেমন-
# মাগরিবের নামাযের পূর্বে নফল পড়া সুন্নত নয় বরং যাওয়া মাত্র যদি এর দ্বারা মাগরিবের নামায বিলম্বিত না হয় ।
حدثنا أبو معمر حدثنا عبد الوارث عن الحسين عن ابن بريدة حدثني عبد الله المزني : عن النبي صلى الله عليه و سلم قال ( صلوا قبل صلاة المغرب ) . قال في الثالثة ( لمن شاء ) . كراهية أن يتخذها الناس سنة . (صحيح البخاري: ৬/২৬৮১، رقم: ৬৯৩৪)
অর্থাৎ কেউ পড়তে চাইলে পড়তে পারবে কিন্তু তা সুন্নাত নয়।
হাদীসটি এসেছে একটি মাসআলা বুঝানোর জন্য তাহলো আসরের ফরযের পর নফল পড়ার নিষিদ্ধতা সূর্যাস্ত পর্যন্ত সূর্য ডোবার সাথে সাথে নফল মাকরূহ হওয়ার বিষয়টি আর অবশিষ্ট থাকে না সুতরাং এখন যদি কেউ সূর্যাস্তের পর নফল পড়তে চায় তাহলে পড়তে পারে তবে এসময় নফল পড়া সুন্নাত নয় তাই রাসূল সা. এবং খোলাফায়ে রাশেদাও মাগরিবের পূর্বে নফল পড়তেন না। বুঝা গেলো হাদীসটি এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে বর্ণিত হয়েছে তাই নিঃসন্দেহে হাদীস কিন্তু সুন্নাত নয়। হ্যাঁ সাহাবাগণ পরবর্তিতে মসজিদের খুঁটির আড়ালে দাঁড়িয়ে তা পড়তেন এর দ্বারা বৈধতাই বুঝায় সুন্নাত নয়।
# তেমনিভাবে দাঁড়িয়ে পেসাব করা হাদীস তবে সুন্নাত নয় । কেননা হাদীসে এসেছে রাসূল সা. জীবনে একবার এক পতিত দেয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে পেসাব করেছেন তাই এটা অবশ্যই হাদীস কিন্তু সুন্নত নয়। সুন্নত হচ্ছে বসে পেসাব করা। কারণ নবিজী সা. সর্বদাই বসে পেসাব করেছেন। একবার দাড়িয়ে পেসাব করে তিনি বুঝাতে চেয়েছেন স্থানটি আবর্জনাযুক্ত হওয়ার কারণে অথবা শারীকিক কোন সমস্যার কারণে বসতে অসম্ভব হলে তাব জন্য দাঁড়িয়ে পেসাব করার বিধান আছে।
# ঋতুকালীন স্ত্রীর সঙ্গ হওয়া হাদীস তবে সুন্নত নয়। হাদীসে আছে রাসূল সা. আয়েশা রা. কে ঋতুকালীন সময়ে কাপড় জড়িয়ে তার সাথে শুয়ে পড়তে বলেছেন। এটা হাদীস এ মাসআলা বুঝানোর জন্য বর্ণিত হয়েছে যে, কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে-
وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّى يَطْهُرْنَ. (البقرة: ২২২)
তোমরা ঋতুস্রাবকালে স্ত্রী সঙ্গম বর্জন কর এবং পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রীদের নিকটে যেয়ো না। (বাকারা-২২২)
নিকট যেয়োনা কথাটা কিছুটা অস্পষ্ট এর ব্যাখ্যার প্রয়োজনে রাসূল সা. হযরত আয়েশা রা. কে সঙ্গে শুয়ায়ে বুঝালেন এতটুকু রাখা বৈধ। অবৈধ হচ্ছে সঙ্গম করা।
# সন্তান কোলে নিয়ে নামায পড়া হাদীস তা সুন্নাত নয়। হাদীসে এসেছে রাসূল সা. তার নাতনীকে কোলে নিয়ে জীবনে একবার পুরো নামায পড়িয়েছেন। সিজদার সময় মাটিতে বসিয়ে দিতেন উঠার সময় কোলে তুলে নিতেন নিঃসন্দেহে এটা হাদীস জীবনে একবার এ কারণে তা করেছেন যাতে কোনো উম্মতের ক্ষেত্রে বাচ্চাকে পাশে রেখে নামায পড়া কোনো পরিস্থিতির কারণে অসম্ভব হয়ে পড়লে সে যেন বাচ্চা কোলে নামায আদায় করতে পারে। তাই বলে এটা সুন্নত নয় যে সকলেই সাওয়াবের আশায় বাচ্চাকোলে নিয়ে নামায আদায় করবে এবং এ হাদীসকে সবসময় অনুস্মরণ করবে।
# উচ্চ শব্দে আমীন বলা হাদীস দ্বারা প্রমাণীত তবে সুন্নাত নয় সুন্নাত হচ্ছে নিম্ন শব্দে আমীন বলা। হযরত ওয়াইল স্বশব্দে আমীন বলার বর্ণনাকারী তিনি ইয়ামান থেকে মদীনায় আসেন ২০ দিনে রাসূল সা. এর সঙ্গে প্রথম কাতারে নামায পড়েন। ২০ দিনে জাহারী নামাযের সংখ্যা দাড়ায় ৬০ ওয়াক্ত, হাদীসের বর্ণনায় মাত্র তিন বার আমীন স্বশব্দে আমীন বলেলেন এতে কী বুঝাতে চেয়েছেন? ‘কিতাবুল আসমা ওয়াল কুনাতে’ আল্লামা দাওলাবী বর্ণনা করেন যে, হযরত ওয়াইল স্বয়ং কারণ উল্লেখ করেন যে,
ما اراه الا ليعلمنا. (كتاب الاسماء والكنت)
আমার ধারণা রাসূল সা. স্বশব্দে (তিন ওয়াক্ত) আমীন বলেছেন আমাকে শেখাবার উদ্দেশ্যে غير المغضوب عليهم، ولاالضالين. আমীন বলতে হয়।
সুতরাং প্রমাণ হলো যে আমীন স্বশব্দে বিশেষ উদ্দেশ্যে বলা হয়েছিল তাহলো নতুন সাহাবীকে শিক্ষা প্রদান এতে জায়েয প্রমাণীত হলেও সুন্নাত প্রমাণীত হয় না। এ কারণে হানাফী ইমামগণ নিম্নস্বরে পড়াকে সুন্নত বলেছেন। যদিও স্বশব্দে পড়াও জায়েয তবে চিৎকার করে রাসূল আমীন বলেননি যা বর্তমানে তথাকথিত “আহলে হাদীসরা”করে থাকে।
► সারকথা:
তিন ধরনের বর্ণনা/ রেওয়ায়েতকে কেবল হাদীস বলা যায় তবে সুন্নাত বলা যায় না। যথা-
(১) যে সকল হাদীস মানসূখ ও রহিত হয়েগেছে।
(২) যে সকল হাদীসের সম্পর্কে কেবলই রাসূল সা. এর সাথে নির্র্দিষ্ট।
(৩) যে সকল কথা বা কাজ রাসূল সা. কর্তৃক সম্পাদিত হয়েছে বিশেষ কোন কারণ বসত কিংবা কোন মাসআলা বুঝানোর উদ্দেশ্যে।
► এবার দেখা যাক যেসব বিষয় কেবল সুন্নাত তবে হাদীস নয়
খোলাফায়ে রাশেদীনের পথ কর্ম সিদ্ধান্তসমূহ এগুলো সুন্নাত তবে হাদীস নয় কারণ হাদীসতো রাসূল সা.-এর ‘কথা, কাজ, সমর্থন’ কে বলে এগুলোতো সাহাবায়ে কিরামের ‘কাজ, কথা’ এ অর্থে হাদীস বলা যায় না কিন্তু সকল উম্মতের জন্য এগুলি অনুস্মরনীয় বিধায় এর অন্তর্ভুক্ত তাই এগুলো সুন্নাত।
এমর্মে রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন
عليكم بسنتي وسنة الخلفاء الراشدين المهديين تمسكوا بها وعضوا عليها بالنواجذ.
