ভারতের কেরালায় জুমার নামায আদায়ে নিষেধাজ্ঞাঃ !!!
লিখেছেন লিখেছেন সঠিক ইসলাম ০৪ জানুয়ারি, ২০১৪, ০১:০০:১৩ রাত
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ মুসলিম ছাত্রদের শুক্রবারের জুমার নামাযের জন্য সময় দেয়ার অনুমতি দানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। অভিভাবকরা বৈষম্যমূলক এই নীতির বিরোধিতা করছেন। এ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কেরালায় সিবিএসই স্কুল ম্যানেজমেন্ট এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট টিপিএম ইবরাহিম খান গত বুধবার টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ১০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর মুসলিম বালকদের শুক্রবার মসজিদে যাওয়া বাধ্যতামূলক। প্রতিটি শিশুর বাবা-মা চায় তাদের সন্তান ধর্মীয় মূল্যবোধ বজায় রেখে বেড়ে উঠুক এবং এ ব্যাপারে কোন আপস নেই। জুমার নামাযে শরীক হওয়ার অনুমতি নিয়ে কোন শিক্ষার্থী যদি এর অপব্যবহার করে তাহলে তার ব্যাপারে কড়াকড়ি করা যায়। কিন্তু এজন্য তাদের নামাযে যাওয়া বন্ধ করে দেয়া যায় না।
শিক্ষার্থীদের দায়িত্বহীন আচরণের অভিযোগ তুলে কিছু স্কুল মুসলিম বালকদের জুমার নামাযে শরীক হওয়ার অনুমতি দান বন্ধ করে দিয়েছে। কেরালা রাজ্যের কোচিং স্কুলসমূহের প্রশাসকরা দাবি করেছেন, জুমার নামাযে শরীক হওয়ার জন্য ছুটি নিয়ে কিছু কিছু শিক্ষার্থী হোটেলে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে। ফলে তাদের আবার ক্লাসে ফিরে আসায় বিলম্ব ঘটছে। কিছু স্কুল নামাযের সময় ছুটি দেয়ার বিষয়টি বাতিল করেছে। আবার অন্য স্কুলসমূহ তাদের জুমার নামাযের সময় দেয়ার ক্ষেত্রে শর্ত আরোপ করেছে। শর্তটি হলো বাবা-মা তাদের সন্তানদের মসজিদে নিয়ে যাবেন এবং ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন।
টক এইচ পাবলিক স্কুলের প্রিন্সিপাল এনএম জর্জ বলেন, আমরা দৃষ্টিভঙ্গিতে ধর্মনিরপেক্ষ। যখন অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের জুমার নামাযে শরীক হওয়ার জন্য অনুমতি চান তখন তাদের অনুমতি দেই। তবে আমরা দেখতে পাই তাদের মধ্যে কেউ কেউ মসজিদে না গিয়ে দেরি করে স্কুলে ফিরে আসে। এজন্যই আমরা এ ব্যাপারে নিয়ম করেছি অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের মসজিদে নিয়ে যাবেন এবং ফিরিয়ে দিয়ে যাবেন। সক্ষম প্রত্যেক মুসলিম পুরুষের জন্য জুমার নামাযে শরীক হওয়া বাধ্যতামূলক।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, কোন ব্যক্তি যদি সঙ্গতকারণ ছাড়া জুমার নামাযে শরীক না হয় তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার অন্তরে সীল মেরে দেন। অমুসলিম সমাজে বসবাসকারী মুসলমানদের উচিত জুমার নামাযে শরীক হওয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা। এ ব্যাপারে একটি সমঝোতা হয়েছে, এই মর্মে যে, মুসলিম নিয়ন্ত্রিত স্কুলগুলো জুমার নামাযের সময় শিক্ষার্থীদের দেখাশোনার জন্য একজন টিম লিডার নিয়োগ করবে। অনেক অভিভাবকই তাদের সন্তানদের মসজিদে আনা নেয়ার সময় পান না। তাদের জন্য এই সমাধান বের করা হয়েছে। প্রিন্সিপাল এনএম জর্জ বলেন, প্রথমদিকে কিছু অভিভাবক তাদের সন্তানদের মসজিদে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসতেন। কিন্তু এখন আর কেউ আসেন না। টিম লিডার এখন তাদের সঙ্গে মসজিদে যায় এবং ফিরে আসে।
সব স্কুলে টিম লিডারের ব্যবস্থা করা হয়নি। শত শত অভিভাবক জুমার নামাযে তাদের সন্তানদের শরীক হওয়ার অনুমতি দানের জন্য স্কুলগুলোর প্রতি আবেদন জানাচ্ছেন। চলতি শিক্ষা বর্ষে প্রায় আড়াইশ’ অভিভাবক কেরালা সিবিএসই স্কুল ম্যানেজমেন্ট এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট টিপিএম ইবরাহিম খানের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন যেন তাদের সন্তানদের শুক্রবার জুমার নামাযে শরীক হতে অনুমতি দেয়া হয়। তবে স্কুলের প্রিন্সিপালরা দাবি করেছেন, অনেক ক্ষেত্রেই মুসলিম অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে গুরুত্ব দেন না। জনউদয়ন পাবলিক স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল অরন্ধতী পিআর বলেন, আমাদের স্কুলে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীই মুসলিম। আমরা পথমদিকে তাদের ব্যাপারে উদার ছিলাম এবং আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জুমার নামাযে শরীক হওয়ার জন্য মসজিদে যাওয়ার অনুমতি দিতাম। কিন্তু পরে দেখা গেল, এই অনুমতি নিয়ে অনেকেই এই সুযোগের অপব্যবহার করছে। এরপর আমরা তাদের অভিভাবকদের এই বিষয়টি নিশ্চিত করার দায়িত্ব দিয়েছি যেন তারা তাদের সন্তানদের মসজিদে নিয়ে যান এবং সঠিক সময়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।
ভারতে প্রায় ১৬ কোটি মুসলমান বসবাস করছে। ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানের পরই ভারতে সবচেয়ে বেশি মুসলমান বাস করছে।
সূত্রঃ ডেস্ক হ্যালোটুডে ডটকম
http://www.hello-today.com/58487#.Usbs5NIW2Ap
বিষয়: বিবিধ
১৬৮৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন