জামায়াত একটি ব্যর্থ সংগঠন

লিখেছেন লিখেছেন সঠিক ইসলাম ০৪ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৩:৫৪:২০ রাত

১. কারণ বাংলাদেশের ফ্রন্ট লাইনের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো দল হওয়া সত্ত্বেও তারা এখনো গণমানুষের দলে পরিণত হতে পারে নি।

২. জামায়াত তার ৭৩ বছরের রাজনীতিতে এককভাবে কখনোই ক্ষমতার স্বাধ পায় নি।

৩. ৭৩ বছরে জামায়াত দু’বার নিষিদ্ধ হয়েছিল। এতে জামায়াতের অপরিপক্কতা প্রকাশিত হয়।

৪. ৭১ সালে জামায়াত ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

৫. এত বছর রাজনীতি করার পর তারা এখন তাদের সব মূল নেতাদের হারাতে বসেছে জঘন্য সব অপরাধের দায়ে।

এরকম আরো কারণ দেখিয়ে আপনি বলতেই পারেন জামায়াত ব্যার্থ।

কিন্তু আসলে কি তাই?

বস্তুত সফলতা বা ব্যর্থতা নির্ভর করে উদ্দেশ্য-লক্ষ্যের উপর।

একটি দল হিসেবে জামায়াতের চূড়ান্ত লক্ষ্য কি?

সেটাই বলে দিবে জামায়াত কতটুকু ব্যর্থ।

আমাদের মূল ও চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি অর্জন।

আর সেই সন্তুষ্টি অর্জন হবে কুরআন হাদীস অনুসারে মানুষের সার্বিক জীবনের পূনর্বিন্যাস সাধনের মাধ্যমে।

জামায়াত যুগে যুগে উপমহাদেশে এমন সব জানবাজ মানুষ তৈরী করে যাচ্ছে যারা ইকামাতে দ্বীনের কাজে নিজের জীবন উৎসর্গকে সাফল্যের সিংহদ্বার মনে করে।

জামায়াতের আছে অনন্য সাতটি বৈশিষ্ট্য যা জামায়াত কে তার লক্ষ্য অর্জনকে সহজ করে দিচ্ছে।

১. জামায়াতের বিল্পবী দাওয়াত। জামায়াত দুনিয়াবী কোন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে মানুষকে আহ্বান করে না। দুনিয়ার কোন সফলতার লোভ দেখায় না।

একান্ত পরকালীন সাফল্যের কথা সামনে নিয়ে আসে, যেভাবে আল্লাহর রাসূল দাওয়াত দিয়েছেন।

২. ইসলামী সমাজ গঠনের উপযোগী ব্যক্তিগঠন পদ্ধতি। জামায়াত মনে করে ব্যক্তিগঠনের জন্য তিন ধরণের যোগ্যতা লাগবে। এক, ঈমানী যোগ্যতা।

দুই, ইলমী যোগ্যতা। তিন, আমলী যোগ্যতা। যোগ্যতা হাসিলে কঠোর প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেছে সংগঠনটি।

৩. জামায়াত ইসলামীর তৃতীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি একটি তাকওয়া ভিত্তিক সংগঠন।

জামায়াত কোন লোককে দায়িত্ব প্রদানকালে তাকওয়ার বিষয়টি সামনে রাখে।

৪. জামায়াতের অনন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে “নেতৃত্ব সৃষ্টির পদ্ধতি”। অসাধারণ এই পদ্ধতিতে নেতৃত্ব বা পদলোভীদের কোন স্থান নেই।

৫. ক্ষমতা দখলের রাজনীতি করে না জামায়াত। জামায়াত ইসলামী সূরা নূরের ৫৫ নং আয়াতকে সামনে রেখে বিশ্বাস করে, ইসলামী সরকার চালানোর যোগ্য কর্মীবাহিনী তৈরী হলে আল্লাহ পাক সরকারী দায়িত্ব দেয়ার পথ করে দিবেন।

৬. জামায়াতের অর্থের উৎস জামায়াতের দায়িত্বশীল, কর্মী এবং শুভাকাংখীরা। জামায়াত বাইরের অন্য কারো অর্থে চলে না। কারো ক্রীয়ানক হিসেবে কাজ করে না।

৭. বিরোধীদের প্রতি জামায়াতের আচরণ।

জামায়াত তার বিরোধীদের মধ্যে যারা অশালীন ও অভদ্র ভাষা প্রয়োগ করে তাদের করুণার পাত্র মনে করে। জামায়াতের দাওয়াত আদর্শ ও কর্মসুচীর বিরুদ্ধে বেচারাদের কিছু বলার সাধ্য নেই বলে বেসামাল হয়ে গালাগালি করে মনের ঝাল মেটানোর চেষ্টা করে। জামায়াত তাদের হিদায়াতের জন্য দোয়া করে।

আর যারা মিথ্যা সমালোচনা করে অপবাদ দেয়, জামায়াত প্রয়োজন মনে করলে সেই সমালোচনা যুক্তি দিয়ে খন্ডন করে।

সুতরাং যারা শুরুর কয়েকটি পয়েন্ট দেখিয়ে আমাদের ব্যর্থ বলতে চাইবেন তাদের প্রতি আমাদের বিনীত বার্তা, আপনারা যেগুলোকে সফলতা মনে করেন আমরা সেগুলোকে চূড়ান্ত সফলতা মনে করি না।