তোমাদের (উম্মত) উপর আমার সুন্নাত এবং সত্য পথ প্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নতের অনুস্মরণ অবশ্য কর্তব্য। তোমরা এ সুন্নাতকে শক্তভাবে আকড়ে ধর।
মোট কথা, চার খলীফার সিদ্ধান্ত ও কর্মগুলো শুধু সুন্নত হাদীস নয়।
যেমন:
# খলীফা আবু বকরের সুন্নত: যেমন-
* যেসব মুসলমান কেন্দ্রীয় সকরারকে যাকাত দিতে অস্বীকার করেছিল তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন কেননা যে সকল বিষয় ইসলামের প্রতীক যদিও তা সুন্নাতের স্তরে পড়ে। যদি তা কোনো গোষ্ঠী একসাথে বর্জন করে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা বৈধ এটা সুন্নতে সিদ্দিক রা.।
* যেমন খৎনা করা, আযান দেয়া সুন্নত তবে ইসলামের নিদর্শন হওয়ায় কোনো গোষ্ঠী তা একসাথে বর্জন করলে সরকার যুদ্ধ করে হলেও তা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।
* তেমনিভাবে জিবদ্দশায় পরবর্তী খলীফা নির্বাচন করা সিদ্দিকী সুন্নাত।
# খলীফা ওমর রা. এর সুন্নত: যেমন-
* এক মজলিস বা একই শব্দে প্রদত্ত তিন তালাক তিন তালাক বলেই বিবেচিত হবে যদিও তা তাকীদের নিয়তে বলার দাবী করা হোক।
* ইরাক যুদ্ধের পর সে জমি-জমা মুজাহিদদের মধ্যে বণ্টন না করে বাইতুলমালে জমা করে এতিম দুস্থদের প্রদানের সিদ্ধান্ত।
* মুসলিম রাষ্ট্রে চুক্তিবদ্ধ অমুসলিমদের কর বা জিযিয়ার পরিমাণ নির্ধারণ করণ।
* তারাবীর নামায জামাতের সাথে বিশ রাকাত পড়ার সিদ্ধান্ত এসবগুলো সুন্নতে ওমরী। তবে হাদীস নয়।
# খলীফ উসমান রা. এর সুন্নাত: যেমন-
* জুমআর নামাযের পূর্বে একটি আযান বৃদ্ধি করণ।
* কুরআনুল কারীম কুরাঈশদের ভাষায় এ নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে মতভিন্নতা ও বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় উসমান রা. আবার সকলকে কুরাইশী ভাষার উপরে দাঁড় করিয়েছেন। এগুলো উসমানী সুন্নত।
# খলীফা হযরত আলী রা. এর সুন্নত: যেমন-
* যেমন মুসলামানদের মধ্যে যদি পরস্পরে লড়াই বাধে তাহলে বিজিতদের সম্পদ গনীমতের সম্পদ বলে বিবেচিত না হওয়ার সিদ্ধান্ত এবং বন্দিরাও হবে না দাস-দাসী যেমনটি কাফেরদের সাথে যুদ্ধ হলে তাদের মাল হয় গণীমতের অন্তর্ভুক্ত বন্দিরা হয় দাস- দাসী। এবং এ বিধানটি জামাল যুদ্ধের ঘটনাতে পরাজিতদের মধ্যে আম্মাজান হযরত আয়েশা রা. অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত হয়।
মোটকথা: খোলাফায়ে রাশেদীনের আমলে গৃহীত এসব সিদ্ধান্ত ও কর্মপন্থা এই উম্মতকে এবং ইসলামী শাসন ব্যবস্থাকে সুশৃংখল ও সুগঠিত করার লক্ষে নেয়া হয়েছিলো যা ছিলো হাদীসের দৃষ্টিতে অপরিহার্য।
► আহলে হাদীস ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের পার্থক্য
এই দীর্ঘ আলোচনায় প্রমাণ হয় যে, রাসূল সা.-এর এ ধরনের বর্ণনা প্রচুর। আবার অনেক বর্ণনা শুধু হাদীস তবে তার বিধান পালন রহিত, বৈশিষ্ট্য বিশেষ কারণে হওয়ায় তা হাদীস হলেও সুন্নাত নয়। আর বহু বিষয় সুন্নাত সকল উম্মতের জন্য অনুস্মরণযোগ্য যেমন- চার খলীফার সুন্নাত এগুলো শুধু সুন্নাত তবে হাদীস নয়।
উপরোক্ত বিশ্লেষণ বুঝে নিলে একথা দিবালোকের মতো পরিষ্কার যে, ‘আহলে হাদীস’ ও ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের’ মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যবধাান। যেমন:
(১) আহলে হাদীস যেকোনো একটি হাদীস পেলেই আমল শুরু করে তা রহিত হোক বা নবিজীর বৈশিষ্ট্য হোক বা কোনো বিশেষ কারণে তা রহিত হোক অথচ এগুলো পালনিয় বিষয় নয়। আর আহলে সুন্নাত বিশ্বাস করে সব হাদীস কে কিন্তু মান্য করে যা মানার আদিষ্ট বা অনুস্মরণ অনুকরণ যোগ্য।
(২) আহলে হাদীস সাহাবা মানে না কারণ সাহাবাদের ‘কথা, কাজ’ হাদীস নয় বরং সুন্নাত অথচ তাঁরা হলেন আহলে হাদীস। চার খলীফার সব সিদ্ধান্তকে তারা একই কারণে অমান্য করে।
বর্তমান আহলে হাদীসগণের তারাবীর নামায ৮ রাকাত বলা তিন তালাক দিলে এক তালাক হবে বলা। জম’আর প্রথম আযানকে বিদ‘আত বলা। আমীন স্বশব্দে-চিৎকার করে বলা ইত্যাদীর মূল রহস্য এটাই যে তারা সুন্নতই মানে না। পক্ষান্তরে রাসূল সা. এর সাথে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হাদীসগুলো আমল করার দুঃসাহস করেন। অন্যদিকে তারা জঈফ হাদীস ও মাউজু হাদীসকে একাকার করে সব অগ্রহণযোগ্য বলে উক্তি করে।
এসব কারণে কোনো খাঁটি মুসলমানের ক্ষেত্রে ‘আহলে হাদীস’ হওয়াও সম্ভব নয়।
কিন্তু “আহলে সুন্নাত (তথা নবীর অনুস্মরণযোগ্য হাদীস) ওয়াল জামাত”, খলীফা সহ সকল সহাবাদের আদর্শের ভিত্তিতে যারা পরিচালিত তাঁরা খাটি মুসলমান নাজাতপ্রাপ্ত উম্মত।
এ সব কারণে রাসূলের হাদীসে সুন্নাহ আঁকড়ে ধরে আহলে সুন্নাত হওয়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে তবে হাদীসের উপর আমল বা অনুসরণ করার কথা কোথাও বলা হয়নি।
যেমন:
১) হাদীসে এসেছে- من تمسك بسنتي عند فساد امتي..الخ “যে আমার সুন্নাতকে মজবুত করে ধরবে যখন উম্মতের মধ্যে ফাসাদ সৃষ্টি হবে...”।
২) تركت فيكم امرين لن تضلوا ما تمسكتم بهما كتاب الله وسنة رسوله.
৩) عليكم بسنتي وسنة الخلفاء الراشدين المهديين تمسكوا بها وعضوا عليها بالنواجذ.