সেগুলো আমাদের মূল লক্ষ্যও নয়।

আর তাছাড়া আমরা এও বিশ্বাস করি, মুমিনের দুনিয়ার জীবনে ব্যর্থতা হল আল্লাহর আনুগত্য করতে না পারা।

আর কোন কিছুকেই ব্যর্থতা মনে করি না।

দুনিয়ার জীবনের কষ্ট, ক্ষমতা পাওয়া বা না পাওয়া সবগুলোকেই আমরা পরিক্ষা বলেই গন্য করি।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সিরাতুল মুস্তাকীমের পথে রাখুন। আমিন।

বিষয়: বিবিধ

১৫৫০ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

299075
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০৪:৩৫
রক্তলাল লিখেছেন : জামায়াত হোক বা যে কোনো দলই হোক না কেন, তাদের অধিকার কেউ খর্ব করার সাহস করা উচিত নয়।

আল্লাহ বলুন আর প্রকৃতি বলুন, আপন নিয়মেই সতভাবে সংগ্রামকারীদের বিরুদ্ধে অসভ্য সন্ত্রাসী হাসিনাদের মত শয়তানদের আপমানজনক ধ্বংস অনিবার্য।

299106
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৮:৪০
শেখের পোলা লিখেছেন : জামাত সংগ্রাম করে যাচ্ছে, তার ফসল একদিন উঠবেই৷ জামাতকে এখনই ক্ষমতা পেতে হবে, এমন উদ্দেশ্য আমার মনে হয় তাদের নেই৷ জামাতের সফলতা কামনা করি৷
299109
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৮:৫৫
হতভাগা লিখেছেন : জামায়াত জোটে থাকলে পায় ১৭/১৮ আসন আর বাইরে থাকলে পায় ২/৩ টি আসন ।

বাংলাদেশের ম্যাক্সিমাম মানুষ মুসলমান । জামায়াতের ভাল সুযোগ ছিল বাংলাদেশের মানুষের প্রিয় দল হবার । কিন্তু ৭১ এ তাদের ভূমিকা তাদেরকে সবসময়ের জন্য জনবিদ্বেষী দলে পরিনত করেছে ।

এজন্যই একসময় মনে হয় জামায়াত বোধ হয় এগিয়ে আসছে । কিন্তু পরক্ষনেই দেখা যায় যে অনেক পিছিয়ে গেছে ।

এটা হচ্ছে কারণ তারা ৭১ এর কৃত অপরাধের জন্য কখনও ক্ষমা চায় নি , বরং দম্ভ করেছে ।
299138
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ১০:১৭
কাহাফ লিখেছেন :

বৈষয়িক দিক বিবেচনায় 'জামায়াত' সাফল্য লাভ করতে না পারলেও পরকালীন বিচারে মহা সাফল্য অবশ্যই অর্জন করবে ইনশা আল্লাহ!!
299149
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ১০:৫১
আমি মুসাফির লিখেছেন : জামায়াত ইসলামী এমন একটি সংগঠন যা নিচের পয়েন্ট গুলো পড়লে সহজেই বুঝা যায়।

০১.ইসলামী জ্ঞান চর্চার এক নিখুঁত পরিকল্পনা
০২.উন্নত চরিত্র গঠনের এক মজবুত সংগঠন
০৩.জনসেবা ও সমাজ সংস্কারের এক বাস্তব কর্মসূচি
০৪.জনকল্যাণমুখী আদর্শ রাষ্ট্র ও সরকার গঠনের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন
299151
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ১০:৫২
আমি মুসাফির লিখেছেন : জামায়াতে ইসলামী কোন ধরনের দল

জামায়াতে ইসলামী প্রচলিত অর্থে শুধুমাত্র ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক বা সাংস্কৃতিক দল নয়। ইসলামে ধর্মীয় জীবনের গুরম্নত্ব আছে বলেই জামায়াত ধর্মীয় দলের দায়িত্ব পালন করে। রাজনৈতিক শক্তি ছাড়া ইসলামী আইন চালু হতে পারে না বলেই জামায়াত রাজনৈতিক ময়দানে কাজ করে। সমাজ সেবা ও সামাজিক সংশোধনের জোর তাকিদ ইসলাম দিয়েছে বলেই জামায়াত সমাজ সেবা ও সমাজ সংস্কারে মনোযোগ দেয়। এ অর্থেই জামায়াতে ইসলামী একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী আন্দোলন।

জামায়াতের বুনিয়াদী আকিদা-বিশ্বাস

০১.আল্লাহ্‌ তা'আলাই মানব জাতির একমাত্র রব, বিধানদাতা ও হুকুমকর্তা।

০২. কুরআন ও সুন্নাহ্‌ই মানুষের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান।

০৩.মহানবীই (সা.) মানব জীবনের সর্বক্ষেত্রে অনুসরণযোগ্য আদর্শ নেতা।

০৪. ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনই মুমিন জীবনের লক্ষ্য।

০৫. আল্লাহ্‌র সন্ত্মুষ্টি ও আখিরাতের মুক্তিই মুমিন জীবনের কাম্য।
299158
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ১১:১৮
মাজলুম যাযাবর লিখেছেন : ভালো লাগল, ধন্যবাদ
326867
২০ জুন ২০১৫ দুপুর ০২:১৪
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : ভালো লাগলো, অনেক ধন্যবাদ। চালিয়ে যান। সাথে আছি..

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File