আহলে হাদীস ভাইগণ একটি হাদীস পেশ করতে পাবেন না যে রাসূল সা. উম্মতকে হাদীস মজবুত করে আঁকড়ে ধরতে বলেছেন।
বিষয়: বিবিধ
৬১৭৩ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুন্নত বা হাদিস মনসুখ হওয়ার বিষটি অন্য হাদিস দিয়েই প্রমান করতে হবে। আবার আহলে সুন্নত হযরত উমর রাঃ নারিদের মসজিদে যেতে নিষেধ করেছিলেন একবার তাকেই ইজমা বলে দাবি করছে। অথচ শুধু খুতবাতেই এই কথা তিনি একবার বলেছিলেন এবং এটি প্রয়োগ করার কোন ব্যবস্থা নেননি। শুধু একটি বক্তব্য কে ইজমা দাবি করে এখন বাংলাদেশে নারিদের ঈদের নামাজ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিষটি নিয়ে কোন পক্ষেই বাড়াবাড়ি কাম্য নয়।
পুরো আলোচনায় আপাতত যা বুঝেছিঃ “যে আমার (সা) সুন্নাতকে মজবুত করে ধরবে যখন উম্মতের মধ্যে ফাসাদ সৃষ্টি হবে।"
ইসলাম যিনি দিয়েছেন, মহান আল্লাহ পাক শুধু একটা কিতাবের গ্যারান্টি দিয়েছেন। তা হচ্ছে কোরান।
সমাজে হাজারো হারাম অনাচার রেখে হাদিস নফল নিয়ে ঝগড়া করেন ব্যাপারটা কতটুকু ইসলামিক ভেবে দেখবেন।
কোরানে হাদিস শব্দ উল্লেখ করে অনেক আয়াত আছে সেগুলো একটু পড়ে দেখবেন।
ধন্যবাদ।
তারপরও সুন্দর আলোচনা প্রশংসার দাবী রাখে। ধন্যবাদ।
ব্যাক্তিগত আমি আপনার লিখাটি পড়ে উপকৃত হয়েছি, আমার আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর জন্য লিখাটি কাজে লেগেছে এবং লাগবে।
আল্লাহ আপনাকে এর জন্য উত্তম প্রতিদান দিন।
যেমন ধরুন: ইমাম আবু হানিফা (রহ) বলেছেন,
إذا صح الحديث فهو مذهبي
ইযা সহহাল #হাদিস, তিনি বলেন নি ইযা সাহহাল #সুন্নাহ। স্পষ্ট বোঝা যায় পূর্ববর্তী ইমাম গণ হাদীস ও সুন্নাহ বলতে এক বিষয় বুঝতেন।
বর্তমান সময়ে কিছু কুটচাল মাওলানা এগুলোকে আলাদা করে মানুষকে ধোকা দিতে চাচ্ছে।
আরো বিস্তারিত যেমন:
সুনানু তিরমিযী, সুনানু নাসাঈ, সুনানু আবুদাউদ, সুনানু বায়হাকী, ইত্যাদি হাদীস গ্রন্থের নাম #সুনান যা সুন্নাহ হতেই এসেছে।
হাদীস গ্রন্থের নাম #সুনান অথচ ভিতরে #হাদীস।
সুনান গ্রন্থে কি সুধু সু্ন্নাহই আছে অন্য কিছু কি নেই? অথচ সব কিছুই আছে গ্রন্থে। যেমন, ফারায়েজ, হালাল, হারাম, হুদুদ ইত্যাদি।
তাই স্পষ্ট বোঝা যায় পূর্ববতী সালাফগণ হাদীস ও সুন্নাহ বলতে একই বিষয় বুঝতেন। আর বর্তমানে ফেতনাবাজরা এটিকে আলাদা করে মানুষকে ধোকা দিতে চাচ্ছে।
অনেক মিথ্যা কথার মাঝে একটি মিথ্যা কথা আপনার পোস্টের তা হলো আসহাবুল হাদীসরা ইজমা, কিয়াস মানেন না।
এটি সম্পূর্ন একটি মিথ্যা কথা।
আসহাবুল হাদীসগণ ইজমা ও কিয়াস মানেন তবে শর্ত হচ্ছে ইজমা বা কিয়াস হতে হবে কোরআন ও সুন্নার পক্ষ্যে, বিপক্ষে নয়।
জাজাকাল্লাহু খায়র।
বস্তুতঃ হাদীস ও সুন্নাহ এক জিনিস নয়, বরং এ দুইয়ের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে । উম্মতের জন্য দ্বীনের উপর চলার অনুসরনীয় পথ কে সুন্নাহ বলে । আর ” প্রত্যেক সুন্নাহই হাদীস কিন্তু সকল হাদীসই সুন্নাহ নয়।” অর্থাৎ দ্বীনের উপর চলার জন্য উম্মত সকল হাদীসকেই অনুসরন করতে পারবে না যদিও সেই হাদীসটি “সহীহ্” হয়। কেননা অনেক সহীহ্ হাদীস আছে যা অন্য সহীহ হাদীস দ্বারা রহিত হয়ে গিয়েছে বা তা পূর্বের বিধান ছিল কিন্তু পরবর্তীতে রসূলুল্লাহ (সঃ) এর হুকুম দ্বারা রহিত হয়ে গিয়েছে ।
নিম্নে কিছু হাদীস উদাহারন স্বরুপ তুলে ধরলামঃ
কিছু সহীহ্ হাদীস যা সুন্নাহ নয় , অর্থাৎ এই হাদীসগুলো উম্মতের জন্য অনুসরনীয় নয়
১. সহীহ্ বুখারীর কিতাবুল জানায়েযের ১৩০৭ থেকে ১৩১৩ নং হাদীস সমূহ । এসব হাদীসে জানাযা বহন করে নিয়ে যেতে দেখলে সকলকে দাঁড়িয়ে যেতে বলা হয়েছে । অথচ এই বিধান এই বিধান অন্যান্য সহীহ্ হাদীস দ্বারা রহিত হয়ে গিয়েছে । ( উমদাতুল কারী ৬/১৪৬)
২. ইসলামের প্রথম যুগে নামাযরত অবস্থায় কথা বলা, সালাম দেওয়া , সালামের উত্তর দেওয়া সবই বৈধ ছিল । কিন্তু পরবর্তীতে এই বিধান রহিত হয়ে যায়। ( সহীহ্ বুখারী হা. নং- ১১৯৯, ১২০০)
৩. ইসলামের প্রথম যুগে বিধান ছিল যে, আগুনে রান্নাকৃত খাদ্য গ্রহন করলে উযু ভেঙ্গে যাবে । কিন্তু পরবর্তীতে এই বিধান রহিত হয়ে যায় । ( সহীহ্ বুখারী, হা.নং- ২০৮)
৪. নবীজী ( সঃ) হিজরতের পর মদীনায় ১৬/১৭ মাস বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে নামায আদায় করেছেন । কিন্তু পরবর্তীতে এই বিধান রহিত হয়ে যায়। ( সহীহ্ বুখারী হা. নং- ৭২৫২)
এমন অনেক হাদিস আছে যার বিধান নবীজী (সঃ) এর সঙ্গে নির্দিষ্ট । উম্মতের জন্য তার উপর আমল করা বৈধ নয়। যেমনঃ
৫. বহু হাদিসে রসূলুল্লাহ (সঃ) এর ১১টি বিবাহের কথা এবং মহর দেওয়া ছাড়া বিবাহ করার কথা এসেছে। তো এগুলো হাদিস বটে কিন্তু উম্মতের জন্য অনুসরনীয় নয় ।( সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ ফী সীরাতি খাইরিল ইবাদ ১১/ ১৪৩-২১৭)
হাদীসে এমন অনেক আমলের কথা বর্ণিত আছে যা রসূলুল্লাহ (সঃ) কখনো কোন বিশেষ প্রয়োজনে করেছেন । যেমনঃ
৬. কোমরে ব্যথা থাকার কারনে কিংবা এস্তেন্জা করার স্থানে বসার দ্বারা শরীরে বা কাপড়ে নাপাকি লাগার অশংঙ্কায় তিনি সারা জীবনে মাত্র ২বার দাঁড়িয়ে পেশাব করেছেন। কিন্তু হাদিসের বর্ণনায় এসব কারনের কথা উল্লেখ নেই । শুধুমাত্র দাঁড়িয়ে পেশাব করার কথা আলোচিত হয়েছে। তো এই হাদিসের উপর আমল করে কি দাঁড়িয়ে পেশাব করাকে সুন্নাহ বলা যাবে ??? অনুরুপভাবে রসূলুল্লাহ (সঃ) ইহরাম অবস্থায় এবং রোযা অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন। ( সহীহ্ বুখারী, হা.নং- ১৯৩৮)
তাই বলে কি ইহরাম ও রোযা অবস্থায় শিঙ্গা লাগানোকে সুন্নাহ বলা যাবে ???
কাজটি বৈধ একথা বুঝানোর জন্যও রসূলুল্লাহ (সঃ) অনেক কাজ করেছেন। যেমনঃ
৭. তিনি একবার তার নাতনী উমামা বিনতে যয়নবকে কোলে নিয়ে নামায পড়িয়েছেন।( সহীহ্ বুখারী,হা. নং- ৫১৬)
৮. আবার তিনি রোযা অবস্থায় তার এক স্ত্রীকে চুম্বন করেছেন । ( সহীহ্ বুখারী ,হা.নং- ১৯২৮) ।
এই উভয় ঘটনাই হাদিসে এসেছে । এর দ্বারা রসূলুল্লাহ (সঃ) বুঝাতে চেয়েছেন যে, প্রয়োজনের ক্ষেত্রে শিশ্ত কোলে নিয়ে নামায পড়া বা পড়ানো যেতে পারে এবং রোযা অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন করা বৈধ, এতে রোযার কোন ক্ষতি হবে না । তাই বলে কি সব সময় শিশু কোলে নিয়ে নামায পড়ানোকে কিংবা রোযা অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন করা সুন্নাহ বলা যাবে ???
উপর্যুক্ত আলোচনার দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, ” আহলে হাদীস ” নামটিই সঠিক নয় । কারন রসূলুল্লাহ (সঃ) কোন বর্ননায়ই উম্মতকে হাদীস মানতে বলেন নাই , বলেছেন ” সুন্নাহ ” মানতে । তারপরও যারা নিজেদেরকে ” আহলে হাদীস ” বলে দ্বাবী করে তাদের উচিৎ ১১টি বিবাহ করা, মহর ছাড়া বিবাহ করা, ইহরাম ও রোযা অবস্থায় শিঙ্গা লাগানো, রোযা অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন করা, দাঁড়িয়ে পেশাব করা ইত্যাদিকে সুন্নাত মনে করে আমল করা ।
অনুরুপভাবে জীবনে মাত্র ৩দিন মসজিদে এসে তারাবীহ এর নামায পড়া , নামাযরত অবস্থায় কথা বলা , সালাম দেওয়া , সালামের উত্তর দেওয়া । কারন এগুলোও তো হাদিসে এসেছে । কিন্তু তারা এসব করবে না । তাহলে হাদীস মানার দাবীদার হয়ে এসব হাদিসের উপর আমল না করে কিভাবে তারা আহলে হাদীস হল ??? আসল কথা হলো, তারা নিজেদেরকে “আহলে হাদীস ” বললেও বাস্তবে মুখবাজি( বাগাড়ম্বরি ) ছাড়া কিছুই না ।
অপর দিকে রসূলুল্লাহ (সঃ) যেহেতু উম্মতকে সুন্নাহ আঁকড়ে ধরতে বলেছেন তাই সকল মাযহাব অনুসারীগন হাদিসের শুধুমাত্র সুন্নাহ অংশের অনুসরন করি এবং নিজেদেরকে ” আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আহ ” বলে পরিচয় দিই । অর্থাৎ রসূলুল্লাহ (সঃ) এর সুন্নাত মানি এবং সাহাবায়ে কেরামের জামা’আতকে অনুসরন করি ।
http://www.almeske.net/vb/t15155.html
মন্তব্য করতে লগইন করুন